বুধবার লোকসভায় কংগ্রেসের উপনেতা গৌরব গগৈ অভিযোগ করেছেন যে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা তাঁর স্ত্রীর সংস্থাকে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে ১০ কোটি টাকা ভর্তুকি পেতে সহায়তা করেছেন। অভিযোগটি জানতে পারা মাত্রই অসমের মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য তা অস্বীকার করেছেন। তবে, সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ প্রকাশিত এক পোস্টে, গোগোই খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রকের ওয়েবসাইট থেকে তোলা একটি ছবি শেয়ার করেছেন। তাতে অভিযোগ করেছেন যে রিনিকি ভূঁইয়া শর্মার সংস্থা প্রাইড ইস্ট এন্টারটেইনমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড ক্রেডিট লিংকযুক্ত ভর্তুকির অংশ হিসেবে ১০ কোটি টাকা পেয়েছে।
এই পোস্টের ভিত্তিতে গগৈ প্রশ্ন তুলেছেন, 'প্রধানমন্ত্রী কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করতে কিষাণ সম্পদ যোজনা চালু করেছিলেন। কিন্তু, অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা তাঁর স্ত্রীর সংস্থাকে ক্রেডিট লিংকড ভর্তুকির অংশ হিসাবে ১০ কোটি টাকা পেতে সাহায্য করার জন্য নিজের প্রভাব ব্যবহার করেছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পগুলো কি বিজেপিকে সমৃদ্ধ করার জন্য?' গৌরব গগৈয়ের অভিযোগ অস্বীকার করে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেন, 'আমি স্পষ্ট করতে চাই যে আমার স্ত্রী বা তিনি যে কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত, তারা কেউই ভারত সরকারের কাছ থেকে কোনও আর্থিক ভর্তুকি পায়নি।'
তখন গগৈ পালটা জানান, 'ওয়েবসাইটটি স্পষ্টভাবে সেই ব্যক্তির নাম এবং তিনি যে কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত, তা দেখাচ্ছে এবং ১০ কোটি টাকা সরকারি অনুদানও অনুমোদিত হয়েছে, সেটাও দেখাচ্ছে।' প্রায় কটাক্ষের সুরে গগৈ অসমের মুখ্যমন্ত্রীকে ওই সরকারি ওয়েবসাইট হ্যাক করা হলে, সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রীর মন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জানাতে পরামর্শ দেন। এরপর, অসমের মুখ্যমন্ত্রী 'সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিয়ে' পুনরায় জানান যে তাঁর 'স্ত্রী এবং তিনি যে কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত, তারা ভারত সরকারের কাছ থেকে কোনও ভর্তুকি নেয়নি বা গ্রহণ করেনি।'
আরও পড়ুন- ‘ইন্ডিয়া’ জোট: বোঝা দায় কোনটা কৌশল আর কোনটা গটআপ?
একটি অসমিয়া ওয়েব পোর্টালের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুসারে, নওগাঁও জেলার কালিয়াবোরের দারিগাজি গ্রামে ৫০ বিঘারও বেশি আয়তনের কৃষিজমিকে একমাসের মধ্যে পুনরায় নথিবদ্ধ করে শিল্পজমি হিসেবে দেখানো হয়েছে। সেই জমি মুখ্যমন্ত্রীর পরিবারের সদস্যরা কেনার পরে, অসম জাতীয় পরিষদের সভাপতি লুরিনজ্যোতি গগৈ গৌহাটি হাইকোর্টের অধীনে বিচারবিভাগীয় তদন্তের জন্য চাপ সৃষ্টি করেছেন। এই ব্যাপারে অসম জাতীয় পরিষদের (এজেপি) নেতা বলেছেন, 'অভিযোগ উঠেছে যে মুখ্যমন্ত্রীর স্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর কিষাণ সম্পদ যোজনা থেকে উপকৃত হয়েছেন। অথচ, ওই প্রকল্প, কৃষকদের সাহায্য করার জন্য তৈরি একটি সরকারি প্রকল্প।' তা থেকে মুখ্যমন্ত্রীর স্ত্রী কীভাবে উপকৃত হলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন লুরিনজ্যোতি গগৈ।