নিজের গাওয়া গানই এখন অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়াল বাবুল সুপ্রিয়র। পুরনো দলে থাকার সময়ে তাঁর গাওয়া গান এখন নতুন দলে এসেও শুনতে হচ্ছে। চরম বিড়ম্বনায় পড়তে হল সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর। ত্রিপুরায় আগরতলা পুরভোটের প্রচারে গিয়ে অস্বস্তি এড়াতে পারলেন না বাবুল।
আগরতলার রাস্তায় ট্যাবলো নিয়ে প্রচার করছে বিজেপি। আর তাতে বাজছে বাবুলেরই গাওয়া গান, এই তৃণমূল আর না। এমন সময় গান বাজল যে সময় তৃণমূলের পথসভায় উপস্থিত বাবুল। দৃশ্যটা শুধু ভাবুন! নিজের শত্রুর জন্যও এমন অস্বস্তিকর জিনিস ভাবতে পারবেন না বাবুল।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ লোকসভা ভোটের আগে বিজেপির হয়ে গান বাঁধেন বাবুল। তখন তিনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তাঁর দাপটই আলাদা। প্রচার গানের রেকর্ডিং করেছিলেন বাবুল। গানের লাইনের পরতে পরতে তৃণমূলকে খোঁচা দিয়েছিলেন বাবুল। প্রতি লাইনের শেষে কোরাসে বাজছিল, 'এই তৃণমূল আর না আর না!' 'কহো না পেয়ার হ্যায়' খ্যাত বাবুলের গলা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। গানটি বেশ জনপ্রিয় হয় ভোটের বাজারে। যেখানে-সেখানে মাইকে-বক্সে বিজেপি বাজাতে থাকে এই গান।
কাট টু ১৯ নভেম্বর, ২০২১। স্থান আগরতলার রামনগর এলাকা। ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থী তপন দত্তর সমর্থনে পথসভা চলছিল। সভায় ছিলেন যুব সভানেত্রী সায়নী ঘোষ এবং বাবুল সুপ্রিয়। তৃণমূলের বহু নেতা-নেত্রীকে ত্রিপুরায় ভোটযুদ্ধে পাঠানো হয়েছে। তাঁরা মাটি কামড়ে পড়ে রয়েছেন। স্ট্রিট কর্নারে চেয়ারে বসেছিলেন বাবুল। সেই সময় হঠাৎ ভেসে আসে তাঁরই গলার গান।
পথসভার পাশ দিয়ে যায় বিজেপির প্রচার ট্যাবলো। তাতেই বাজল তাঁর গাওয়া গান, এই তৃণমূল আর না আর না! কী বিড়ম্বনা। দ্রুত তখন মাইক হাতে ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামেন সায়নী। উত্তেজিত হয়ে পড়লে তাঁকে থামিয়ে বাবুল মাইক হাতে বলেন, 'ওই দলটার নেতাদের এতই অহং যে যিনি গানটা বানিয়েছিলেন তিনিই আজ দলবদল করে দিদির সঙ্গে রয়েছেন।' তিনি আরও বলেন, 'বিজেপি যত এই গান বাজাবে তত বিজেপি ছেড়ে লোকজন তৃণমূলে আসবে।'
আরও পড়ুন বিজেপিকে বিদায় জানাচ্ছেন তথাগত! শনিবার সাতসকালে জল্পনা বাড়াল টুইট
তবে বাবুল যতই ড্যামেজ কন্ট্রোলের চেষ্টা করুন, অস্বস্তি তাঁর চোখে মুখে ফুটে ওঠে। তিনি তো সবে তৃণমূলে গিয়েছেন। বিজেপিতে থাকাকালীন তৃণমূলকে 'টিএমছিঃ!' বলে সম্বোধন করতেন বাবুল। সেসব নিয়ে তো সোশ্যাল মিডিয়ায় আক্রমণ চলছেই। কিন্তু এদিনের বিড়ম্বনা সব কিছুকে ছাপিয়ে গিয়েছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন