এসইউসিআইয়ের নবান্ন অভিযান আটকে ছিল সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে। অন্যদিকে সেখানে থেকে মাত্র এক কিলোমিটারের মধ্যে চাঁদনিচকে ধুন্ধুমার চলছে বিজেপির কর্পোরেশন অভিযানকে কেন্দ্র করে। সেখানে যুব মোর্চার তিন ঘণ্টার সাজ সাজ রব সমাপ্তি হল ২০ মিনিটে। আর এই দুই আন্দোলনের জেরে জেরবার হল শহরের স্বাভাবিক চলন। থমকে গেল শহরের যানবাহন।
দুপুরে প্রথম দফায় বিজেপি সেন্ট্রাল অ্যাভেনিউ ধরে কলকাতা কর্পোরেশন অভিযান শুরু করে। "ডেঙ্গু নিবারনে ব্যর্থ কলকাতা পুরসভা," এর প্রতিবাদে মিছিল শুরু হয় বিজেপির রাজ্য দফতর থেকে। চাঁদনির কাছে পুলিশি ব্যারিকেডে মিছিল আটকে যায়। জলকামান ও একদফা লাঠিচার্জেই মঙ্গলবার দুপুরের বিপ্লব শেষ হয়ে যায় গেরুয়া বাহিনীর। তবে মিছিলে যুব ও মহিলাদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। কিন্তু ব্যারিকেডের সামনে গিয়ে লড়াই করার মতো সাহসী কর্মী ছিলেন হাতে গোনা কয়েকজন। আর তাঁদের অবস্থান থেকে তখন মিছিলকারীদের বিস্তর ফারাক। কয়েকজন টেলি অভিনেত্রীদের মিছিলে হাজির করিয়ে এদিন বাজিমাত করতে চেয়েছে বিজেপির যুব মোর্চা। তবে ওই পর্যন্তই।
এসইউসিআইয়ের সভায় হাজির কর্মী-সমর্থকরা। ছবি- শশী ঘোষ
এদিকে এদিনই এনআরসির প্রতিবাদে হেদুয়া থেকে নবান্ন অভিযানের ডাক দেয় এসইউসিআই। একইসঙ্গে রাজ্যে মদ ও নারী নির্যাতন বন্ধ, বেকারদের কাজের দাবিতে এই অভিযান করে এসইউসি। একসময় আন্দোলন করে কাঁপিয়ে দেওয়া এসইউসি-র এদিনের নবান্ন অভিযান থমকে যায় সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার চত্বরে। সেখানেই মঞ্চ তৈরি করে বক্তব্য রাখেন দলীয় নেতৃত্ব। সেই মঞ্চ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে নেই। তাই বিধানসভায় শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দলীয় প্রতিনিধি দল দাবি পত্র নিয়ে আলোচনা করতে গিয়েছেন।
দুই দলের অভিযানের ঠেলায় সাধারণের প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়েছে। একদিকে শহরের ব্যস্ততম রাস্তা সেন্ট্রাল অ্য়াভেনিউ বন্ধ। অন্যদিকে সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে কলেজস্ট্রিট যাওয়ার রাস্তাও অবরুদ্ধ থেকেছে। তীব্র যানজট শুরু হয় শহরে। কোন রাস্তা ধরলে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে তা নিয়ে চিন্তার শেষ ছিল না পথ চলতি জনতার। মধ্য কলকাতার ট্রাফিক ব্যবস্থা একেবারে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে এদিন। এর প্রভাব পড়ে শহরের অন্যত্রও। মানুষের ভরসা তখন মেট্রো। বাস চলাচল প্রায় স্তব্ধ হয়ে যাওয়ায় দুপুরের মেট্রো একেবারে ভিড়ে ঠাসা ছিল।