আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিগ্রহের ঘটনায় রাজ্যের মুখ্যসচিবকে তলব করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বিস্তারিত রিপোর্ট নিয়ে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে সোমবার দুপুর একটায় রাজভবনে তলব করেছেন ধনকড়।
রবিবার তিনি টুইট করে লিখেছেন, "ভাইরাল ভিডিওর জেরে যে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তার প্রেক্ষিতে মুখ্যসচিবকে আগামিকাল দুপুর একটায় সর্বশেষ পরিস্থিতির তথ্য নিয়ে হাজির হতে বলা হয়েছে।" তিনি আরও লিখেছেন, "যে পরিস্থিতিতে আইন লঙ্ঘনকারী দুষ্কৃতীরা আইনের ভয় ছাড়াই চলছে তা আইন মান্যকারীদের জন্য অবশ্যই ভয়ঙ্কর ছবি।" টুইটের সঙ্গে উপাচার্যকে হেনস্তার ভিডিও শেয়ার করেছেন রাজ্যপাল।
আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের ঘরে ঢুকে তাঁকে চড় মারার হুমকি দিয়ে গ্রেফতার তৃণমূলের ছাত্রনেতা গিয়াসউদ্দিন মণ্ডল। যদিও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দাবি, তিনি আগে ছিলেন সংগঠনে। এখন কোনও সদস্য নন। উপাচার্যের ঘরে ঢুকে রীতিমতো মারধর, গালিগালাজ করেছিলেন ওই ছাত্র নেতা। সেই ভিডিও ভাইরাল হতেই রাজ্যের শিক্ষামহলে শোরগোল পড়ে যায়। সর্বত্র নিন্দার ঝড় বয়ে যায়। রবিবার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে টেকনো থানার পুলিশ।
ভাইরাল ভিডিওয় গিয়াসউদ্দিনকে বলতে শোনা যায়, “ওই গালে দুটো চড়িয়ে দেব। আমার চড়ে প্রচুর লাগে। যে কটা তোর ছেলে আছে জিজ্ঞেস করে নিবি।” উপাচার্যকে এই ভাবে হুমকির ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। সবাই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন।
গিয়াসউদ্দিন আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএমসিপি ইউনিটের প্রাক্তন সভাপতি। তিনি দাবি করেছেন, উপাচার্য স্বজনপোষণ এবং দুর্নীতিতে যুক্ত। তিনি নাকি পাঁচ পড়ুয়াকে অনৈতিক ভাবে পিএইচডি পড়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। তাঁরা পরীক্ষা দেওয়ার আগেই নাকি প্রশ্নপত্র পেয়ে যান। এই নিয়ে প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে উপাচার্যের ঘরে ঢোকেন তাঁরা।
আরও পড়ুন আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে চড় মারার হুমকি-গালিগালাজ, গ্রেফতার ছাত্রনেতা গিয়াসউদ্দিন মণ্ডল
আলিয়ার ঘটনা নিয়ে রাজ্যের শিক্ষামহল তো বটেই, রাজনৈতিক মহলেও শোরগোল পড়ে যায়। বিজেপি-বাম-কংগ্রেস একযোগে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসকে নিশানা করে। তৃণমূলের জমানায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উপাচার্যকে এই ভাবে হেনস্তা বরদাস্ত করা যায় না বলে সোচ্চার হন সবাই।
এদিকে, টিএমসিপির রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যের দাবি, ২০১৮ সালেই অনৈতিক কার্যকলাপের জন্য গিয়াসউদ্দিনকে আলিয়া থেকে বহিষ্কার করা হয়। টিএমসিপি ইউনিট থেকেও তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। বর্তমানে তাঁর সঙ্গে টিএমসিপির কোনও যোগ নেই। এই নিয়ে টিএমসিপির সঙ্গে তাঁকে জড়িয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলে তার নিন্দা করেছেন তৃণাঙ্কুর। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনওরকম নৈরাজ্যকে বরদাস্ত করা হবে না বলে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন তিনি।