ফের বিতর্কের শিরোনামে বিধাননগরের মেয়র তথা রাজারহাট-নিউটাউনের বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত। সল্টলেকে বিদ্যুৎ ভবনে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখান বিধাননগরের মেয়র। এমনকী নিজের দলের নেতা তথা রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে নাম না করে কটাক্ষ করে বলেন, "শুনেছি, দেখেছি যে বিদ্যুৎমন্ত্রী শ্রমিক আন্দোলন করে নেতা হয়েছেন। ভেবেছিলাম মঞ্চে এসে বলবেন, হ্যাঁ আমি অপারগ। আমি তোমাদের পয়সা দিতে পারিনি। কিন্তু পদের কী মোহ, পদের কী লালসা! ভয় পেয়ে এখানে আসেননি। ‘পাওয়ার মিনিস্ট্রি’র যদি 'পাওয়ার' চলে যায় তাহলে মন্ত্রিত্ব থাকবে কী করে"?
আরও পড়ুন, জয় শ্রীরামকাণ্ড: নদিয়ায় ‘খুন’ বিজেপি কর্মী, পুরুলিয়ায় ‘আক্রান্ত’ সংখ্যালঘু নাবালক
উল্লেখ্য, শুক্রবার রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদ কর্মচারী ইউনিয়নের ডাকে বকেয়া ডিএ মেটানো এবং পে কমিটি তৈরির দাবি নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। তৃণমূল সমর্থিত এই সংগঠনের সভাপতি সব্যসাচী দত্ত স্বয়ং। কর্মী সংগঠনের এই বিক্ষোভ কর্মসূচীকে ঘিরেই বাঁধে ধুন্ধুমার। জানা যাচ্ছে, পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে ভেঙ্গে যায় বিদ্যুৎ দফতরের জানলার কাচ। এরপর মেয়রের সামনেই গণ্ডগোল শুরু হয়ে যায়। এদিন বিক্ষোভে অংশ নিয়ে বিদ্যুৎ পর্ষদের চেয়ারম্যানকে হুঁশিয়ারি দিয়ে সব্যসাচী দত্ত বলেন, "নতুন চেয়ারম্যানকে সময় দিচ্ছি। কর্ণপাত করলে ভাল, কিন্তু ভিক্ষা করে নয়, কীভাবে নিজেদের প্রাপ্য দাবি আদায় করে নিতে হবে তা আমরা জানি"।
আরও পড়ুন, কাটমানি বিপর্যয়, পদ হারালেন হুগলির তৃণমূল সভাপতি
সব্যসাচীর এই মন্তব্যর পর পাল্টা জবাব দেন রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী তথা প্রবীণ তৃণমূল নেতা শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন, "ও তো আমাদের সরকারের একজন বিধায়ক এবং মেয়র। জ্ঞানের অভাবে এই সব কথা বলেছে। ও জানে না যে বিদ্যুৎতের দাম কিন্তু বিদ্যুৎমন্ত্রী ঠিক করে না। আমি মনে করি, যে অনেক মানুষের সামনে হিরোইজম দেখানোটা একপ্রকার, আর রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন যিনি তাঁর ভূমিকা আলাদা হওয়া উচিত"। প্রসঙ্গত, সব্যসাচী দত্তকে ঘিরে তৃণমূলের অন্দরে অস্বস্তি অব্যাহত। মুকুল রায়ের সঙ্গে তাঁর একাধিকবার সাক্ষাৎ এবং বিজেপিতে যোগদানের জল্পনা রাজ্য রাজনীতিতে বহুলচর্চিত বিষয়। যখন একের পর এক ঘাসফুল শিবিরের নেতারা পদ্ম পতাকা হাতে তুলে নিচ্ছেন এই টালমাটাল সময়ে, তখন রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সব্যসাচী দত্তের এহেন মন্তব্য যে শাসক দলে ফের অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠছে তা বলাই বাহুল্য।