২ মে’র পর থেকে বিজেপির অন্দরে একটা চোরা স্রোত বইছিল। মুকুল রায় তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর সেই স্রোত গা ভাসাতে চান বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতারা। আর এই তালিকায় নাম রয়েছে ভোটের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া একাধিক বিধায়ক ও প্রাক্তন বিধায়ক। যাঁদের বেশিরভাগ মুকুল ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত।
তবে এই উল্টো স্রোতকে গুরুত্ব দিতে নারাজ বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সোমবার তিনি বলেছেন, ‘ভোটের আগে এবং পরে দলবদল স্বাভাবিক। এবার একটু বেশি হচ্ছে। আমরা একটা এক্সপেরিমেন্ট করেছিলাম, কিছু কাজে লেগেছে। বাকিতা লাগেনি। কেন লাগেনি সেটা খতিয়ে দেখতে হবে।‘ তবে এখানেই থামেননি দিলীপ ঘোষ।
দলবদলে আগ্রহ দেখানো এবং বেসুরো বিজেপি নেতাদের প্রতি তাঁর বার্তা, ‘শরীরে বেশি চর্বি জমলে দেখতে ভালো লাগে না। চর্বি ঝরছে, ভালো লাগছে।‘
এদিকে, বিজেপির ভাঙন প্রসঙ্গে রাজ্য সভাপতির মন্তব্য, ‘ভোটের আগে দলে ১০০ জন বিধায়ক আসবে। এমন দাবি করা হয়েছিল। এবার ৩৫ জন বিধায়ক দল ছাড়বেন এমন দাবি করা হচ্ছে।‘ এই বিজেপি থেকে তৃণমূল আসতে চাওয়া উল্টোস্রোত প্রসঙ্গে বিজেপির দিকেই সুর চড়িয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি বলেন,’এটা নির্বাচনের আগে মনে ছিল না? যখন উনি দলত্যাগীদের নিচ্ছিলেন, তখন মনে ছিল না? আজকে হঠাৎ মনে পড়েছে। এখন ওদের দল ওটা কিভাবে সামলাবেন, দল কি করে বাংলায় টেকাবেন? ওরাই ঠিক করুক।‘
এদিকে, ভোটে পরাজয়। মুকুল রায়ের তৃণমূলে যোগদান। জোড়া ধাক্কার মাঝেই বিজেপির অস্বস্তি বাড়াচ্ছেন দলের ‘বেসুরো’রা। এবার তাই গেরুয়া শিবিরের ‘বেসুরো’দের কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। ফেসবুক পোস্টে স্পষ্ট জানালেন, বিজেপিতে থাকতে হলে ত্যাগ-তপস্যা করতেই হবে। ক্ষমতালোভীরা থাকতে পারবেন না, দলও তাঁদের রাখবে না। দলত্যাগ বিষয়টিকেও ‘অভ্যাস’ বলে দেগে দিয়েছেন দিলীপ। অর্থাৎ, বিজেপি করতে হলে যে দলীয় নীতি-আদর্শ মানতেই হবে, তা এ দিন স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।
বেসুরো’দের বার্তা দিতে রবিবার ফেসবুক পোস্টে দিলীপ ঘোষ লিখেছেন, ‘দল ছাডা়টাই এখন অনেকের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। বিজেপি সেই লোকেদের উপর নির্ভর করে যাঁরা রক্ত দিয়ে, ঘাম ঝরিয়ে দলকে দাঁড় করিয়েছে। বিজেপিতে থাকতে হলে ত্যাগ-তপস্যা করতে হবে। যারা শুধু ক্ষমতা ভোগ করতে চান, তারা বিজেপিতে থাকতে পারবেন না, আমরাই রাখব না।’
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন