ভাদোদরা, রাজকোট ও ভাবনগরে আগেই রাস্তার ধারে আমিষ খাবারের দোকানগুলি বন্ধ করার নির্দেশ জারি করেছে পুরকর্তৃপক্ষ। এবার সেই পথে হাঁটছে বিজেপি শাসিত আমেদাবাদ পুরনিগমও। যানজট এড়ানো ও ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাতের কারণেই রাস্চার দু'ধার থেকে আমিষ খাবারের দোকানগুলি তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে, এই পদক্ষেপ নিয়ে গেরুয়া শিবিরের অন্দরেই বিভেদ রয়েছে। সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক স্বার্থেই বলে দাবি করেছে বিরোধী শিবির।
আমেদাবাদ পুরসভার রাজস্ব কমিটির চেয়ারম্যান জৈনিক ভাকিল পুর কমিশনার ও স্ট্যান্ডিং কমিটিকে দেওয়া চিঠিতে শহরের রাস্তায় আমিষ খাবারের দোকান বন্ধ করার আবেদন জানিয়েছেন। চিঠিতে উল্লেখ, 'গুজরাটের পরিচয় এবং কর্ণাবতী (আহমেদাবাদ) শহরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের কথা মাথায় রেখে, অবিলম্বে শহরের রাস্তা, ধর্মীয় ও শিক্ষা স্থানগুলি থেকে মাংস, মাছ সহ আমিষ খাবারের দোকান বাড়ছে, যার দখলমুক্তি প্রয়োজন। আমিষ খাবরের দোকান বৃদ্ধির ফলে নাগরিকদের রাস্তায় চলাফেরায় অসুবিধা হয় ও বাসিন্দাদের ধর্মীয় অনুভূতিতেও আঘাত লাগে। এছাড়া আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে তালমিলিয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, জীবদয়া বজায় রাখাও গুরুত্বপূর্ণ।'
তবে, পুরসভাগুলির এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে সহমত নন রাজ্য়ের একাধিক শীর্ষ বিজেপি নেতা। দলের প্রদেশ সভাপতি সিআর পাটিল বলেছেন, 'এ পদক্ষেপের সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। তবে আমার সঙ্গে তিন পুর কর্তৃপক্ষের কথা হয়েছে। নিরামিষ খাবেরর দোকানে হাত না দেওয়ার জন্য ওদের অনুরোধ জানিয়েছি। কারোর যাতে কোনও ক্ষতি না হয় তাও দেখার অনুরোধ করেছি।'
গুজরাটের খেদা জেলার বিজেপির প্রাক্তন আইটি সেলের সভাপতি নন্দীতা ঠাকুর টুইটে লিখেছেন, 'আমরা বাস্তবতা এড়াতে পারিনা। আমাদেরই বহু সহ নাগরিক মাছ বিক্রি করে জীবনধারণ করেন। তাই যাঁরা আমিষ খাবার বিক্রি করেন রাস্তার ধারের দোকানে তাঁদের যেন সরিয়ে দেওয়া না হয়। সরালে বিকল্প জীবিকার সন্ধান করে দেওয়াও প্রশাসনের কাজ হবে।'
ভাদোদরার বিজেপি জনপ্রতিনিধি বলেন, 'আমি নিজে নিরামিষাশী, কিন্তু যাঁরা আমিষ খান বা বিক্রি করেন তাঁদের বিরুদ্ধে নই। মাছ, মাংস যাঁরা বিক্রি করছেন তাঁরা সেটা করেই জীবনধারণ করেন। পুর কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্যকর খাবারের কথা বলছে, যা সবাই মেনে নেবে। কিন্তু জোর করে শুধু আমিষ খাবারের ক্ষেত্রেই যদি স্বাস্থ্যকর বিষয়টি প্রাধান্য পায় তবে তা হতাশার হবে।'
ভাদোদারার মেয়র কেউর রোকাদিয়া বলেছেন, 'আমরা রাস্তা থেকে কোনও স্টল সরাতে পারিনা বা নির্বিচারে কোনও বিশেষ ধরনের খাবার বিক্রি থেকে কাউকে বিরত রাখতে পারি না। তবে খাবার ঢেকে রাখলে অবশ্যই কোন ক্ষতি নেই, বিশেষ করে আমিষ-ভোজীদের কাছে।'
ভাদোদরা পুরসভার স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান বলেছেন, 'রাজ্য সভাপতির নির্দেশ পেয়েছি। আমিষ খাবার ঢেকে রাকলেও সমস্যা কিছুটা মিটতে পারে। তবে, যেসব হকারের কাছে লাইসেন্স নেই তাদের দোকান তুলে দেওয়া হবে, বিশেষ করে আমিষ দোকানগুলি।'
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন