গেরুয়া শিবিরের সোমবারের ব্যর্থ লালবাজার অভিযানের পুনরাবৃত্তি ঘটল মঙ্গলবারের বিধানসভা অভিযানেও। কৃষকদের নানা দাবির প্রেক্ষিতে এদিন বিধানসভা অভিযানের ডাক দিয়েছিল বিজেপির ভারতীয় জনতা কিষাণ মোর্চা। সংখ্যার নিরিখেই শুধু নয়, কিষাণ মোর্চার এদিনের আন্দোলনেও কোনরকম ঝাঁঝ ছিল না। যদিও মিছিলের শুরু থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত হেঁটেছেন দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সেখান থেকেই অবশ্য অ্যাবাউট টার্ন নিলেন তিনি। পুলিশের ব্যারিকেডের ধারেকাছে যাওয়ার কোনও প্রশ্ন নেই।
২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে এরাজ্যে বিজেপির আসন জয়ের লক্ষ্য এখন ২৬। অর্থাৎ তাদের হাতে সময় খুবই কম। আপাতত বিজেপি তাদের শাখা সংগঠন মজবুত করতে তৎপর। রাজ্যে নেতৃত্বের ওপর হামলার প্রতিবাদে সোমবার বিজেপি লালবাজার অভিযানের ডাক দিয়েছিল। সেখানে গুটিকয়েক কর্মী-সমর্থক হাজির হয়েছিলেন। মঙ্গলবার বিধানসভা অভিযানে সেই তুলনায় একটু বেশি কর্মী-সমর্থক হাজির হলেও তা বলার মত নয়। এটা বলাই যায়, গেরুয়া শিবিরের বিধানসভা অভিযানও কার্যত ফ্লপই।
এদিন দুপুর পৌনে দুটো নাগাদ দলের রাজ্য দপ্তর থেকে মিছিল শুরু করে বিজেপির কিষাণ মোর্চা। মিছিল শুরু হওয়ার পর তাতে যোগ দেন দিলীপ ঘোষ। ছিলেন কিষাণ মোর্চার রাজ্য সভাপতি রামকৃষ্ণ পাল। সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ থেকে মিছিল ধর্মতলায় রাণী রাসমনি অ্যাভিনিউতে আসে। কিন্তু রাণী রাসমনিতে ঢোকার আগেই আন্দোলনকারিদের সঙ্গ ছাড়েন দিলীপ ঘোষ।
এরপর মিছিল বিধানসভার দিকে এগোতেই রাণী রাসমনি রোডে মিছিলের গতি আটকায় পুলিশ। সেখানে পর পর দুটো ব্যারিকেড করেছিল তারা। হাজির ছিল বিশাল সংখ্যায় পুলিশ বাহিনী। রাজ্য সরকারের ধান কেনায় অনীহা, প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনা, মাটি পরীক্ষাসহ একাধিক বিষয়ে তোপ দাগেন রামকৃষ্ণ পাল।
এরপর বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার জন্য কর্তব্যরত পুলিশ আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলেন কিষাণ মোর্চার রাজ্য সভাপতি। আলোচনা ব্যর্থ হওয়ায় ব্যারিকেড ভাঙতে এগিয়ে আসেন মোর্চার কর্মী-সমর্থকরা। এবার আন্দোলনকারিদের মধ্যে কিঞ্চিৎ অনীহা লক্ষ্য করা যায়। কয়েকজন একটু আধটু ব্যারিকেড ঠেলার চেষ্টা করেন। তারপরই গেরুয়া বাহিনীর কিষান বিপ্লব শেষ হয়ে যায়। পুলিশ গ্রেফতার ঘোষণা করে আন্দোলনকারিদের ছেড়ে দেয়।
এদিনও কিষাণ মোর্চার মিছিলের জন্য কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছিল কলকাতা পুলিশ। মিছিলের সঙ্গে পুলিশ ছিল। ব্যারিকেড দুই স্তরেও বিশাল পুলিশ বাহিনী হাজির ছিল। সোমবারের লালবাজার অভিযানের মত এদিন পুলিশের মোট সংখ্যাকে ছাপিয়ে যেতে পারেনি বিজেপির কিষাণ মোর্চা।