পাখির চোখ ২৪-এর লোকসভা নির্বাচন। ইতিমধ্যেই আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে বিজেপি। কঠিন লড়াইয়ের জন্য শুরু হয়েছে দলের নেতাদের রদবদল প্রক্রিয়া। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের রাজ্যে সাংগঠনিক শক্তি বাড়ানোর বড় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার তেলঙ্গানা, অন্ধ্র প্রদেশ, পাঞ্জাব এবং ঝাড়খণ্ডে নতুন রাজ্য ইউনিট প্রধান নিয়োগ করেছে দল। লক্ষ্য আসন্ন নির্বাচনের আগে দলকে আরও চাঙ্গা করা।
দলের তরফে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডিকে তেলেঙ্গানার দলীয় প্রধান হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। গুজরাট, হরিয়ানা, কর্ণাটক, কেরালায় রাজ্য ইউনিটের সভাপতি হিসাবে আরও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের নিয়োগের মাধ্যমে দলকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা করছে পদ্মশিবির। রেড্ডি ছাড়াও দলের প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা প্রাক্তন কংগ্রেস নেত্রী ডি পুরন্দেশ্বরীকে অন্ধ্র বিজেপির সভাপতি পদে বসানো হয়েছে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বাবুলাল মারান্ডিকে ঝাড়খণ্ড-এর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা সুনীল জাখর, যিনি গত বছর মে মাসে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন তাঁর কাঁধে দেওয়া হয়েছে পাঞ্জাব বিজেপির দায়িত্ব। পঞ্জাব প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পাশাপাশি, সে রাজ্যের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দফতরের মন্ত্রীও ছিলেন তিনি। তবে, রেড্ডির ওপর যাবতীয় দায়িত্ব চাপিয়ে দিয়ে দল নিশ্চিন্ত হয়ে বসে থাকার নীতি নেয়নি। দলটি তেলেঙ্গানায় বিজেপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারপার্সন করা হয়েছে এটেলা রাজেন্দরকে। এতে তেলেঙ্গানায় যেমন দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামাল দেওয়া সম্ভব হবে। তেমনই দায়িত্ব ভাগ হওয়ায় রাজেন্দর ও রেড্ডির কাছে কাছের সঠিক হিসেবে চাওয়া সম্ভব হবে বলেই বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ধারণা।
বিজেপি সূত্রের দাবি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের রাজ্যে নিয়োগের এক ও একমাত্র লক্ষ্য হল গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যগুলির নির্বাচন এবং লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতিতে দলের সংগঠনকে ঢেলে সাজানো পাশাপাশি দলের মধ্যে সমন্বয় বাড়ানো। দলের নেতাদের মতে, বর্তমান গুজরাট বিজেপি প্রধান সি আর পাতিলের মতো রাজ্য নেতাদের এবার দিল্লির দায়িত্ব আনা হতে পারে। দলের এক সিনিয়র নেতার কথায়, "নির্বাচনে সরকারের ভূমিকা সীমিত তবে সংগঠনকে পুরোপুরি সক্রিয় হতে হবে,"।
তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিজেপি একসময় দলবদলুদের দলে নেওয়াতেও আপত্তি জানিয়েছিল এখন দল তারঅবস্থান পরিবর্তন করেছে বলে মনে হচ্ছে। জাখর এবং রাজেন্দর যথাক্রমে কংগ্রেস এবং ভারত রাষ্ট্র সমিতি (বিআরএস) ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেন। যখন পুরন্দেশ্বরী কংগ্রেসে ছিলেন এবং ইউপিএ সরকারে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলেন। তিনি ২০১৪ সালে বিজেপিতে চলে আসেন। রাজেন্দর তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী এবং বিআরএস নেতা কে চন্দ্রশেখর রাও-এর ডান হাত বলেও পরিচিত ছিলেন। অন্যদিকে বাবুলাল মারান্ডি ঝাড়খণ্ড বিকাশ মোর্চা) এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন।
এমনিতে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব আশাবাদী, ২০২৪ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হয়ে তাঁরাই ক্ষমতায় ফিরবেন। কারণ, বিরোধীদের হাল বেহাল। কংগ্রেস কিছুটা গুছিয়ে উঠতে পারলেও ইউপিএর অন্যান্য শরিকদের অবস্থা খুবই খারাপ। কিন্তু, তাই বলে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকতে নারাজ নাড্ডাবাহিনী। তাঁরা চান, বিভিন্ন রাজ্যে গেরুয়া শিবিরের সংগঠনকে লোকসভা নির্বাচনের আগেই চূড়ান্ত শক্তিশালী করে তুলতে।