শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে চরম বিড়ম্বনায় পড়েছে বঙ্গ বিজেপি। নাম ঘোষণা করেও গেরুয়া শিবিরের রাজনীতির ময়দানে অভিষেক ঘটল না শোভন-বৈশাখী জুটির। মিছিলে যাঁদের নেতৃত্ব দেওয়ার কথা ছিল তাঁরাই গরহাজির। শৃঙ্খলাবদ্ধ দল বলে নিজেদের দাবি করা বিজেপিতে এমন ঘটনায় নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এমনকী দলের রাজ্য সভাপতি এ বিষয়ে জবাব দিতে গিয়ে এড়িয়ে গিয়েছেন। শেষমেশ রোড শোতে যোগ দিয়ে মুকুল রায়, সাংসদ অর্জুন সিংরা মুখ রক্ষা করেন। বঙ্গ বিজেপি সভাপতি জানিয়ে দিয়েছেন কেন এদিনের মিছিলে শোভন-বৈশাখী আসেননি তা নিয়ে তাঁর সঙ্গে কোনও কথাও হয়নি এবং তিনি না আসার কারণও জানেন না।
দেড় বছর আগে দিল্লি গিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী ও কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে বিজেপিতে যোগ দেন তাঁর বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। যোগদানের দিন বিজেপির দিল্লির দফতরে তৃণমূল বিধায়ক দেবশ্রী রায় হাজির থেকে সেই অনুষ্ঠান ফিকে করে দিয়েছিলেন। ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন শোভন-বৈশাখী। তারপর ৬, মুরলিধর লেনে সম্বর্ধনা অনুষ্ঠান ঘিরে আর এক দফা বিড়ম্বনা। সেই দশা যেন কিছুতেই কাটছে না। বহু দিন বিজপিতে পদবিহীন ছিলেন শোভন-বৈশাখী। রাজ্য কমিটির সদস্য, তারপর কলকাতার সাংগঠনিক দায়িত্ব বর্তায় দুজনের উপর। বিজেপিতে যোগ দেওয়া শোভন-বৈশাখী এখনও পর্যন্ত প্রকাশ্য কোনও দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নেননি।
আরও পড়ুন- শেষ পর্যন্ত রোড-শো এড়ালেন শোভন-বৈশাখী, হাজির বিজেপির অন্যান্য হেভিওয়েটরা
শোভন-বৈশাখীর অবস্থান নিয়ে দলের অন্দরেও ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। রবিবার গভীর রাত অবধি বৈঠক বা যে ধরনের পরিস্থিতিই হোক না কেন সোমবারের মিছিলে অংশ না নেওয়ায় রাজ্যবাসীর কাছে দলের মুখ পুড়েছে বলে মনে করছে রাজ্য নেতৃত্বের একাংশ। তাঁরা এ বিষয়ে কড়া অবস্থানের পক্ষপাতী। তৃণমূলের একাধিক নেতা-নেত্রী বিজেপিতে যোগ দিয়ে দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছে। এমনকী সদ্য যোগ দেওয়া শুভেন্দু অধিকারী টানা দলীয় কর্মসূচিতে রয়েছেন। এক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম শোভন-বৈশাখী।
এরইমধ্যে দলীয় কার্যালয়ে কাগজে লেখা শোভন-বৈশাখীর নেম প্লেট ছিঁড়ে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। যদিও দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বিষয়টা জানেন না বলেই মন্তব্য করেছেন। কিন্তু শোভন-বৈশাখী নিয়ে দলে শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে গিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। তবে তিনি বলেন, "যাঁরা কাজ করতে এসেছেন তাঁদের মনস্থির করতে হবে। পার্টি সবাইকে কাজ দেওয়ার জন্য, জায়গা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছে, দিয়েছেও। সবার জন্য দরজা খোলা আছে। তাঁরাই ঠিক করবেন তাঁরা কী করবেন।" কেন তাঁরা এদিন মিছিলে ছিলেন না সে বিষয়ে পরবর্তীতে খোঁজ নেওয়া হবে বলে দিলীপ ঘোষ জানান। শোকজ করা হবে কি না? জবাবে দিলীপ ঘোষ বলেন, "তাঁর জন্যও ব্যবস্থা আছে। শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি আছে।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন