‘বিহার থেকেই প্রজ্বলিত হবে হিন্দুত্বের শিখা’, হিন্দুত্ব নিয়ে ধীরেন্দ্র শাস্ত্রীর বক্তব্যকে কটাক্ষ করলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। শেখালেন সংবিধানের পাঠ। বাগেশ্বর ধামের ধীরেন্দ্র শাস্ত্রী এবং নীতীশ কুমারের বাকযুদ্ধে তপ্ত রাজনীতি।
ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা এবং মধ্যপ্রদেশের বিজেপি সরকারের তরফে প্রশংসিত হয়েও পাটনায় অবতরণের করার তিন দিন পরে, বাগেশ্বর ধামের ধীরেন্দ্র শাস্ত্রীকে নিয়ে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের প্রতিক্রিয়া এখন সংবাদ শিরোনামে। ১৩ মে একটি পাঁচ দিনের ধর্মীয় অধিবেশন অংশ নিতে পাটনা সফরে এসেছেন তিনি। তবে এর মাঝেই বাগেশ্বর ধামের ধীরেন্দ্র শাস্ত্রীর মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নিতীশ কুমার।
মঙ্গলবার মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলার সময় মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার বাগেশ্বর ধামের ধীরেন্দ্র শাস্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তিনি বলেন, ‘সংবিধান লঙ্ঘনের কথা বলা হচ্ছে। স্বাধীনতা সংগ্রামে সকল ধর্মের মানুষ অংশ নিয়েছিলেন, তাদের কারুর অবদানকে অসস্বীকার করা যায় না। দেশের সংবিধানে সকল ধর্মের মানুষকে সমানাধিকারের কথা উল্লেখ রয়েছে সেটা আমাদের সকলকে মেনে চলতে হবে।
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, যারা এ ধরনের কথা বলছেন, তারা কি স্বাধীনতার আগে জন্মেছেন? রাজধানীতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠান থেকে ফিরে তিনি এ কথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আপনি যে কোন ধর্ম পালন করুন, তাতে কোন বাধা নেই। কিন্তু কোন ধর্মের ভিত্তিতে কোন রাজ্যের নামকরণ এই প্রবণতা আশ্চর্যজনক। এটা কি কখনও সম্ভব? বিহারে সব মানুষের স্বার্থে কাজ করা হয়। বিহারে কোন ধর্মের মানুষের কোনপ্রকারের অসুবিধা নেই”।
মঙ্গলবার, স্বঘোষিত ধর্মগুরু ধীরেন্দ্র শাস্ত্রী বলেন, “মনে হচ্ছে হিন্দু রাষ্ট্রের জন্য আমার সংকল্প বিহারের ভূমি থেকে পূর্ণ হবে। যেদিন বিহারের ১৩ কোটি জনসংখ্যার পাঁচ কোটিও তিলক লাগিয়ে বাড়ি থেকে বের হবে, সেদিন ভারত হিন্দু রাষ্ট্রে পরিণত হবে”।তার উত্তরে, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন: “আমরা সকল ধর্মকে সম্মান করি। মানুষ তাদের ধর্ম পালনে স্বাধীন। নীতীশ যোগ করেছেন যে ভারতের মত দেশে প্রতিটি ধর্মকে সম্মান করা হয়।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সম্রাট চৌধুরী শাস্ত্রীর হিন্দু রাষ্ট্রের বিবৃতি নিয়ে প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়ে বলেন, আরজেডি মুসলমানদের সন্তুষ্ট করার জন্য এহেন মন্তব্য করছেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিং, অশ্বিনী কুমার চৌবে এবং রাম কৃপাল যাদব, বিজেপি রাজ্য সভাপতি সম্রাট চৌধুরী এবং বিধানসভায় বিজেপির বিরোধী নেতা বিজয় কুমার সিনহা পাটনায় ধর্মগুরু ধীরেন্দ্র শাস্ত্রীকে স্বাগত জানান।
আরজেডি নেতা তেজ প্রতাপ যাদবই প্রথম থেকেই শাস্ত্রীর বিরোধিতা করেছিলেন, তিনি অনুষ্ঠানের আগেই হিন্দু-মুসলিম বিভেদ সৃষ্টি করার বিরুদ্ধে তাকে সতর্ক করেন। সেই সঙ্গে কড়া সুরে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার বলেছেন, ‘অন্য ধর্মে হস্তক্ষেপ করার অধিকার কারুরই নেই। প্রত্যেকেরই নিজ নিজ ধর্ম পালনের স্বাধীনতা রয়েছে। কারুর কোন ধর্মের বিরুদ্ধে কথা বলা উচিত নয়। পূজা করার অধিকার যে কারুর’ই আছে, কিন্তু তিনি দেশের নীতি নির্ধারণ করতে পারে না’।