বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে এবার তৃণমূলের প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়। রবিবারই ঘোষণা করেছেন তৃণমূল নেত্রী। কিন্তু, প্রার্থী হিসাবে বাবুলকে মেনে রাজি নয় বেঙ্গল ইমাম অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনের সভাপতি মহঃ ইয়াহিয়া এক ভিডিও বার্তায় অসন্তোষের কথা প্রকাশ্যে জানিয়েছেন। শুধু তাই নয়, তৃণমূল প্রর্থী হিসাবে বাবুলের নাম প্রত্যাহার না করলে বালিগঞ্জ উপনির্বাচনে তিনি নিজেই নির্দল হিসাবে ভোট প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন মহঃ ইয়াইয়া।
কী কারণে বাবুলে আপত্তি?
রবিবার ভিডিও বার্তায় প্রার্থী বাবুলের প্রতি তীব্র অসন্তোষ ব্যক্ত করেছেন বেঙ্গল ইমাম অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহঃ ইয়াহিয়া। তিনি বলেছেন, 'আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর দলের প্রার্থী হিসাবে বাবুল সুপ্রিয়র নাম ঘষোণা করেছেন। বেঙ্গল ইমাম অ্যাসোসিয়েশন এই নামের বিরোধীতা করছে। আমরা বাবুল সুপ্রিয়কে কখনওই একটি ধর্মনিরপেক্ষ দলের প্রার্থী হিসাবে তাঁকে দেখতে রাজি নই। প্রয়োজনে এই প্রার্থী বাতিল না হলে আমি বালিগঞ্জ থেকে নির্দল প্রার্থী হয়ে দাঁড়াব, যাতে বাবুল সুপ্রিয়র বিরুদ্ধে ধর্মনিরপেক্ষ ভোটাররা ভোট দিতে পারেন। যে বাবুল সুপ্রিয়র হাতে আসানসোলের গাঙ্গার রক্ত লেগে আছে, ইমাম রশিদির সন্তানের হত্যাকারী হিসাবে তাঁর নাম যুক্ত হয়ে রয়েছে, সেই লোককে ধর্মনিরপেক্ষ দলের প্রার্থী হিসাবে মানতে পারছি না।'
উল্লেখ্য, ২০১৮-তে রামনবমীর দিন অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছিল আসানসোল শিল্পাঞ্চল। গোষ্ঠী সংঘর্ষে প্রাণ গিয়েছিল তিনজনের। আসানসোলের এক মসজিদের ইমাম মৌলানা ইমদাদুল্লাহ রশিদি হারিয়েছিলেন তাঁর ১৬ বছরের তরতাজা সন্তানকে। তখন আসানসোলে সাংসদ ছিলেন বিজেপির বাবুল সুপ্রিয়। এই হত্যায় নাম জড়ায় বাবুলের। যদিও সেই সময় পুত্রশোকে কাতর হয়েও ইমাম রশিদি সংঘর্ষ বন্ধের আর্জি জানিয়েছিলেন আসানসোলবাসীকে।
পরে, গতবছর সেপ্টেম্বরে বাবুল সুপ্রিয় তৃণমূল যোগ দেন। এর প্রায় ৬ মাস পর তাঁকে বালিগঞ্জ বিধানসভার উপনির্বাচনে পার্থী করল জোড়া-ফুল। সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুর ফলে বালিগঞ্জে উপনির্বাচন হচ্ছে।
বাবুলের তৃণমূলে যোগদানের পর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার কাছে মুখ খুলেছিলেন আসানসোল দাঙ্গায় পুত্রহারা ইমাম রশিদি। সরাসরি দলবদল নিয়ে কিছু না বললেও বাবুল বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়া নিয়ে মৌলানা ইমদাদুল্লাহ রশিদি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেছিন, ‘মানুষ যেখানে খুশি যেতে পারে যেখানে খুশি থাকতে পারে। এই নিয়ে আমার বলার কিছু নেই। যে রাজনীতি করে তাঁর কোনও নীতি নেই। আজ এই পার্টি তো কাল ওই পার্টি। ট্রেনের বগির মতো, আজ এই বগিতে কাল ওই বগিতে। আমার তো কারও সঙ্গে ঝগড়া বা লড়াই নেই।’ তবে, সেদিন সাংসদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলতে ছাড়েননি ইমাম রশিদি।