অসমে আসন পুনর্বিন্যাসের কথা ঘোষণা করল নির্বাচন কমিশন। আচমকাই চারটি জেলাকে মিশিয়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। তাতেই শুরু হয়েছে জলঘোলা। যেন পার্বত্য রাজ্যের সাম্প্রদায়িক ভৌগোলিক বিন্যাসের দীর্ঘকালীন সমস্যায় কেউ ঢিল ছুড়ে মেরেছে। বিরোধী দল কংগ্রেস, অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (এআইইউডিএফ) জেলার সীমানা পরিবর্তনের বিরোধিতা করেছে। এটা আসলে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং সাম্প্রদায়িক চেষ্টা বলে বিরোধীদের অভিযোগ। তাদের বক্তব্য, অসমের বাঙালি মুসলিম সম্প্রদায়কে হিমন্ত বিশ্বশর্মার বিজেপি সরকার ক্ষমতাহীন করে দিতে চাইছে। তাই জেলা পুনর্বিন্যাসের সিদ্ধান্ত।
নির্বাচন কমিশন গত ২৭ ডিসেম্বর অসমের বিধানসভা এবং লোকসভা আসনগুলো পুনর্বিন্যাসের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কারণ, এই সব আসনগুলো ২০০১ সালের জনগণনা অনুযায়ী পুনর্বিন্যাস করা হয়েছিল। বর্তমানে অসমে ১৪টি লোকসভা এবং ১২৬টি বিধানসভা কেন্দ্র আছে। আইন অনুযায়ী বর্তমানে অসমের আসনসংখ্যা বদলাবে না। কিন্তু, সীমানা বদলাতেই পারে। নির্বাচন কমিশন ১ জানুয়ারি থেকে নতুন প্রশাসনিক কেন্দ্র তৈরির যাবতীয় চেষ্টা বন্ধ রাখতে নির্দেশ দিয়েছে।
তার আগে দিল্লিতে মন্ত্রিসভার বৈঠকে তিনি বেশ কয়েকটি জেলাকে মিশিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। যেমন তমুলপুর জেলাকে মেশানো হবে বাক্সার সঙ্গে। হোজাই জেলাকে মেশানো হবে নওগাঁর সঙ্গে। বিশ্বনাথ জেলাকে মেশানো হবে শোণিতপুরের সঙ্গে। বাজালি জেলাকে মেশানো হবে বরপেটার সঙ্গে। এছাড়াও কমপক্ষে ১৪টি অন্যান্য জেলার সীমানা বদলানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন- এবার জেলেই পেটপুজো, আমিষ-নিরামিষের দ্বন্দ্ব কাটিয়ে উদরপূর্তির লোভে ৮ থেকে ৮০
তবে, আসন পুনর্বিন্যাসের জন্য জেলার সংযুক্তিকরণের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হিমন্ত বিশ্বশর্মা। তিনি উলটে জানিয়েছেন, বিষয়টা পুরোপুরি প্রশাসনিক। এতে জেলাগুলোর সুবিধাই হবে। আর, আসন পুনর্বিন্যাস প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, এতে পুনর্বিন্যাসের সীমাবদ্ধতার ওপর কিছু প্রভাব পড়তে পারে।
এআইইউডিএফ বিধায়ক আমিনুল ইসলাম অবশ্য বিজেপির মুখ্যমন্ত্রীর এই সব শাক দিয়ে মাছ ঢাকা কথাবার্তা শুনতে আর বুঝতে নারাজ। তিনি সোজাসুজি জানিয়েছেন, এই সব জেলাকে মিশিয়ে দেওয়ার কারণটা খুব স্পষ্ট। সেটা হল, বাঙালি মুসলিমদের বুঝিয়ে দেওয়া যে, অসমে তাদের জায়গাটা ঠিক কোথায়। কারণে, অসমে বাঙালিদের হামেশাই বহিরাগত তকমা দেওয়া হয়। সেই হিসেব মেনেই বাঙালি মুসলিমদের ক্ষমতাহীন করার চক্রান্ত চলছে বলেই আমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন।
Read full story in English