Advertisment

কলকাতা পুলিশের তত্ত্বাবধানে ভাঙড়ে পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন

পঞ্চায়েতের দখল বা বোর্ড গঠনকে ঘিরে গন্ডগোলের আশঙ্কায় মোতায়েন করা হয় বিশাল বাহিনী। কলকাতা পুলিশের সহকারী কমিশনার (পূর্ব) সৌম্য রায়ের নেতৃত্বে প্রায় ১০০ পুলিশ কর্মীর উপস্থিতিতে শান্তিপূর্ণভাবে বোর্ড গঠন হয়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনে কলকাতা পুলিশের টহলদারি (ফোটো ফিরোজ আহমেদ)

পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনকে ঘিরে রাজ্যের অন্যত্র যে ভাবে লাগামহীন সন্ত্রাসের চিত্র উঠে এসেছে তার একেবারে বিপরীত চিত্র ধরা পড়ল গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত, সন্ত্রস্ত ভাঙড়ে। খোদ কলকাতা পুলিশের কড়া পাহারায় শান্তিপূর্ণভাবে সম্পূর্ণ হল ভাঙড়ের পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন ।

Advertisment

শুক্রবার ভাঙড় ২ নং ব্লকের তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন সম্পূর্ণ হয়। এর মধ্যে নিউটাউন সংলগ্ন ভগবানপুর, ব্যাওতা ২ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের দখল তৃণমূলের কোন শিবিরের হাতে থাকবে, তা নিয়ে বিরোধ দেখা দিয়েছিল। বিরোধীশূন্য ভাঙড়ে পঞ্চায়েতের দখল নিয়ে এই মারকাটারি পরিস্থিতির কারণ নিউটাউন। ওই দুই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা নিউটাউন সংলগ্ন। এবং নিউটাউন এলাকায় একাধিক আবাসন প্রকল্প তৈরি হচ্ছে। চলছে সিন্ডিকেট রাজ। তার উপর জমি মাফিয়াদের অবাধ রাজত্ব। এই এলাকায় পঞ্চায়েতের দখল পাওয়া মানেই কেল্লা ফতে, সে কথা বলাই বাহুল্য ।

আরও পড়ুন, নলবনে উৎখাত, সমবায় সমিতির সদস্যদের আমরণ অনশন চারদিনে

এই দুই পঞ্চায়েতের মধ্যে ব্যাওতা ২ নং গ্রাম পঞ্চায়েত কলকাতা পুলিশের লেদার কমপ্লেক্স থানার আওতাধীন। এই পঞ্চায়েতের দখল বা বোর্ড গঠনকে ঘিরে বড়সড় গন্ডগোলের আশঙ্কায় মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। খোদ কলকাতা পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার (পূর্ব) আইপিএস সৌম্য রায়ের নেতৃত্বে প্রায় ১০০ পুলিশ কর্মীর উপস্থিতিতে শান্তিপূর্ণভাবে বোর্ড গঠন সম্পন্ন হয়। পঞ্চায়েতের ১০০ মিটার দুরত্ব পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। পঞ্চায়েতের তিন দিকে তিনটি রাস্তায় ব্যারিকেড করে পথ চলতি বাইক সহ অন্যান্য গাড়িতে তল্লাশি করা হয়।

প্রধান কে হবেন, এ নিয়ে শাসকদলের মধ্যে কোন্দল গড়ায় ভোটাভুটিতে। সেই ভোটেই রক্তারক্তি হবে, এমন একটা আশঙ্কা ছিলই। তা আটকাতেই ভোট হল কলকাতা পুলিশের কড়া পাহারায়।

publive-image বোর্ড গঠন নিয়ে রক্তারক্তি আটকাতেই কলকাতা পুলিশের সক্রিয়তা (ছবি: ফিরোজ আহমেদ)

সমানে সমানে লড়াই করে তৃণমূলের এক গোষ্ঠী ছিনিয়ে নিল পঞ্চায়েতের দখল। এতো কিছুর মধ্যেও কোন উত্তেজনার ছবি ধরা পড়েনি, হয়নি গন্ডগোল ।যদিও বোর্ড গঠনের পরে এলাকায় বোমাবাজি সহ অশান্তির আশঙ্কায় লেদার কমপ্লেক্স থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক স্বরূপকান্তি পাহাড়ির নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী এলাকায় টহলদারি চালায়।

প্রশাসন সূত্রে খবর, ভাঙড় ২ নং ব্লকের ব্যাওতা ২ নং গ্রাম পঞ্চায়েত এর ১৩ টি আসনের মধ্যে ভাঙড়ের প্রাক্তন বিধায়ক আরাবুল ইসলামের অনুগামী আনোয়ার বিবি সাতটি ভোট পেয়ে প্রধান নির্বাচিত হন। এর পাশাপাশি উপপ্রধান হিসাবে নির্বাচিত হওয়া সুকুমার মন্ডলও এলাকায় আরাবুল অনুগামী বলে পরিচিত। অপরদিকে ভাঙড় ২ নং তৃণমূল কংগ্রেস এর ব্লক সভাপতি অহিদুল ইসলামের অনুগামীরা মাত্র একটি ভোট কম পাওয়ার জন্য প্রধান-উপপ্রধান নির্বাচনে পরাজিত হন।

কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানার আওতাধীন ভাঙড়ের ৩ পঞ্চায়েত এর দখল নিয়ে প্রথম থেকেই প্রকাশ্যে চলে আসে দলীয় কোন্দল। টানটান উত্তেজনায় শুক্রবার একটি পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হলেও এখন দেখার আরো দুটি পঞ্চায়েত, যথাক্রমে বামনঘাটা এবং ব্যাওতা ১ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের দখল নিয়ে কোন রক্তপাত হানাহানির মতন ঘটনা ঘটে কি না। সূত্রের খবর, ওই পঞ্চায়েতের দখল নিয়েও জোরদার লড়াই চলছে আরাবুল এবং বিরোধী গোষ্ঠীর মধ্যে।

আরও পড়ুন: নলবনে উৎখাত, সমবায় সমিতির সদস্যদের আমরণ অনশন চারদিনে

এর পাশাপাশি ভাঙড়ের অপর প্রান্তে জেলা পুলিশের আওতাধীন ভগবানপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন ঘিরে অশান্তির আশঙ্কায় মোতায়েন ছিল বিশাল পুলিশ বাহিনী। খোদ ডিএসপি ক্রাইম সৌম্য সরকারের নেতৃত্বে র‍্যাফ এবং বিশাল অস্ত্রধারী ও লাঠিধারী ফোর্স মজুত ছিল। পঞ্চায়েত দফতরের ২০০ মিটার এলাকা পর্যন্ত জারি করা হয় ১৪৪ ধারা।

তৃণমূল সুত্রে জানা গিয়েছে, প্রধান হিসেবে শপথ নেন রোজিনা বিবি এবং উপপ্রধান হিসেবে শপথ নেন সুব্রত মন্ডল। এদিন বোর্ড গঠনের পর ভগবানপুর অঞ্চলের তৃণমূল নেতৃত্ব ও দলীয় কর্মী সমর্থকরা সবুজ আবীর মেখে প্রধান-উপপ্রধানকে নিয়ে উৎসবে মেতে ওঠেন।

Bhangar panchayat election
Advertisment