শনিবার বিকেলে মিনাখাঁ-বাসন্তী হাইওয়ে দিয়ে দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে 'পরিবর্তন যাত্রা'-র সময়ে বোমাবাজি হয়। বিজেপির কর্মসূচি আটকানোরও চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ। রাজ্যজুড়ে 'পরিবর্তন যাত্রা' ঘিরে মানুষের উৎসাহ বাড়ছে। তাই তৃণমূল দুষ্কৃতীরা এই কাজ করেছে বলে দাবি গেরুয়া দলের। অভিযোগ সত্ত্বেও হামলা রুখতে পুলিশ কোনও পদক্ষেপই করেনি বলে অভিযোগ বিজেপির। শনিবারের ধুন্ধুমার অবস্থার প্রেক্ষিতে রাজ্যের ভেঙে পড়া আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও পুলিশি নিষ্ক্রীয়তার অভিযোগ তুলে এবার নির্বাচন কমিশন ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি দিল বিজেপি।
উত্তর ২৪ পরগনার জেলা পুলিশ সুপারকে বদলি ও দুষ্কৃতীদের ধরতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের আবেদন জানানো হয়েছে ওই চিঠিতে। এই চিঠির প্রতিলিপি দেওয়া হয়েছে, রাজ্যের নির্বাচনী আধিকারিক, রাজ্যের স্বারাষ্ট্র সচিব, পশ্চিমবঙ্গে পুলিশের ডিজি, কেন্দ্রীয় ও রাজ্যের মানবাধিকার কমিশনকে।
বিজেপির দেওয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, 'কেন্দ্রীয় বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্পের খতিয়ান ও রাজ্য সরকারের নানা ব্যর্থতা তুলে ধরতে বাংলাজুড়ে পরিবর্তন যাত্রার আয়োজন করেছে বিজেপি। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে এই যাত্রার নিয়ে আগেই সব জানানো হয়েছিল। বসিহাটেও এধরণের যাত্রার কথা আগাম প্রশাসনের কাছে বলা হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও মিনাখাঁয় শনিবার রাজ্য বিজেপি সভাপতির নেতৃত্বে পরিবর্তন যাত্রার সময়ই বোমাবাজি ও ইঁট বৃষ্টির মতো হামলার ঘটনা ঘটে। রাজ্যজুড়ে 'পরিবর্তন যাত্রা' ঘিরে মানুষের উৎসাহ বাড়ছে দেখে তৃণমূল দুষ্কৃতীরা এই কাজ করেছে। পুলিশ সব দেখেও মুখ বুঝে ছিল। বাংলায় পুলিশ তৃণমূলের ক্যাডার হয়ে কাজ করছে। হামলার জেরে নিরাপরাধ মানুষেরা আহদ হয়েছেন। বহু গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। বেশ কয়েকজন আহতের মধ্যে অনিত্র আচার্য ও প্রদীপ দাস গুরুতর জখম হয়েছে।'
চিঠিতে শেষে লেখা হয়েছে, 'আগে জানানো সত্ত্বেও পুলিশ যাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের জন্য পর্যাপ্ত সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে ব্যর্থ হয়েছে। এজন্য যত দ্রুত সম্ভব উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ সুপারকে বদলি করা হোক। পুলিশ হামলাকারী তৃণমূল দুষ্কৃতীদের ধরার বদলে নিরাপরাধ মানুষদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করছে। যা আদতে আই ওয়াশ। এই পরিস্থিতে নিরপেক্ষ ভোটের জন্য আবেদন জানানো হচ্ছে।'
বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেছেন, 'সামনেই ভোট। কিন্তু গণতান্ত্রিক পদ্ধতি মেনে বাংলায় বিরোধী দল কোনও রাজনৈতিক কার্যক্রম চালাতে পারে না। মানুষের কাছে যেতে পারছে না। এটা চলতে পারে না। এই পরিস্থিতিতে নিরপেক্ষভাবে বিধানসভা ভোট কোনওভাবেই সম্ভব নয়। তাই কমিশন ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে চিঠি দিয়ে মিনাখাঁয় হাংলার কথা জানানো হয়েছে।'
কী হয়েছিল মিনাখাঁয়?
শনিবার রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে এই পরিবর্তন যাত্রা ঘিরে উত্তপ্ত হয় মিনাখাঁর মালঞ্চ এলাকা। দিলীপের গাড়ির সামনে বোমাবাজির অভিযোগ ওঠে। যার জেরে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে তুলকালাম হয় এলাকা। তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে। পাল্টা বোমাবাজির অভিযোগ করেছে বিজেপি। এরপর ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বিশাল পুলিশ বাহিনী। তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন