‘আমি এখনও এনসিপি সভাপতি’, দিল্লিতে বৈঠকের পরে বিস্ফোরক শারদ পাওয়ার। মহারাষ্ট্রের মহানাটকের মধ্যে বৃহস্পতিবার দিল্লিতে দলের ওয়ার্কিং কমিটির একটি সভায় অংশ নেন প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ। হারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন অজিত পাওয়ার। নতুন এনসিপি অফিসের উদ্বোধনের সময়, অজিত পাওয়ার শারদ পাওয়ারের একটি ছবি ব্যবহার করেছিলেন, তা নিয়ে মিডিয়ার সামনে ভাইপো অজিতকে ধুইয়ে দিলেন শরদ। এদিনের বৈঠকের পর শরদ পাওয়ার বলেন, “আমি এখনও এনসিপি সভাপতি। যারা আমার আদর্শের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে এবং যাদের সঙ্গে আমার আদর্শগত পার্থক্য রয়েছে তারা আমার ছবি ব্যবহার করতে পারবেন না”। এদিনের বৈঠকে পিসি চাকো, জিতেন্দ্র আওহাদ, ফৌজিয়া খান এবং বন্দনা চভান সহ ১৩ এনসিপি নেতা উপস্থিত ছিলেন।
“মহারাষ্ট্রে আবার আসবে এমভিএ সরকার"
বৈঠক শেষে আত্মবিশ্বাসী পাওয়ার আরও বলেন, “শীঘ্রই রাজ্যের পরিস্থিতি বদলে যাবে। সেখানে উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বাধীন এনসিপি, কংগ্রেস এবং শিবসেনাকে মহারাষ্ট্রের জনগণ ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনবে। অজিত পাওয়ারের সংখ্যাগরিষ্ঠতার দাবি প্রসঙ্গে শরদ পাওয়ার বলেছেন, ‘সত্য কিছুদিনের মধ্যেই সামনে আসবে। এখন আমরা যা বলব, নির্বাচন কমিশনের সামনে বলব’।
শারদ পাওয়ারের সঙ্গেই এনসিপির সমস্ত রাজ্য ইউনিট
এদিনের বৈঠকের পর এনসিপি নেতা পিসি চাকো বলেন, ‘আমাদের জাতীয় কমিটির বৈঠকে শরদ পাওয়ারকে জাতীয় সভাপতি পদে নির্বাচিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, দলের মোট ২৭টি ইউনিট রয়েছে। ২৭ টি রাজ্য ইউনিট এনসিপি (শারদ পাওয়ার) এর সঙ্গে থাকার কথা বলেছে। একটি ইউনিটও বলেনি যে তারা শরদ পাওয়ারের সঙ্গে নেই’।
ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি (এনসিপি) প্রধান শরদ পাওয়ার বৃহস্পতিবার দলের ওয়ার্কিং কমিটির একটি সভায় সভাপতিত্ব করেন। দলীয় সূত্রের খবর দলের মোট ২৭টি ইউনিট তাঁর প্রতি "পূর্ণ বিশ্বাস এবং আস্থা" প্রকাশ করেছে। "প্রফুল্ল প্যাটেল, সুনীল তাটকরে এবং নয়জন এনসিপি বিধায়ক যারা হাত মিলিয়েছে তাদের বহিষ্কার করার সিদ্ধান্তকে অনুমোদন করা হয়েছে।
এদিনের বৈঠক শেষে শরদ পাওয়ার বলেন, “আমি এনসিপির সভাপতি। কেউ যে কোন বিবৃতি জারি করতে পারে এবং যা কিছু বলতে পারে, এর অর্থ সবকিছু বদল নয়,"। তিনি আরও বলেন, ‘আমি ৮২ হই অথবা ৯২ দলকে সঠিক পথে চালিয়ে নিয়ে যেতে আমি সক্ষম’। এনসিপি সূত্রে খবর ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকটি "দলীয় সংবিধান অনুসারে" তাঁর বাসভবনে অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে দলকে পুনর্গঠন করার দাবিও জোরালো হয়েছে।
শরদ পাওয়ার এদিনের বৈঠক শেষে মিডিয়ার সামনে বলেন, “নির্বাচন কমিশনের প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে। তবে আইনি ব্যবস্থ গ্রহণের বিকল্প পথও দলের সামনে খোলা রয়েছে, তবে আমি মনে করি না তার প্রয়োজন হবে”।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে অজিত পাওয়ার ৩০ শে জুন ইসির কাছে তার দলকে ‘আসল এনসিপি’ হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য একটি হলফনামা দেন। অন্যদিকে বুধবার কমিশনের কাছে ৪০ বিধায়কের সমর্থনের দাবি জানানো হয়েছে অজিত পাওয়ার শিবিরের তরফে। এপ্রসঙ্গে এনসিপি প্রতিষ্ঠাতা বলেছেন, "আমি জানতাম না যে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রগুলি এই দেশে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে পাঁচ দিন সময় নেয়।"
দুই-তৃতীয়াংশ বিধায়কের সমর্থন রয়েছে বলে প্রতিদ্বন্দ্বী শিবিরের দাবি খারিজ করে দিয়ে, পাওয়ার বলেন, কমিশন এব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। "তবে আমি একটি বিষয় জানি, জনগণ আমাদের সমর্থন করেছে,"। এদিনের বৈঠকে মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে দলের তরফে "গভীর উদ্বেগ"ও প্রকাশ করা হয়েছে। এদিকে, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বৃহস্পতিবার পাওয়ারের সঙ্গে তার বাসভবনে দেখা করেন।