scorecardresearch

সব ঠিক চললে পাওয়ার গ্রিড হতে চলেছে ভাঙড়ে

হয়ত কাকতালীয় নয়, আরাবুলের জামিনের শর্ত হল, ভাঙড়, কাশীপুর ও রাজারহাট এলাকায় ঢুকতে পারবেন না আরাবুল। ঠিক যে যে জায়গায় প্রবেশ নিষেধ অলীক চক্রবর্তীর। 

bhangar rally bhangarPP-12-BHANGAR 09-009
জেলা প্রশাসনের সঙ্গে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষরের পর দেড় বছর ধরে চলা আন্দোলন শেষ বলে ঘোষণা করলেন অলীক চক্রবর্তী। (ফাইল ফোটো)

সব ঠিকঠাক এগোলে আর কিছুদিনের মধ্যেই শুরু হয়ে যাবে ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিড তৈরির কাজ। যা ২০১৯-এর ভোটের আগে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করে আসছে রাজনৈতিক মহল। সোমবার দিনটা সেদিক থেকে ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভাঙড়ের সাপেক্ষে। বা বলা ভালো, প্রশাসনের সাপেক্ষে। সে ভাঙড়ের প্রশাসন, এবং রাজ্যের প্রশাসনের নিরিখেও।

তবে সোমবার হঠাৎ কোনও চমৎকার ঘটেনি। এর পিছনে কাজ করেছে অনেকগুলি রাজনৈতিক অঙ্ক। অনেক দিনের পরিকল্পনা। যার প্রতিফলন দেখা যাওয়া শুরু হয়েছিল অলীক চক্রবর্তী গ্রেফতার হওয়ার পরেই। ভুবনেশ্বরে অলীক গ্রেফতার হওয়ার পরে দেখা যায়, তাঁর বিরুদ্ধে ৩৫টি মামলা রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে তৃণমূলকর্মী খুন এবং ইউএপিএ-র মতো মামলাও। ভুবনেশ্বরে চিকিৎসা করাতে গিয়েছিলেন অলীক। দীর্ঘদিনের অসুস্থতা ছিল তাঁর। সে অসুখের চিকিৎসার ব্যবস্থা হয় তাঁর বন্দিদশাতেই। যে সে জায়গায় চিকিৎসা নয়। খোদ তৃণমূলের মন্ত্রী-নেতারা যেখানে চিকিৎসা করান, সেই বেলভিউ হাসপাতালে ভর্তি করে তাঁর দেখভালের বন্দোবস্ত হয়।

আরও পড়ুন: পাওয়ার গ্রিড বিরোধী আন্দোলনের সবাই মুক্ত, জামিন পেলেন ভাঙড়ের শেখ আজিম

এদিকে অলীকের গ্রেফতারির পরেই একে একে ছাড়া পেতে থাকেন ভাঙড় আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত জমি, জীবিকা বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশ রক্ষা কমিটির অন্য নেতারা, যাঁদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ ছিল। দিনের পর দিন জামিন না-পাওয়া অমিতাভ চক্রবর্তী, বিশ্বজিৎ হাজরা, শঙ্কর দাস, চিকিৎসক রাতুল জামিন পেয়ে যান অলীকের গ্রেফতারির দিনই।

গ্রেফতারির ৫০ দিনের মধ্যেই জামিন পেয়ে যান অলীক চক্রবর্তী। শর্ত ছিল, রাজারহাট, ভাঙড় ও কাশীপুর এলাকায় ঢুকতে পারবেন না তিনি। তা অলীক ঢোকেননি। রবিবার, জামিন পাওয়ার চারদিনের মাথায়, এয়ারপোর্ট এলাকায় ভাঙড় আন্দোলনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে একটি বৈঠক করেন। বৈঠকটি জরুরি ছিল, কেননা সোমবার আরেকটি বৈঠক ছিল, প্রশাসনের ডাকে। যে বৈঠকে হাজির ছিলেন অলীক চক্রবর্তী। দু মাস আগেও যে ছবির কথা ভাবতে পারেননি ভাঙড় আন্দোলনের সমর্থকরা, সে ছবিই দেখা গেল সোমবার। প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে সিপিআইএমএল রেড স্টার নেতা অলীক চক্রবর্তী।

alik admin meeting
প্রশাসনিক বৈঠকে উপস্থিত অলীক চক্রবর্তী, পাশে শর্মিষ্ঠা চৌধুরী (ছবি: ফিরোজ আহমেদ)

এই বৈঠক থেকে বেরিয়ে অলীক চক্রবর্তী সাংবাদিকদের সামনে তেমন কিছু বলেননি। তবে অলীকের স্ত্রী, আন্দোলনের নেত্রী শর্মিষ্ঠা চৌধুরী বললেন, প্রশাসন যে গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলছেন, সেটাই তাঁদের জয়। বাস্তবটা হলো, কথা বলার ডাক দীর্ঘদিন আগেই দিয়েছিলেন প্রশাসনিক প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য ছিল, এলাকায় শান্তি ফিরুক, কথা হবে, মত বিনিময় হবে। অলীকের গ্রেফতারির পর থেকে ভাঙড়ে অশান্তি হয়নি। অলীকের জামিনের পর শান্তিকল্যাণ হয়ে গেছে।

অন্যদিকে এই সোমবারই ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিড বিরোধী আন্দোলনের কর্মী হাফিজুল মোল্লার খুনের ঘটনায় জামিন পেয়ে গেলেন আরাবুল ইসলাম। ৭২ দিন পর। শর্তাধীন জামিন পেয়েছেন তিনিও। এবং, হয়ত কাকতালীয় নয়, আরাবুলের জামিনের শর্ত হল, ভাঙড়, কাশীপুর ও রাজারহাট এলাকায় ঢুকতে পারবেন না আরাবুল। ঠিক যে যে জায়গায় প্রবেশ নিষেধ অলীক চক্রবর্তীর। রাজনৈতিক হিসেব এবং দায়িত্বশীল মহলের খবর একই কথা বলছে। ভাঙড়ের পাওয়ার গ্রিড এবার সময়ের অপেক্ষা।

Stay updated with the latest news headlines and all the latest Politics news download Indian Express Bengali App.

Web Title: Bhangar power grid matter of time bengali