Advertisment

মুকুলের খেলা? দেবশ্রীকে কে নিয়ে গিয়েছিলেন বিজেপি দফতরে, রহস্যভেদ করলেন বৈশাখী!

বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দেবশ্রী-দিলীপ বৈঠক হয়, সেই বৈঠকে আমার ও শোভনের নামে ক্ষোভ উগরে দেন’’।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Baisakhi, debashree, mukul, বৈশাখী, দেবশ্রী, মুকুল

বৈশাখী, দেবশ্রী ও মুকুল রায়।

কার হাত ধরে দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে গিয়েছিলেন দেবশ্রী রায়? গত ১৪ অগাস্ট শোভন-বৈশাখী বিজেপি যোগ দেওয়ার দিন থেকে এ প্রশ্নের কোনও সদুত্তর মিলছিল না কোনও মহল থেকেই। তবে এবার কার্যত রহস্যভেদের কায়দায় ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে এই প্রশ্নের উত্তর জানালেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি নেতা ‘জয়প্রকাশ মজুমদারের বন্ধুর উদ্যোগেই’ গত ১৪ অগাস্ট দিল্লিতে শোভন-বৈশাখীর বিজেপিতে যোগদানের দিন সেখানে হাজির হয়েছিলেন দেবশ্রী, দাবি বৈশাখীর। কিন্তু কে এই 'বন্ধু'? কার উদ্যোগে দেবশ্রী বিজেপি দফতরে পা রাখলেন? বৈশাখীর জবাব, ‘‘জয়প্রকাশ মজুমদারের বন্ধু সুদীপ রায়চৌধুরী দেবশ্রীকে নিয়ে গিয়েছিলেন। একথা দিলীপ ঘোষের কাছে স্বীকার করেছেন দেবশ্রী’’। অধ্যাপিকা তথা শোভনের বান্ধবীর দাবি, ‘‘সম্প্রতি একথা দিলীপ ঘোষকে জানিয়েছেন দেবশ্রী রায়’’। পাশাপাশি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে একান্ত বৈঠকে শোভন-বৈশাখীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন দেবশ্রী, এমনই দাবি করেছেন বৈশাখী।

Advertisment

আরও পড়ুন: বৈশাখী ‘নতুন বউ’! শোভন কী বললেন দিলীপকে?

এ প্রসঙ্গে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দেবশ্রী-দিলীপ বৈঠক হয়, সেই বৈঠকেই আমার ও শোভনের নামে ক্ষোভ উগরে দেন’’। এরপরই দিলীপকে নিশানা করে বৈশাখী বলেন, ‘‘রাজ্য সভাপতির কাছে তাঁর দলের বাইরের কেউ একজন তাঁর দলেরই কর্মীর (শোভন-বৈশাখী) নামে নিন্দা করছেন, এটা কি আশা করা যায়?’’।

আরও পড়ুন: বৈশাখীকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ, পুলিশের দ্বারস্থ শোভন-বান্ধবী

sovan chatterjee, debashree baisakhi, শোভন-দেবশ্রী-বৈশাখী শোভন-দেবশ্রী-বৈশাখী।

আরও পড়ুন: মমতা কখনও প্রকাশ্যে খারাপ কথা বলেননি, বৈশাখীর গলায় ‘বোধোদয়ের’ সুর

উল্লেখ্য, ‘‘দেবশ্রীকে দলে নিয়ে নেব’’, দিলীপ ঘোষের এহেন মন্তব্যের পরই বিজেপিতে দেবশ্রীর যোগদান যে কার্যত সময়ের অপেক্ষা তা বোঝা গিয়েছিল। আর ঠিক তখনই বিজেপি নেতৃত্বের একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে পদ্মশিবির ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু দেবশ্রী রায়ের জন্য বিজেপি ত্যাগের কথা মানতে নারাজ বৈশাখী। দেবশ্রীকে প্রতি কটাক্ষের সুরে বৈশাখী বলেন, ‘‘দেবশ্রী এত গুরুত্বূপূর্ম নেতা নন, যাঁকে নিয়ে শোভনবাবু চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন’’। অথচ, গত ১৪ অগাস্ট দিল্লিতে বিজেপি দফতরে শোভন-বৈশাখীর যোগদানের সময় দেবশ্রীর ‘সারপ্রাইজ ভিজিট’ ঘিরেই চলেছিল টানটান নাটক। শেষ মুহূর্তে বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের উপর কার্যত শর্ত চাপিয়ে শোভনবাবু বলেছিলেন, দেবশ্রী যোগ দিলে তিনি যোগ দেবেন না। পাশাপাশি বৈশাখী বলেছিলেন, ‘‘দেবশ্রী যেদিন বিজেপিতে যোগ দেবে সেদিনই বিজেপিতে শেষদিন হবে শোভনবাবুর’’। অতীতে একথা বললেও এদিন দেবশ্রীকে নিয়ে টানাপোড়েনের প্রেক্ষিতে বৈশাখী বলেন, ‘‘শোভনবাবু কোনও শর্ত দেননি। উনি ওঁর আপত্তির কথা জানিয়েছিলেন’’।

