আসামের জাতীয় নাগরিকপঞ্জীতে নাম নেই এমন নাগরিকদের ভোটাধিকারের কী হবে? সরকার জানাচ্ছে, এন আর সি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পরে, এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার থাকবে নির্বাচন কমিশনের ওপরেই।
মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ও পি রাওয়াত এ ব্যাপারে জানিয়েছেন, এন আর সি-র চূড়ান্ত তালিকায় নাম না থাকলেই যে আসামের ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ পড়ে যাবে, ব্যাপারটা আদৌ তেমন নয়।
আসামে এন আর সি-র দ্বিতীয় তালিকা প্রকাশিত হওয়ার পর দিন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে ও পি রাওয়াত জানিয়েছেন, এন আর সি-র চূড়ান্ত তালিকায় নাম না থাকলেও একজন নাগরিক রাজ্যের নির্বাচক মণ্ডলীর তালিকায় থাকতে পারেন। তবে তার শর্ত হল, নির্বাচনী আধিকারিকদের কাছে তাঁকে তিনিটি যথাযথ প্রমাণ দাখিল করতে হবে। প্রথমত, তিনি একজন ভারতীয় নাগরিক, দ্বিতীয়ত ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে তাঁর বয়স অন্তত ১৮ বছর, এবং যে বিধানসভা এলাকায় তিনি নিজের নাম নথিভুক্ত করতে চাইছেন, তিনি সেই এলাকার একজন সাধারণ নাগরিক।
ও পি রাওয়াত জানাচ্ছেন, আগামী বছর লোকসভা নির্বাচনের আগে আসামের ভোটার তালিকার খসড়া বানানোর ব্যাপারে তিনটি বিষয়ের উপর লক্ষ্য রাখবে নির্বাচন কমিশন।
আরও পড়ুন, এন আর সি তালিকায় নামহীনদের ওপর জোর জুলুম নয়: শীর্ষ আদালত
প্রথমত, যে সব নথিভুক্ত ভোটারদের নাম এন আর সি-র চূড়ান্ত তালিকায় উঠবে, তাঁদের ক্ষেত্রে কোনও অসুবিধেই হবে না। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে, যাঁদের নাম চূড়ান্ত এন আর সি তালিকায় নেই, কিন্তু আদালত বা ট্রাইব্যুনাল থেকে স্টে অর্ডার পেয়েছেন, তাঁরাও ভোটার তালিকায় থাকবেন।
যাঁদের নাম এন আর সি তালিকায় নেই, অথচ তাঁরা সে নিয়ে আদালতের শরণাপন্ন হন নি, তাঁদের ব্যাপারে ইলোক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার (ERO) সিদ্ধান্ত নেবেন। এ ব্যাপারে নির্ভর করা হবে ১৯৫০ সালের ভারতের জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের উপরে।
ও পি রাওয়াতের বক্তব্য, ‘‘এটা একটা আধা বিচার-বিভাগীয় সিদ্ধান্ত, যে সিদ্ধান্ত নিতে হবে নথি ও প্রমাণাদির উপর ভিত্তি করে। ইআরও-কে ঠিক করতে হবে, এন আর সি-তে নাম না থাকা কোনও ব্যক্তির নাম ভোটার তালিকায় থাকবে কি না।’’
এন আর সি-তে নাম না থাকলে কি সেই ব্যক্তির ভারতীয় নাগরিকত্ব সন্দেহের মুখে পড়ছে না? এ প্রশ্নের উত্তরে ও পি রাওয়াত বলছেন, ‘‘ধরা যাক আমি আসামে চাকরি করি, কিন্তু জন্মেছি মধ্যপ্রদেশে। এরকম ক্ষেত্রে যদি আমার নাম এন আর সি -তে না থাকে, তাহলে কি আমি ভারতীয় নাগরিক নই? এরকম বলা যায় না।’’