মেঘালয় বিজেপি প্রধান: দলের কেউ আমাদের বলে না ‘এটা (গরুর মাংস) নেই’। এটা আমাদের লাইফস্টাইল, এর সঙ্গে বিজেপির কোনো সম্পর্ক নেই
২৭ ফেব্রুয়ারি মেঘালয়ে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে, উত্তর পূর্বের এই রাজ্যে মরিয়া প্রচার চালাচ্ছে বিজেপি। মেঘালয়ের ৬০টি আসনেই এককভাবে লড়াই করছে পদ্ম বাহিনী। মেঘলয়ে বিজেপির জয়ের সম্ভবানা কতটা? ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি)-র সঙ্গে কেন তিক্ত হল সম্পর্ক? সেসব নিয়েই দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে কথা বলেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি আর্নেস্ট মাওরি। উল্লেখ্য, গত পাঁচ বছর বিজেপি এনপিপি-র নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন জোটের অংশ ছিল।
প্রশ্ন- এনপিপির সঙ্গে সম্পর্ক তিক্ত হয়েছে বিজেপির। তুরার স্টেডিয়ামে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি। কেন এই পরিস্থিতি হল?
আর্নেস্ট মাওরি- অত্যন্ত নিন্দনীয়। পি এ সাংমা স্টেডিয়ামটি বিজেপি-নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া টাকায় হয়েছিল। সেখানেই দেশের প্রধানমন্ত্রীর সভার অনুমতি দেওয়া হল না। এটা বড় অপমান। এছাড়াও, স্টেডিয়ামের কোথাওউল্লেখ নেই যে, সেটি প্রধানমন্ত্রী মোদীর অধীনে কেন্দ্রীয় সরকারের টাকায় তৈরি হয়েছিল। সব জায়গায় শুধু মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমার নাম, তাঁর বোন আগাথার এবং ভাই জেমসের নাম রয়েছে।
প্রশ্ন- তাহলে কি পাঁচ বছরের জোট অসুখী?
আর্নেস্ট মাওরি- এটা হয়েছে এনপিপির- অবিশ্বস্ততার কারণে। রাজ্যের সমস্ত প্রকল্প সরাসরি কেন্দ্রের দেওয়া টাকায় হলেও মেঘালয় সরকারের কোনও কৃতজ্ঞতা বোধ নেই। দুর্নীতির কারণে এনপিপি নেতাদের মুখ লুকানোর জায়গা নেই। ভোটেই এবার ওরা জবাব পাবে।
প্রশ্ন- গত বছর বিজেপি সহ-সভাপতি বার্নার্ড মারাকের গ্রেফতার কি সম্পর্ক আরও খারাপ করে তুলেছে?
আর্নেস্ট মাওরি- বিষয়টি বিচারাধীন থাকায় এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করা ঠিক নয়। তবে মারাকের বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ মেলেনি, ওকে ছেড়ে দিতে হয়েছে। ফলে স্পষ্ট যে এই গ্রেফতারি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ছাড়া কিছু নয়।
প্রশ্ন- এই নির্বাচনে মেঘালয়ে বিজেপির জয়ের সম্ভাবনা কতটা?
আর্নেস্ট মাওরি- ২০১৮ সালে, আমরা ৪৭টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে মাত্র দুটিতে জিতেছিলাম। এবার, আমরা ৬০টিতেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। দলের সমীক্ষায়উঠে এসেছে যে রাজ্যের ২০-২৫ শতাংশ ভোটার বিজেপির সমর্থনে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভালো কাজের জন্যই এই সমর্থন।
প্রশ্ন- বিজেপির খ্রিস্টান-বিরোধী ভাবমূর্তি কতটা ভয়ের?
আর্নেস্ট মাওরি- এটা কংগ্রেস, তৃণমূল, এমনকী এনপিপি প্রচার চালাচ্ছে। ৯ বছর ধরে ভারতের সরকার পরিচালনা করছে প্রধানমন্ত্রী মোদীর নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভা। এই সময়কালে একটি গির্জাতেও হামলা হয়নি। প্রধানমন্ত্রী মোদী পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে দেখা করে মেঘালয়ে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। খ্রিস্টানরা সবটাই বুঝতে পারছেন।
প্রশ্ন- আপনি সম্প্রতি বলেছেন- গরুর মাংস খেলে বিজেপির কোনও সমস্যা নেই…
আর্নেস্ট মাওরি- উত্তর-পূর্বে, বিশেষ করে মেঘালয়ে, গরুর মাংস খাওয়া সংস্কৃতি এবং খাদ্যাভ্যাস। প্রত্যেকেরই গরুর মাংস খান। গরুর মাংস খেতে পারব না- দলের কেউ আমাদেরএকথা বলেনি। গরুর মাংস খাওয়ার সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। মেঘালয়ের মানুষের জীবনযাত্রার সঙ্গে গরুর মাংস জড়িত।
প্রশ্ন- মেঘালয়ে বিধানসভা ভোটের সম্ভাব্য ফলাফল ত্রিশঙ্কু। নির্বাচনের পরে এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে বিজেপি কোন দলগুলির সঙ্গে জোট বাঁধবে?
আর্নেস্ট মাওরি- আমরা একাই ৬০টি আসনে লড়ছি। ২রা মার্চের জন্য অপেক্ষা করা যাক। আমাদের ডাবল ডিজিট থাকবে এবং আমরা সরকার গঠন করব। তবে হ্যাঁ, যদি প্রয়োজন হয়, আমরা সমমনস্ক দলের সঙ্গে জোট করব। সেই জোট দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের অবস্থানকে সমর্থন করবে।