Kar Sevak: প্রাক্তন ভিএইচপি নেতা অশোক সিংঘল তাঁর ঠাকুর্দাকে 'অযোধ্যা আন্দোলনের প্রথম কর সেবক' বলে দাবি করেছিলেন। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি সচিব এবং নেহেরু মেমোরিয়াল মিউজিয়াম ও লাইব্রেরির প্রাক্তন পরিচালক রাঘবেন্দ্র সিং মনে করালেন কে সেই অশোক সিংঘলের দাদা। ১৯৪৯ সালের ডিসেম্বরে বিতর্কিত বাবরি মসজিদ কাঠামোর ভিতরে রাম লালা মূর্তির রহস্যজনক উদ্ধারের পরের দিনগুলোতে ফৈজাবাদ সিটি ম্যাজিস্ট্রেট এবং অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কর্মরত গুরু দত্ত সিং তাঁর কাজের জন্য 'প্রথম কর সেবক' উপাধি অর্জন করেন। প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু মুখ্যমন্ত্রী গোবিন্দবল্লভ পন্থকে মূর্তিটি সরানোর নির্দেশ দেন। রুখে দিয়েছিলেন গুরু দত্ত সিং। তিনি মুখ্যমন্ত্রী পন্থকে ফৈজাবাদ-অযোধ্যায় প্রবেশ করতে দেননি। এমনটাই জানিয়েছেন রাঘবেন্দ্র।
- প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু মুখ্যমন্ত্রী গোবিন্দবল্লভ পন্থকে মূর্তিটি সরানোর নির্দেশ দেন।
- গুরু দত্ত সিং এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে দেন।
- মুখ্যমন্ত্রী পন্থের গাড়ি ফৈজাবাদ সীমান্তেই রুখে দিয়েছিলেন।
১৯৪৯ সালের ২২-২৩ ডিসেম্বর, বাবরি মসজিদে রাম লল্লাকে পাওয়া গিয়েছিল। এই খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। তারপর পাকিস্তান রেডিও সেই খবর সম্প্রচার করে দাবি করে যে, হিন্দুরা দেশভাগের সময় যে জায়গাগুলো খালি করেছিল, সেগুলো দখল করছে। তাতে চাপে পড়ে যায় দিল্লির কেন্দ্রীয় সরকার। প্রধানমন্ত্রী তখন জওহরলাল নেহরু। মুসলিম নেতারা জওহরলালকে জানান, যদি বাবরি মসজিদকে রামমন্দির বলে চালানোর চেষ্টা হয়, তবে মুসলিম সম্প্রদায় কংগ্রেস পার্টি থেকে দূরে সরে যাবে। এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী নেহরু বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন উত্তরপ্রদেশের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী গোবিন্দবল্লভ পন্থকে। বিষয়টির জন্য পন্থ যোগাযোগ করেছিলেন জেলা প্রশাসনের সঙ্গে। ঘটনার একটি রিপোর্ট চাওয়া হয়েছিল। সেই রিপোর্ট জমা করা হয়। পরিস্থিতি দেখে জেলা প্রশাসন জানিয়েছিল, মূর্তিটি মসজিদ থেকে সরানো হলে সমস্যা হবে। এমনটাই জানিয়েছেন রাঘবেন্দ্র। তিনি জানান, ওই গর্ভগৃহের প্রহরী একটি আলো দেখতে পেয়েছিলেন। তাকে প্রতিমার জ্যোতি বলে দাবি করেছিলেন। সেই আলো দেখে তিনি অজ্ঞান হয়ে যান বলেই দাবি করেছিলেন ওই প্রহরী।
আরও পড়ুন- উত্তপ্ত ইরান-পাকিস্তান সীমান্ত, সংঘর্ষের মূলে এক সংগঠন! কী এই জইশ আল-আদল?
রাঘবেন্দ্র জানিয়েছেন, এই খবর নেহেরুর কানে পৌঁছেছিল। তিনি মুখ্যমন্ত্রী পন্থকে অযোধ্যায় পাঠান। রাঘবেন্দ্র বলেছেন যে তৎকালীন এডিএম গুরু দত্ত ফৈজাবাদের সীমানায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। মুখ্যমন্ত্রীকে পরিস্থিতির কারণ দেখিয়ে বাবরি এলাকায় না-যেতে পরামর্শ দেন। তিনি জানান যে, ওই অঞ্চলের মানুষের অভিযোগ, রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকার উভয়ই রাম লালার মূর্তিটি মসজিদ চত্বর থেকে সরাতে চায়। রাঘবেন্দ্র জানিয়েছেন, এসব শুনে মুখ্যমন্ত্রী পন্থ আরও রেগে যান। তিনি গুরু দত্তকে হুমকি দিয়ে বলেছিলেন যে, এর পরিণতি এডিএমকে ভোগ করতে হবে। এসব শুনে গুরু দত্ত বাড়ি ফিরে তাঁর নিকটাত্মীয়দের সঙ্গে আলোচনা করেন। তারপর সরকারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। তবে পদত্যাগের আগে তিনি দুটি আদেশ দিয়েছিলেন। তার একটি হল, রাম চবুতরের কাছে যে প্রার্থনা চলছে তা অব্যাহত থাকবে। আর, এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি থাকবে। যাতে বেশি লোক সেখানে পৌঁছে সমস্যা তৈরি করতে না-পারে।