ভোটের দিন ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। প্রচারে ঝাঁপিয়েছে জেডিইউ-বিজেপি-এলজেপি। কিন্তু, কোথায় বিরোধী শিবির? প্রার্থী ঘোষণা তো দূরঅস্ত। এখনও আসন রফাই চূড়ান্ত করে উঠতে পারেনি আরজেডি-কংগ্রেস ও তাদের সহযোগী দলগুলো। প্রচারে সময় কমছে। যা চিন্তা বাড়াচ্ছে বিরোধী দলের নেতাদের। গোদের উপর বিষফোঁড়া হয়ে আবার দেখা দিয়েছে আসাউদ্দিন ওয়েইসির এআইএমআইএম। বিরোধী ভোটে থাবা বসাতে পারে এই দল। সব মিলিয়ে ক্রমশ চওড়া হচ্ছে গেরুয়া শিবিরের হাসি।
বিরোধী দলের নীচু তলার নেতাদের বিশ্বাস, শাসক বিরোধী হওয়া রয়েছে বিহার ভোটে। সেটাকেই পুঁজি করতে হবে। কিন্তু, প্রার্থী ঘোষণা না হওয়ায় আদৌ সেই সুযোগ কাজে লাগানো যাবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সূত্রের খবর, পারস্পরিক আস্থার অভাবেই বিরোধী জোট দানা বাঁধতে পারছে না।
মুঙ্গের অঞ্চলের এক কেন্দ্র থেকে কংগ্রেসের হয়ে ভোটে লড়তে আগ্রহী এক নেতার কথায়, 'মুঙ্গেরে মুসলিম বা যাদব ভোট কম। তবুও আমি এখান থেকেই ভোটে প্রার্থী হতে চাই। এলাকায় এলাকায় গিয়ে দেখছি মুসলিমরা ছাড়াও হিন্দুরাও বিজেপি-জেডিইউ এর প্রতি আস্থা হারিয়েছে। অর্থনৈতিক মন্দা, বন্যা ও পড়ুয়াদের মনে ব্যাপক ক্ষোভকে কাজে লাগাতে হবে। পাঞ্জাব, হরিয়ানার মতো না হলেও কৃষি বিল ঘিরে চাষীদের মনেই সন্দেহ উঁকি মারতে শুরু করেছে। কিন্তু নেতারা এখনও কোন আসন থেকে কে লড়বে তার কোনও ইঙ্গিত দেননি। ফলে সময়কে কাজে লাগাতে পারছি না আমরা। যেটা চিন্তার বিষয়।'
বিরোধী দলগুলোর একে অপরের প্রতি আস্থাহীনতাই মূলত আসন রফায় কাঁটা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। মহাজোটের সদস্য দলগুলো মনে করে জোট বেঁধেই এনডিএ শিবিরকে ধরাশায়ী করা যাবে। কিন্তু, বাম, উপেন্দ্র কুশওহার রাষ্ট্রীয় লোক সমতা পার্টি (আরএসএলপি) ও বিকাশশীল ইনশান পার্টি (ভিআইপি) মনে করে বিহারে কংগ্রেসের জনভিত্তি নেই। অন্যরা আবার মনে করে বামেরা বিলুপ্তপ্রায়- তাই ওদের সঙ্গে নিয়ে চলা অর্থহীন। বড় দুই শরিক আরজেডি ও কংগ্রেসের অনেক নেতার মতে, আরএসএলপি ও ভিআইপি দলের ভোট জোটের ইভিএমে প্রতিফলিত হবে না। ওই দুই দলের প্রার্থী জিতলেও পরে তারা জোট ছাড়তে পারেন। ফলে সমস্যা গভীরে।
এই পরিস্থিতি তড়িঘড়ি আসন রফা করে প্রার্থী ঘোষণার ঝুঁকি নিতে রাজি নন মহাজোট নেতৃত্ব।
এতো গেল বিরোধী জোটের ছবি। কিন্তু, বিহারের সীমানা এলাকায় ক্রমশ পোক্ত হচ্ছে আসাউদ্দিন ওয়েইসির এআইএমআইএম। জনভিত্তি তৈরি হয়েছে এই দলের। কোনও কোনও কেন্দ্রে এনডিএ-এর মূল লড়াই তাদের সঙ্গেই। যা ঘিরে সংশয় বাড়ছে আরজেডি-কংগ্রেস-বাম নেতাদের।
এক আরজেডি নেতার কথায়, 'কিষাণগঞ্জ উপনির্বাচন জেতার পর থেকেই এআইএনআইএম-এর ভিত্তি মজবুত হতে শুরু করেছে। ওরা বলেছে ৫০ আসনে প্রার্থী দেবে। মূলত বিরোধী ভোট কাটবে ওরা। তাই আমাদের অবিলম্বে প্রচারে ঝাঁপানো উচিত।'
তবে, সুযোগ ছাড়তে রাজি নয় কংগ্রেস-আরজেডি। কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, নেতাদের নির্দেশে এলাকায় এলাকায় প্রচার শুরু হল বলে। কে কোথায় দাঁড়াবেন তারই ইঙ্গিত মিলেছে।
তবে, গেরুয়া বাহিনীর সঙ্গে মোকাবিলার পাশাপাশি মহাজোটের শরিক দলগুলোর এখন চ্যালেঞ্জ নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা বৃদ্ধি ও এআইএমআইএম।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন