তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাল বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। দলের কেন্দ্রীয় কর্মসমিতির সদস্য মুকুল রায়, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়, সাংসদ সুভাষ সরকার, সাংসদ সুকান্ত মজুমদাররা এদিন একযোগে টুইট করেন রাজ্যের দুর্নীতি, সিন্ডিকেট রাজ, রাজনৈতিক হিংসা নিয়ে। এক্ষেত্রে তাঁরা নিশানা করেছেন মমতা সরকারকে। আমফান দুর্নীতি ও কাটমানি নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সরাসরি তোপ দেগেছেন মুকুল রায়। এছাড়া, রীতিমতো রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ‘রিপোর্ট কার্ড’ পেশ করেও তাঁরা তুলোধনা করেছেন মমতা সরকারকে।
আরও পড়ুন- ‘সিপিএম আমলে ১০০ শতাংশ চুরি হত, এখন ৯০ শতাংশ কমেছে’
২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্ততি শুরু হয়েছে। করোনা ও আমফান পরিস্থিতিতে যুযুধান সব পক্ষই অতিমাত্রায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে। ভার্চুয়াল জনসভা ছাড়া সোশাল ডিসটেন্সের কোয়াক্কা না করে অনেক ক্ষেত্রেই প্রকাশ্যে সভা-সমিতি, অবস্থান-বিক্ষোভ, মিছিল সবই চলছে। বঙ্গ বিজেপি নিত্য-নতুন পদ্ধতিতে সুর চড়াচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। এরই মধ্যে শুক্রবার বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে রিপোর্ট কার্ড পেশ করে। মুকুল রায়ও টুইট করে আক্রমণ করেছে মমতা সরকারকে। ওই রিপোর্ট কার্ডে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নারী সুরক্ষা, শিল্প ও উন্নয়নের পাশে ‘কাটা’ চিহ্ন দেওয়া রয়েছে। অর্থাৎ এগুলিতে কোনও নাম্বার জোটেনি। রাজ্য সরকার চরম ব্যর্থ। এদিকে এই রিপোর্ট কার্ডে রাজ্যে সিন্ডিকেট, দুর্নীতি ও রাজনৈতিক হিংসা চলছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আমফানের দুর্নীতি নিয়ে সম্ভবত এই প্রথম তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরাসরি সুর চড়িয়েছেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়।
আরও পড়ুন- প্রশান্ত কিশোরের “দিদিকে বলো” কে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে “বাপ কে বলো”
এদিকে বিজেপি নেতাদের রাজ্যের এই রিপোর্ট কার্ডকে ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল মনে করে, অহেতুক ঈর্ষান্বিত হয়ে বিজেপি এই সব অভিযোগ করছে। বরং রাজ্য সরকার যা কাজ করেছে তাতে বিজেপি নেতাদের গাত্র দাহ হচ্ছে। তাছাড়া দুর্নীতি, সিন্ডিকেট নিয়ে তৃণমূলের যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল তাঁরাই এখন বিজেপিতে পদ আলো করে বসে রয়েছে।
আরও পড়ুন- প্রধান হোক বা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, ত্রাণ দুর্নীতিতে থাকলে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে: মমতা
বিজেপি নিজেদের রাজ্যগুলি সামলাতে পারছে না তাই এসব অভিযোগ করছে বলে মনে করেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্য। দেবাংশু বলেন, "শিক্ষা, স্বাস্থ্যে অভাবনীয় কাজ করছে রাজ্য সরকার। কন্যাশ্রী চালু করেছে, নারী শিক্ষার হার বেড়েছে। বিনামূল্যে চিকিৎসা, ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান। সাধারণের জন্য চিকিৎসা ব্যবস্থা করেছে। তাই বিজেপি নেতাদের গাত্র দাহ হচ্ছে। নারী সুরক্ষায় পিছিয়ে আছে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি। তাই বাংলার দিকে আঙুল তুলছে। দুর্নীতি নিয়ে ওরা কী করে কথা বলছে? আমাদের দলে থাকতে যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করত, এখন তারা গেরুয়া শিবিরে। সারদা-নারদকাণ্ডে অভিযুক্ত শোভন চট্টোপাধ্যায়, মুকুল রায়, শঙ্কুদেব পান্ডাকে নিজেদের দলে নিয়েছে বিজেপি।" দেবাংশুর দাবি, "বিজেপি শাসিত রাজ্য থেকে এরাজ্যে শিল্প প্রতিষ্ঠানুলি চলে এসেছে। এখানকার শিল্পাঞ্চলে বিজেপি শাসিত রাজ্যের লোক এসে কাজ করছে। সিন্ডিকেট নিয়ে যার বিরুদ্ধে সব থেকে বেশি অভিযোগ সেই সব্যসাচী দত্ত এখন বিজেপিতে। ওদের মুখে এসব কথা মানায় না।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন