রামচরিতমানস এক বিভেদমূলক পাঠ্য। একেবারেই মনুস্মৃতি এবং রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের দ্বিতীয় সরসঙ্ঘচালক গোলওয়ালকরের ভাবনার মতই। এমন মন্তব্য করে এখন বিপাকে বিহারের শিক্ষামন্ত্রী চন্দ্রশেখর। তিনি নিজে রাষ্ট্রীয় জনতা দলের সদস্য। সেই দলেরই অনেকে চন্দ্রশেখরের মন্তব্যের সঙ্গে সহমত নন। শিক্ষামন্ত্রীর মন্তব্যে ক্ষুব্ধ বিহার সরকারের শরিক সংযুক্ত জনতা দল বা জেডিইউয়ের নেতৃত্বও। তারপরও আরজেডি কিন্তু দলীয় মন্ত্রীর বক্তব্যের পাশেই দাঁড়াচ্ছে। যার ফলে গোটা বিতর্কটি আরজেডির সুচিন্তিত রাজনৈতিক কৌশল বলেই মনে করছেন অনেকে।
এই পরিস্থিতিতে আরজেডির আচরণে তীব্র আপত্তি প্রকাশ করেছে জেডিইউ। তারা জানিয়েছে, বিভেদ নয়। বরং, রাম-রহিমের সংস্কৃতিতে জেডিইউ বিশ্বাস করে। জেডিইউয়ের এই অবস্থান স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার পর আরজেডি তাদের মন্ত্রীর প্রতি সমর্থনের সুর নরম করেছে। তাই, বলে বিহারের শিক্ষামন্ত্রীর মন্তব্যের বিরুদ্ধে কোনও পালটা মন্তব্যও তেজস্বী যাদবের নেতৃত্বাধীন আরজেডি করেনি। এই গোটা বিতর্ক এমন একটা সময় তৈরি হল, যখন আরজেডি এবং জেডিইউয়ের মধ্যে দূরত্ব ক্রমাগত বাড়ছে।
আরজেডি তাদের সদস্য তথা প্রাক্তন কৃষিমন্ত্রী সুধাকর সিংকে নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। এই অভিযোগে লালুপ্রসাদ যাদব ও তাঁর ছেলে তেজস্বীর প্রতি ক্ষুব্ধ জেডিইউ। কারণ, সুধাকর সিং বারবার মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের বিরুদ্ধে আঙুল তুলেছেন। সুধাকর সিং এর আগে সরকারি নীতি এবং বিহারের খরার মত পরিস্থিতি নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন। সেই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে সুধাকর সিং-কে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার প্রকাশ্যেই ভর্ৎসনা করেছিলেন। এর পর গত অক্টোবরে সিং বিহারের মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
আরও পড়ুন- মকর সংক্রান্তিতে কুমিরের পুজো, শতবর্ষ প্রাচীন রীতি পালনের সাক্ষী ব্যান্ডেল
আরজেডি চায় জেডিইউয়ের সঙ্গে তাদের দ্বিতীয়বার যে জোট হয়েছে, সেই সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকুক। তারা নীতীশ কুমারের কাছে অসন্তুষ্ট হলেও অক্টোবরে সিং-কে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেছিল। তারও আগে সেপ্টেম্বরে আরজেডি বিহার মন্ত্রিসভা থেকে কার্তিকেয় সিংকে পদত্যাগ করার অনুমতি দিয়েছিল। কারণ, কার্তিকেয় সিং আইন দফতরের দায়িত্ব চেয়েছিলেন। কিন্তু, তাঁকে আখ দফতরের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ক্ষুব্ধ কার্তিক কুমার বা কার্তিকেয় সিং তাই পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, এবার শিক্ষামন্ত্রী চন্দ্রশেখরের ক্ষেত্রে আরজেডি বেশ দৃঢ়তা দেখাচ্ছে। যা স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে দল চন্দ্রশেখরকে মন্ত্রিসভা থেকে সরাতে নারাজ।
Read full story in English