শ্রাবণ মাসেও বঙ্গ রাজনীতিতে বার বার ফিরে আসছেন বৈশাখী! আবারও বাংলা রাজনীতিতে চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। বিগত কয়েকমাসে শোভন-বৈশাখীর রাজনৈতিক সমীকরণ নিয়ে উথালপাতাল হয়েছে রাজ্য রাজনীতি। এরমধ্যেই সম্প্রতি, শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ফলে, শোভন-বৈশাখীর 'ঘরে ফেরা' নিয়ে প্রবল জল্পনা তৈরি হয়েছে। এমতাবস্থায় ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে বৈশাখী জানিয়ে দিলেন, তিনি তৃণমূলে কিছুতেই ফিরবেন না। তাহলে কি তিনি পদ্মমুখী? জল্পনা উস্কে দিয়ে খোদ বৈশাখী জানালেন, ‘‘বিজেপি আমার কাছে রাজনৈতিকভাবে অস্পৃশ্য নয়, যেতেও পারি।’’ তবে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি তিনি।
আরও পড়ুন: তৃণমূলেই আছি, দল প্রমাণ করল আমার দাবি ন্যায্য ছিল: সব্যসাচী
কী বলেছেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়?
সম্প্রতি গভীর রাতে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাটে যান তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। রাত বিরেতে দুই রাজনৈতিক নেতার এই মুখোমুখি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ও। আর এই বৈঠক ঘিরেই তুমুল চর্চা চলছে রাজ্য রাজনীতিতে? এ বৈঠক প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করতেই ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বৈশাখী বলেন, ‘‘এটা বৈঠকই ছিল না। উনি এসেছেন ওঁর সহকর্মীর কাছে। পার্থদার সঙ্গে কথা হয়েছে। বৈঠক হিসেবে দেখাটা ঠিক নয়’’। এরপরই আগামী দিনের কথা বলতে গিয়ে বৈশাখী বলেন, ‘‘আমি রাজনীতির মানুষ ছিলাম না। রাজনীতির আঙিনা থেকে অনেক দূরে থাকার মানুষ আমি। হঠাৎ জলঘোলা করে আমায় রাজনীতিতে টেনে আনা হল। প্রতিপক্ষ যখন রাজনীতির লোক হয়, তখন হয়তো রাজনীতিতে আসতেও পারি। যে অন্যায় হয়েছে, অপমানিত হতে হয়েছে যেভাবে, তা সহ্য করার মানসিকতা আমার নেই। আমি চিরকালই লড়াই করে এসেছি। আগামী দিনে রাজনীতিতে আসব আসব কি না, সে সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছি না।’’
আরও পড়ুন: ‘প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণাদের ডেকে বলছে বিজেপি নেতাদের সঙ্গে যোগযোগ করো’
রাজনীতিতে এলে কোন দলে যোগ দেবেন বৈশাখী? তৃণমূলেই কি যোগ দেবেন নাকি বিজেপিতে? এ প্রশ্নের জবাবে বৈশাখী বলেন, ‘‘তৃণমূলে ফেরার কোনও প্রশ্নই নেই। যাঁরা তৃণমূল ছাড়ছেন তাঁরা ভাল লোক, তাঁদের সঙ্গে আমার ভাল যোগাযোগ রয়েছে। তাঁরাই তো থাকছেন না’’। এ প্রসঙ্গে শোভনের বান্ধবী আরও বলেন, ‘‘সব দলের নেতাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে। আমার মনে হয় শিক্ষিত মানুষের সামাজিক সম্পর্কগুলো সুন্দর হওয়া দরকার। বিভিন্ন নেতাদের সঙ্গে কথা হয়। তবুও শুধু বিজেপিকেই তুলে ধরা হচ্ছে। কারণ, বাংলায় প্রধান প্রতিপক্ষ দল বিজেপিই। কংগ্রেস-সিপিএম নেতাদের সঙ্গেও সুসম্পর্ক রয়েছে। কোন প্রবাহে আগামী দিনে চলব, সেটা আগামী দিনই বলবে’’। এরপরই বৈশাখী বলেন, ‘‘বিজেপি আমার কাছে রাজনৈতিক ভাবে অস্পৃশ্য নয়, যেতেও পারি’’।
আরও পড়ুন: ‘স্বামীর কথায় নুসরত কি বিজেপিতে যাচ্ছেন?’
উল্লেখ্য, এর আগেও বৈশাখীর বিজেপিতে যোগদান ঘিরে তুমুল চর্চা চলেছে বঙ্গ রাজনীতিতে। বৈশাখীর হাত ধরে শোভন চট্টোপাধ্যায়ও বিজেপিতে যেতে পারেন বলে গুঞ্জন চলে। লোকসভা ভোটে শোভন-বৈশাখীকে প্রার্থী হওয়ার জন্য বিজেপির এক নেতা প্রস্তাব দিয়েছিলেন বলেও দাবি করেছিলেন বৈশাখী। সেই প্রেক্ষিতে এদিন যে ভাষায় বিজেপিতে যোগদানের সম্ভাবনার কথা বললেন বৈশাখী, তা রাজনৈতিক দিক থেকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনীতির কারবারিদের একাংশ।