আরও পড়ুন: বিজেপি ছাড়ার সিদ্ধান্ত শোভন-বৈশাখীর, ‘অপমান সহ্য করে পুরানো দলেই থাকা যেত’!

এদিন বৈশাখী আরও বলেন, ‘‘দেবশ্রীর ব্যাপারে আপত্তি তোলেন শোভন, আমি তুলিনি। শোভনবাবু যে ষড়যন্ত্রের পরিবেশ থেকে বেরোতে চেয়েছিলেন, সেই যড়যন্ত্রে দেবশ্রী শামিল ছিলেন। এর তথ্যভিত্তিক প্রমাণ রয়েছে। যে ষড়যন্ত্র থেকে মুক্তির জন্য নতুন দলে যাচ্ছেন, সেখানেও যদি সেই ব্যক্তির সঙ্গে কাজ করতে হয়, তাহলে ভেঙে পড়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু উনি শর্ত দেননি। বরং বলেন, আপনার কাছে দেবশ্রী গুরুত্বপূর্ণ হলে, ওঁকে নিন, ওঁকে নিলে আমাকে নেওয়া যাবে না। তখন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বলেছিলেন, দেবশ্রী চ্যাপ্টার ক্লোজড। আমরা ভেবেছিলাম, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কথা শিরোধার্য হবে। দেবশ্রীকে নিয়ে আপত্তির কথা দিলীপকেও বলেন শোভনবাবু। দিলীপদা বলেন, উনি (দেবশ্রী) যে পারিবারিক ষড়যন্ত্রে যুক্ত তা আগে জানলে আসা আটকাতাম, এটা মুকুলের খেলা। সম্প্রতি দিলীপ আবার বলছেন, উনি কিছুই জানেন না। রিজার্ভেশনের ব্যাপারেও জানেন না’’।

sovan baisakhi , শোভন, বৈশাখী শোভন-বৈশাখী। ছবি: টুইটার।

এক্সক্লুসিভ শোভন: মমতাকে তৈরি করতে সব নষ্ট করে জীবন দিয়েছিলাম, আর উনিই রাজনীতি করলেন

প্রসঙ্গত, ১৪ অগাস্ট দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের যোগদানের দিনই চিত্রনাট্যে নাটকীয় প্রবেশ ঘটে দেবশ্রী রায়ের। দেবশ্রীকে দেখেই তীব্র আপত্তি জানান একদা দেবশ্রীর ‘বন্ধু’ শোভন চট্টোপাধ্যায়। শোভন-বৈশাখী এই ঘটনায় এতটাই ক্ষুব্ধ হন যে বিজেপি নেতৃত্বকে হুঁশিয়ারি দিয়ে শোভন জানিয়ে দেন, দেবশ্রী রায় যেদিন যোগ দেবেন, সেদিনই তাঁর (শোভন) বিজেপিতে শেষ দিন হবে। এরপর ‘স্বাভাবিকভাবেই’ সেদিন আর দেবশ্রীর বিজেপিতে যোগদান সম্ভব হয়নি। সেই থেকেই বঙ্গ রাজনীতিতে দেবশ্রী রায়কে ঘিরে জোর চর্চা শুরু হয়। তবে এই ঘটনায় রহস্য জিইয়ে রেখে কার্যত ‘উধাও’ হয়ে যান বরাবর দক্ষ অভিনেত্রী হিসাবে প্রশংসিত দেবশ্রী রায়। সেদিনের পর থেকে দেবশ্রীর মোবাইল ফোনও বন্ধ। কিন্তু, কে বা কারা সেদিন দেবশ্রীকে বিজেপি দফতরে নিয়ে গিয়েছিল, সে নিয়ে নানান প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল। শেষমেশ বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'সৌজন্যে' এদিন তা ‘ফাঁস’ হল।

bjp
Advertisment