সরকারি সুবিধা পেতে গত মাসেই দুই সন্তান নীতি কার্যকর করার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। এবার সাফ জানালেন, রাজ্য সরকারি বেশ কয়েকটি প্রকল্পের সুবিধা পেতে আসামে চালু হবে দুই সন্তান নীতি। তবে, কেন্দ্র নিয়ন্ত্রিত কোনও প্রকল্পে এই নীতি লাগু হবে না। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের স্বার্থেই এই নিয়ম চালুর ভাবনা। কিন্তু, কেন্দ্রের প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, বিনামূল্য়ে স্কুল, কলেজে ভর্তির মতো সুবিধায় দুই সন্তান নীতি প্রযোজ্য করা যাবে না। আসাম সরকারের গৃহ প্রকল্পে এই ব্যবস্থা লাগু হবে। ধীরে ধীরে দুই সন্তান নীতি রাজ্য সরকারের সব প্রকল্পেই প্রযোজ্য করা হবে।
মুখ্যমন্ত্রীরা পাঁচ ভাই। বৃহৎ পরিবার নিয়ে বিরোধীদের কটাক্ষের শিকার হয়েছেন হিমন্ত। শনিবার অবশ্য এই ইস্যুতে বিরোধীদের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, 'আমাদের বাবা-মা-দের সময়ে কী হয়েছে তা টেনে লাভ নেই। ৭০-য়ের দশকে ফিরে গিয়ে সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। কিন্তু প্রতিপক্ষরা এই বিষয়টি টেনে এনে আমাদের সমাজকে ৭০-র দশকে পৌঁছে দিচে চাইছেন।'
চলতি মাসেই শুরুতে 'ভদ্রস্থ পরিবার পরিকল্পনা' প্রসঙ্গে অভিবাসনকারী মুসলিম মহিলাদের নিশানা করেছিলেন হিমন্ত বিশ্বশর্মা। মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন যে, 'দারিদ্র দূর ও জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতে মুসলিম মহিলাদের শিক্ষিত করে তুলতে হবে। এক্ষত্রে আমাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে আসান জন্য আমার আহ্বান থাকলো।' দরিদ্রের অভিশাপ দূরীকরণে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত প্রয়োজন বলে দাবি হিমন্তর।
আরও পড়ুন- জম্মু-কাশ্মীরে বিধানসভা ভোটের তোড়জোড়? ২৪ জুন সর্বদল বৈঠক
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েচেন য়ে, গত শুক্রবারই এআইইউডিএফ সাংসদ বদরুদ্দিন আজমল তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। মুসলিম মহিলাদের শিক্ষার গুরুত্ব নিয়ে আসাম সরকারের ভাবনা ও পদক্ষেপ সম্পর্কে সাংসদ আজমল সহমত হয়েচেন। আগে অবশ্য একই ইস্যুতে হিমন্ত বিশ্বশর্মার সমালোচনা করেছিলেন আসামের মুসলিমদের মধ্যে জনপ্রিয় নেতা বদরুদ্দিন আজমল।
এর আগে আসামে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে দুই সন্তান নীতি লাগুর চেষ্টা করেছিলো সর্বানন্দ সনোয়ালের সরকার। দু'য়ের বেশি সন্তান থাকলে কোনও ব্যক্তি রাজ্য সরকারি চাকরিতে যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন না। ২০১৯ সালে স্থির হওয়া এই নীতি ২০২১ থেকে কার্যকরের ভাবনা ছিল বিজেপি নিয়ন্ত্রিত আসাম সরকারের। যদিও তা হয়নি। ভোট থাকার জেরেই কঠোর এই পদক্ষেপ করা যায়নি বলে মনে করা হয়।
আসাম পঞ্চেয়েত আইন ২০১৮ অনুসারে, যাঁরা পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী হবেন তাঁদের দু'য়ের বেশি সন্তান থাকলে চলবে না, নূন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা তাকতে হবে। প্রার্থীর বাড়িতে শৌচাগার থাকাও বাধ্যতামূলক।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন