Advertisment

জমে উঠেছে ‘ইন্ডিয়া বনাম ভারতের’ লড়াই, G-20-এর নৈশভোজের আমন্ত্রণ পত্র ঘিরে তুমুল বিতর্ক

‘বিজেপি ইন্ডিয়া জোটকে ভয় পায়’ তোপ বিরোধীদের।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
g20 summit, g20 leaders' summit, bharat official, bharat, india, India g20 summit, bharat name change, special parliament session

G-20-এর আমন্ত্রণ পত্র ঘিরে তুমুল বিতর্ক।

G-20-এর আমন্ত্রণ পত্র ঘিরে তুমুল বিতর্ক। আমন্ত্রণ পত্রে ‘প্রেসিডেন্ট অফ ইন্ডিয়ার’ জায়গায়, ‘প্রেসিডেন্ট অফ ভারত’ লেখাকে নিয়ে রীতিমত শোরগোল পড়ে গিয়েছে। প্রসঙ্গত, বিজেপি বিরোধী দলগুলি যে জোট তৈরি করেছে তার নাম দেওয়া হয়েছে ‘ইন্ডিয়া’। এই জোটে কংগ্রেস, তৃণমূল, এনসিপি, শিবসেনা (উদ্ধব শিবির), এসপি, জেডিইউ, ডিএমকের মতো একাধিক বিজেপি- বিরোধী দলগুলি রয়েছে।

Advertisment

মঙ্গলবার G20 নৈশভোজের আমন্ত্রণে 'প্রেসিডেন্ট অফ ভারত' উল্লেখ করার পর শুরু হয় রাজনৈতিক বিতর্ক। সংসদের আসন্ন বিশেষ অধিবেশনে দেশের নাম ‘ইন্ডিয়া’থেকে ‘ভারত’করার জন্য বিশেষ রেজোলিউশন আনতে পারে সরকার। সম্ভাবনা ঘিরে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা।

আগস্টে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দক্ষিণ আফ্রিকায় ১৫ তম ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন এবং তারপরে গ্রিস সফরেও যান। ২২-২৫ অগাস্ট উভয় দেশে তার সফরের জন্য সরকারি বিজ্ঞপ্তিতেও তাকে 'ভারতের প্রধানমন্ত্রী' হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ৬-৭ সেপ্টেম্বর 20তম আসিয়ান ইন্ডিয়া সামিট এবং ১৮ তম ইস্ট এশিয়া সামিট (ইএএস) এর জন্য ইন্দোনেশিয়া যাবেন। তার সফরের একদিন আগে, তার সফরের ফাংশন নোটে তাকে 'ভারতের প্রধানমন্ত্রী' হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডোর আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী মোদী জাকার্তায় থাকবেন।

১৮ সেপ্টেম্বর সংসদের একটি বিশেষ অধিবেশন শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশের নাম বদলের প্রস্তাবকার্যকর করার জন্য সংবিধানে একটি সংশোধনী আনা হতে পারে বলে জল্পনা রয়েছে।

জি 20 নৈশভোজের বিষয়ে রাষ্ট্রপতি ভবনের আমন্ত্রণ পত্রে বিরোধীরা রীতিমত ক্ষুব্ধ। এই আমন্ত্রণপত্রে '‘প্রেসিডেন্ট অফ ইন্ডিয়ার’ জায়গায়, ‘প্রেসিডেন্ট অফ ভারত’লেখা হয়েছে। দেশের নাম পাল্টানোর চেষ্টার অভিযোগ তুলে মোদী সরকারকে আক্রমণ করেছে বিরোধীরা। কংগ্রেস বলেছে যে ৯ সেপ্টেম্বর জি-২০ নৈশভোজের জন্য রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে পাঠানো আমন্ত্রণপত্রে ‘প্রেসিডেন্ট অফ ইন্ডিয়ার’জায়গায়, ‘প্রেসিডেন্ট অফ ভারত’লেখা হয়েছে।

কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ লিখেছেন, "এখন, সংবিধানের প্রথম অনুচ্ছেদে লেখা হবে, ‘ভারত, যা আগে ইন্ডিয়া ছিল, একটি যুক্তরাষ্ট্র। এখন যুক্ত্রাষ্ট্রীয় কাঠামোর ওপর আক্রমণ নেমে আসছে”। টুইটে মোদীকে নিশানা করা তিনি বলেছেন, মোদী ইতিহাসকে বিকৃত করতে চলেছেন। সেই সঙ্গে 'ভারত'কে বিভক্ত করার অভিযোগও আনা হয়েছে মোদীর বিরুদ্ধে।

আম আদমি পার্টির সাসপেন্ড করা রাজ্যসভার সাংসদ রাঘব চাড্ডা বলেছেন যে বিজেপির এই সিদ্ধান্ত বিরোধী দলগুলিকে বিরক্ত করতে চলেছে। আপ নেতা বলেন, "বিজেপি 'দেশের নাম'কে কীভাবে বদলে দিতে পারে? দেশ কোন রাজনৈতিক দলের অধীনে নয়। এটি ১৩৫ কোটি ভারতীয়দের। আমাদের জাতীয় পরিচয় বিজেপির ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়, যা তারা চাইলে পরিবর্তন করতে পারে।"

দেশের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেছেন, কোন দলের জোট 'ইন্ডিয়া' হলে বিজেপি দেশের নাম বদলে দেবে? দেশ ১৪০ কোটি ভারতীয়’র কোন দলের নয়। আগামীকাল যদি ইণ্ডিয়া জোটের নাম পরিবর্তন করে ‘ভারত’ করা হয়, তাহলে বিজেপি কি ‘ভারতে’র নামও পরিবর্তন করবে? এটা দেশের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা।

বিজেপি ইন্ডিয়া জোটকে ভয় পায়

কংগ্রেস নেতা প্রমোদ তিওয়ারি বলেছেন, "তারা 'ইন্ডিয়া' শব্দটিকে এখন ভয় পেতে শুরু করেছে। আপনি পৃথিবী থেকে 'ইন্ডিয়া' শব্দটি মুছে ফেলতে পারবেন না। আমরা আমাদের দেশ নিয়ে গর্বিত।"

আমন্ত্রণপত্রে প্রেসিডেন্ট অফ ভারত লেখা নিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, বিজেপি 'ইন্ডিয়া’ নাম পরিবর্তন করতে চলেছে। G20 শীর্ষ সম্মেলনের নৈশভোজের জন্য রাষ্ট্রপতির পাঠানো আমন্ত্রণপত্রে ‘ভারত’ লেখা রয়েছে। ইংরেজিতে আমরা বলি 'India' এবং 'Indian Constitution' এবং হিন্দিতে আমরা বলি ভারতের সংবিধান। এতে নতুন কি আছে? 'ভারত' নামেই বিশ্ব জানে। হঠাৎ কী হল যে দেশের নাম বদলাতে হল?

কংগ্রেস নেতা পবন খেদা এএনআইকে বলেছেন, .'ইণ্ডিয়া' শব্দটি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সমস্যা রয়েছে তাই তিনি দেশের নাম বদলে দেওয়ার কথা ভাবতে শুরু করেছেন। মোদীজি, সারা বিশ্ব আপনাকে নিয়ে হাসছে। আপনি আমাদের, আমাদের নেতৃত্ব, আমাদের আদর্শকে ঘৃণা করেন, আমাদের কোনো সমস্যা নেই, কিন্তু ভারত, ভারতীয়দের ঘৃণা করবেন না”।

India modi
Advertisment