/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2018/07/bjp1.jpg)
ভিন রাজ্য়ে প্রশিক্ষণ নিতে যাচ্ছেন বাংলার বিজেপি নেতা-কর্মীরা।
বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহর রাজ্য় সফরের পর ১৬ জুলাই মেদিনীপুরে সভা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু এতেই শেষ নয়। হঠাৎ করে এই রাজ্য়ে বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং নেতাদের যাতায়াত বেড়ে গিয়েছে। এই আনাগোনা শুধুই কী প্রধানমন্ত্রীর সভার প্রচারের জন্য়, নাকি বাংলার গুরুত্ব কতটা, তা বোঝাতে চাইছে বিজেপি? প্রশ্ন উঠছে, ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে রাজ্য়ে বিজেপির সংগঠন বৃদ্ধিতে এই টোটকা কতটা কাজ দেবে? ইতিমধ্যেই দলের একাংশের দাবি, বুথ ভিত্তিক যোগাযোগ না বাড়ালে কোনও লাভ হবে না।
২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে রাজ্য়ে ২৩টি আসন জয়ের লক্ষ্য়মাত্রা বেঁধে দিয়েছেন শাহ। কিন্তু বিজেপি রাজ্য় নেতৃত্ব বেশ ভাল করেই জানেন, বাংলায় এখন যা রাজনৈতিক পরিস্থিতি, সেক্ষেত্রে ওই ভাবনা যথার্থই সোনার পাথরবাটি। বিরাট কোনও অঘটন না ঘটলে অত আসন পাওয়ার বিন্দুমাত্র সম্ভাবনা নেই। অভিজ্ঞ মহলের মতে, অন্য় রাজ্য়ে লোকসভায় দলের আসন কমে যাওয়ার আশঙ্কা থেকেই বাংলাকে নিশানা করেছে বিজেপি। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মনে করছেন, এখানে দলকে অক্সিজেন দিতে বড় নেতাদের প্রয়োজন। তাহলেই রাজ্য় নেতৃত্ব সক্রিয় হয়ে উঠবেন।
আরও পড়ুন: হেনস্থার অভিযোগে ব্লকড ‘প্রধানমন্ত্রীর দফতরের কাজের সাথী’র টুইটার অ্যাকাউন্ট
ঠিক এক সপ্তাহ বাদে মেদিনীপুরে সভা করবেন প্রধানমন্ত্রী। এই সভার লক্ষ্য় বিশেষভাবে রাজ্য়ের কৃষক শ্রেণী। সোমবার শহরে ছিলেন রেলমন্ত্রী পীযুষ গোয়েল, আগের দিন এসেছিলেন আর এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, সুরেশ প্রভু। এসেছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শাহনওয়াজ হোসেন। বিজেপির রাজ্য় দফতরে গিয়েছিলেন প্রভু ও শাহনওয়াজ। দলের নেতাদের সঙ্গে এক সভায় হাজির হয়েছেন গোয়েল।
বিজেপির রাজ্য় সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর সভা বা লোকসভা ভোটকে লক্ষ্য় করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বা নেতারা আসছেন, তেমন কিন্তু নয়। এখন তাঁরা এখানে আসতেই থাকবেন। মূল উদ্দেশ্য়, এখানকার বাকি কাজ দেখা ও দলের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা। এটা এখন ধারাবাহিক ভাবে চলতে থাকবে। প্রধানমন্ত্রী চলে যাওয়ার পর আবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও নেতারা আসবেন।" অবশ্য় দলের একাংশ বলছেন, মাঝে মাঝে মোদি-দিদি আঁতাত নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় রাজ্য় বিজেপি নেতৃত্বকে। সারদা-নারদা তদন্তে বার বার ওই কথা উঠে এসেছে। সেই ধারনাও ভাঙতে চাইছে কেন্দ্রীয় বিজেপি। যার কারণেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের এই আসা-যাওয়া।
আরও পড়ুন: তোলাবাজি আটকাতে আশুতোষে মমতা, জয়পুরিয়ায় পার্থ
রাজ্য় পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি দ্বিতীয় স্থানে দৌড় শেষ করলেও তার ব্য়বধান যে অনেকটাই তা ভাল করেই জানেন বিজেপির কেন্দ্রীয় ও রাজ্য় নেতৃত্ব। কিন্তু তা সত্ত্বেও এ রাজ্য়ে লোকসভা ভোটে আসন বাড়ানোই এখন বিজেপির প্রধান লক্ষ্য়। বিশেষ করে জঙ্গলমহলকে কোনওমতেই হাতছাড়া করতে নারাজ বিজেপি। রাজনৈতিক মহলের মতে, এই রাজ্য়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের প্রচার করে দল দেখাতে চাইছে রাজ্য়ের উন্নয়নে কতটা তৎপর বিজেপি। কর্মসংস্থানেও তাঁদের নজর রয়েছে বলে জানান দিতে চাইছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা।
কিন্তু দলের একাংশের মত, রাজ্য়ের বিরুদ্ধে জোরালো আন্দোলন না করলে কোনও লাভ হবে না। শহরের কলেজগুলিতে সম্প্রতি ভর্তি নিয়ে তোলাবাজির অভিযোগে সাধারন মানুষ উত্তাল হলেও বিজেপির ছাত্র-যুবরা অনেকটা নিস্তেজ। বিজেপি জোরদার আন্দোলন করলে সাধারনের সমর্থন বাড়ত। মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের বিরুদ্ধে বিধানসভায় লড়া বিজেপি নেতা চন্দ্র বসু বলেন, "বুথ ভিত্তিক কমিটি গঠন হলেও বুথ স্তরে সেভাবে জনসম্পর্ক গড়ে তোলা যায়নি। জাতীয় দল হিসাবে যেভাবে কাজ করা উচিত ছিল এখানে তা হয়নি।"