লক্ষ্য ২১শের বিধানসভা জয়। তারই স্টেজ রিহার্সাল হবে আগামী মাসে রাজ্যব্যাপী পুরভোটে। এই দুই নির্বাচানকেই পাখির চোখ করে আপাতত 'বাংলার গর্ব মমতা' প্রচার কর্মসূচিতে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল। শনিবার থেকে শুরু হয়েছে প্রচার অভিযান। বাংলায় মমতাই যে বিকল্প ভোটারদের তা বোঝাবার সঙ্গে সঙ্গেই দল থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া পুরনো কর্মীদের ফের সংগঠনের কাজে যুক্ত করার চেষ্টায় জোড়া-ফুল শিবির।
ভোট স্ট্রাটেজিস্ট প্রশান্ত কিশোরের মস্তিস্কপ্রসূত 'বাংলার গর্ব মমতা' কর্মসূচিতে রাজ্যের ২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্রেই পৃথকভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। স্থানীয় বিধায়কদের পাশাপাশি সভায় বক্তব্য রাখছেন স্থানীয় ও রাজ্যস্তরের নেতৃত্বও। আগামী ৭৫ দিনে তৃণমূল নেতা, কর্মীরা রাজ্যব্যাপী ১ লক্ষ বাড়িতে গিয়ে গিয়ে মমতা সরকারের গত ৯ বছরের কাজের খতিয়ান তুলে ধরবেন। বিজেপির বিরুদ্ধাচারণের সঙ্গেই রাজ্য পরিচালনা, সম্প্রীতি বজায় রাখতে কেন ফের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই প্রয়োজন তা ভোটারদের বোঝাবেন জোড়া-ফুল শিবিরের কর্মীরা।
আরও পড়ুন: ৭৫ দিনে ২.৫ কোটি হৃদয় জয়ের লক্ষ্যে ঝাঁপাচ্ছে মমতা ব্রিগেড
প্রচার কর্মসূচির অঙ্গ হিসাবে আগামী ১৪ দিন ধরে হবে 'জলযোগে যোগাযোগ'। দল থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া বা নিষ্ক্রিয় পুরনো কর্মীদের ফের সংগঠনমুখো করতে এই পর্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। কিশোরের নির্দেশ মত এই সময়কালে এলাকায় এলাকায় দলীয়স্তরে ছোট ছোট আলোচনাসভা বসাতে হবে। সংগঠনের পুরনো কর্মী, নেতাদের ডেকে যোগ্য সম্মান দিয়ে কথা বলতে হবে। দল এই পর্যায়ে আসতে তাঁদের অবদানের কথা স্মরণ করতে হবে। এক তৃণমূল নেতার কথায়, 'ক্ষমতা গ্রহণের পর সিপিআইএম সহ একাধিক দল থেকে তৃণমূলে বহু নেতা যোগ দিয়েছেন। স্থানীয়স্তরেও একই ছবি। সেই সময় দলের অনেক পুরনো নেতা, কর্মী যোগ্য সম্মান না পেয়ে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। অনেকেই আবার নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন। তাদের ফের সংগঠনমুখো করতেই এই উদ্যোগ।'
আরও পড়ুন: ভোট লুঠ করা যাবে না, কাউন্সিলরদের বার্তা তৃণমূলের
দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, '১৯৯৮ সাল থেকে যাঁরা দল করেছেন তাঁদের অনেকেই আজ বসে গুমরে গুমরে কাঁদছেন। তাঁদের দলে এনে সম্মান দিতে হবে। কে পছন্দ করল, কে করল না, তা ভাবলে হবে না।'
তবে এই কর্মসূচি রূপায়ণ করতে গিয়ে শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ছবিটাও প্রকট হচ্ছে। বর্ধমান, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, জলপাইগুড়ির ধূপগুড়িতে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন বিভিন্ন গোষ্ঠীর স্থানীয় তৃণমূল নেতা, কর্মীরা। সভায় আমন্ত্রণ ঘিরে বিবাদ দানা বাঁধে। তবে একে আমল দিতে নারাজ দলের শীর্ষ নেতৃত্ব।
আরও পড়ুন: পুর নির্বাচনে প্রার্থী তালিকা প্রকাশে বঙ্গ বিজেপির নয়া কৌশল
'দিদিকে বলো'র পর 'বাংলার গর্ব মমতা' কর্মসূচিতেই কী ভোটারদের হারানো আস্থা ফের পুনরুদ্ধারে সক্ষম হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল? দলে ফেরানো যাবে পুরনো কর্মীদের? নজরে বাংলার পুরভোট ও ২১শের বিধানসভা নির্বাচন।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন