২০১৭ সালে রাজস্থানে গণপ্রহারে নিহত পেহলু খানের বিরুদ্ধে মরণোত্তর চার্জশিট পেশ করা নিয়ে বিতর্কের প্রতিক্রিয়া স্বরূপ রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট শনিবার জানিয়েছেন, এই মামলার তদন্ত করেছিল পূর্বতন বিজেপি সরকার, এবং কোনোরকম অসঙ্গতি ধরা পড়লে ফের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হবে।
"এর আগে এই মামলার তদন্ত হয় বিজেপি সরকারের অধীনে, এবং চার্জশিট পেশ করা হয়। তদন্তে কোনোরকম অসঙ্গতি দেখা গেলে আরও একবার তদন্ত হবে এই মামলার," সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে জানান গেহলট।
সাম্প্রতিকতম চার্জশিটে পেহলু খানের বিরুদ্ধে মরণোত্তর অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, এবং তাঁর ও তাঁর পুত্রদের বিরুদ্ধে রাজস্থান বোভাইন (অর্থাৎ গবাদি পশু সংক্রান্ত) আনিম্যালস অ্যাক্ট (১৯৯৫)-এর ৫, ৮, এবং ৯ নম্বর ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। বর্তমান চার্জশিটটি বেহরোর থানায় নথিভুক্ত ২৫৩/১৭ নম্বর এফআইআর-এর ভিত্তিতে দায়ের করা হয়েছে, যাতে উল্লেখ করা হয়েছে, "ঘটনার পূর্ণ তদন্তের পর রাজস্থান বোভাইন আনিম্যালস অ্যাক্ট-এর ধারা ৫, ৮, ৯-এর আওতায় অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে অভিযুক্ত ইরশাদ, আরিফ এবং পেহলু খানের বিরুদ্ধে, এবং ধারা ৬-এর আওতায় অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে অভিযুক্ত খান মহম্মদের বিরুদ্ধে।"
আরও পড়ুন: চোর দায়ে গণপিটুনি, জয় শ্রীরাম বলতে বাধ্য যুবক মৃত ঝাড়খণ্ডে
গত বছর রাজ্যের তৎকালীন বিজেপি সরকার একই ধরনের চার্জশিট পেশ করে পেহলু খানের দুই সহযোগী আজমত এবং রফিকের বিরুদ্ধে। ঘটনার সময় ট্রাক ড্রাইভার অর্জুন সমেত ওই দুজনও জনরোষের মুখে পড়েছিলেন। বোভাইন আনিম্যালস অ্যাক্ট-এর ৬ নম্বর ধারায় অভিযুক্ত হয়েছেন ট্রাকের মালিক জগদীশ প্রসাদও।
অল ইন্ডিয়া মজলিস-এ-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন দলের নেতা তথা হায়দ্রাবাদের সাংসদ আসাদুদ্দিন ওয়েইসি বলেছেন, "এ হলো কংগ্রেসের দুমুখো নীতি। পেহলু খান যখন আক্রান্ত হন, কংগ্রেস ঘটনার নিন্দা করেছিল। অশোক গেহলট সরকারের একটি নিন্দনীয় পদক্ষেপ।"
সংবাদ সংস্থা এএনআই ওয়েইসিকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, "আমি রাজস্থানের মুসলমানদের বলব, যে কংগ্রেস আপনাদের চিরকাল বিশ্বাসভঙ্গ করেছে, সেই কংগ্রেসকে সমর্থন করা বন্ধ করুন। যখনই ওরা ক্ষমতায় আসে, তখনই অবিকল বিজেপির মতো আচরণ করে। বিরোধীপক্ষে থাকাকালীন কুম্ভীরাশ্রু বিসর্জন করে, অথচ ক্ষমতায় এলে বিজেপির কাজ শেষ করতে লেগে পড়ে।"
ওদিকে রাজস্থানের বিজেপি বিধায়ক জ্ঞানদেব আহুজা দাবি করেছেন যে পেহলু ও তাঁর ভাই এবং ছেলেরা স্বভাব অপরাধী, বরং গো রক্ষকদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগেরই কোনও সত্যতা নেই। এএনআই জানিয়েছে যে আহুজার বক্তব্য হলো, "পেহলু খান, তার ভাইরা, তার ছেলেরা, সকলেই স্বভাব অপরাধী, যারা অনবরত গরু পাচার করত। গো রক্ষক এবং হিন্দু পরিষদের বিরুদ্ধে আনা সমস্ত অভিযোগ মিথ্যে।" এই সুযোগে রাজ্যের বর্তমান কংগ্রেস সরকারকেও একহাত নিয়েছেন আহুজা এই বলে, যে এখন কৃতিত্ব দাবি করলেও সেসময় আর্থিক সাহায্যের প্রস্তাব দিয়েছিল কংগ্রেস।