বাজেট অধিবেশনের শুরুর দিনে রাজ্যপাল-মুখ্যমন্ত্রীর সৌজন্য ধরা পড়েছিল। জল্পনা চলছিল তাহলে কী ধনকড়-নবান্ন টানাপোড়েনের ইতি ঘটতে চলেছে? ৪৮ ঘন্টা কাটতে না কাটতেই সেই জল্পনার অবসান। পুরভোটের ঘোষণা না হলেও নির্বাচনের সময় শান্তি-শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলে এবার রাজ্যকে বিঁধলেন জগদীপ ধনকড়।
মেধা, উত্কর্ষের নিরিখে বাংলার ভূয়সী প্রশংসা করলেও রাজ্যেকে 'হিংসার আখড়া' বলে কটাক্ষ করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। সম্প্রতি পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম, উত্তর ২৪ পরগনা থেকে বিপুল পরিমানে বোমা ও বিস্ফোরক উদ্ধার হয়। সেই প্রসঙ্গ টেনেই রাজ্যপাল বলেন, 'বাংলায় বারুদের ব্যবসা চলছে। এই রকম অবস্থায় হিংসামুক্ত নির্বাচন কীভাবে সম্ভব?'
আরও পড়ুন: ‘সহযোগিতা করুন, উস্কানি দেবেন না’, চিঠিতে মমতার বার্তা ধনকড়কে
চলতি বছরেই কলকাতা সহ রাজ্যের রাজ্যের একাধিক পুরসভায় নির্বাচন হবে। রবিবার এক অনুষ্ঠানে ধনকড় বলেন, 'বাংলায় বহু বিশিষ্ট মানুষ ও একাধিক নোবেলজয়ীর জন্ম হয়েছে। সেই রাজ্য কীভাবে হিংসার আখড়ায় পরিণত হতে পারে। যখনই বিস্ফোরণের ঘটে তখন আমার হৃদয়ে রক্তপাত হয়। বহু মানুষের ক্ষতি হয়। কীভাবে এত সহজে এ রাজ্যে বিস্ফোরক মেলে? এইরকমই যদি চলে তবে রাজ্যের নির্বাচন কীভাবে হিংসামুক্ত হবে? আমাদের এই বিষয়টিতে নজর দেওয়া উচিত।' এর আগেও রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে নবান্নের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন রাজ্যপাল। ফের একবার সেই কথা বললেন।
গত জুলাইতে রাজ্যপাল পদে শপথ নিয়েছেন জগদীপ ধনকড়। তারপর থেকেই শিলিগুড়িতে প্রশাসনিক বৈঠক থেকে পুজো কার্নিভাল, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, এসটি-এসটি বিলে ছাড়পত্র সহ নানা বিষয় নিয়ে মমতা সরকারের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছেন রাজ্যপাল। কখনও সোশাল মিডিয়ায়, আবার কখনও প্রকাশ্যে তৃণমূল সরকারের সমালোচনা করেছেন তিনি। রাজ্যের বেশ কয়েকজন মন্ত্রীও বিঁধেছেন ধনকড়কে। এই অবস্থায় বাজেট অধিবেশনের প্রারম্ভিক বক্তৃতা ঘিরে প্রাথমিকস্তরে বিতর্ক দেখা গেলেও পরে তার অবসান হয়। রাজ্য সরকার অনুমোদিত বক্তব্যই ভাষণে পাঠ করেন রাজ্যপাল। রাজ্যপাল বলেন, 'সরকারের কাজ আটকাব না। সংবিধানের লক্ষণ রেখার মধ্যে থেকেই যা করার করব।'
পুরো ভোটের আগে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রাজ্যের সমালোচনা করলেও অবশ্য ধনকড় জানিয়েছেন, 'পারস্পরিক বিশ্বাস থাকলে রাজ্যের সঙ্গে কাজ করতে কোনও অসুবিধা নেই।'
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন