চার কেন্দ্রের উপনির্বাচনে বিপুল সাফল্য রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের। সবুজ ঝড়ে কার্যত ধুয়েমুছে সাফ গেরুয়া। গোসাবা, দিনহাটা, খড়দহে জামানত জব্দ বিজেপি প্রার্থীদের। শান্তিপুরেও তৃণমূলের কাছে প্রায় ৬৫ হাজার ভোটে হার বিজেপির। সব মিলিয়ে একুশের বিধাসভা ভোটের মাত্র ৬ মাস পরেই হাওয়া বদল। 'মানুষ রায়ই দিতে পারেনি। তাই জমানাত বাজেয়াপ্ত নিয়ে ভেবে লাভ নেই।' সাফাই বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষের।
চার কেন্দ্রের উপনির্বাচনে বিরোধীদের হোয়াইটওয়াশ করল তৃণমূল। গোসাবা, দিনহাটা, খড়দহ, শান্তিপুরে জয়জয়কার জোড়াফুলের প্রার্থীদের। দিনহাটায় রেকর্ড মার্জিনে জয়ী উদয়ন গুহ। ১ লক্ষ ৮৯ হাজার ৫৭৫ ভোট পেয়েছেন উদয়ন গুহ। বিজেপি প্রার্থীকে ১ লক্ষ ৬৪ হাজার ৮৯ ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছেন উদয়ন। দিনহাটায় মাত্র ২৫ হাজার ৪৮৬টি ভোট পেয়েছেন বিজেপি প্রার্থী। অর্থাৎ মোট ভোটের ৮৬ শতাংশই গিয়েছে উদয়ন গুহের ঝুলিতে। দিনহাটা কেন্দ্রে জামানত জব্দ হয়েছে বিজেপির। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে এই দিনহাটা কেন্দ্র থেকেই বিজেপি প্রার্থী তথা বর্তমানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের কাছে মাত্র ৫৭ ভোটের ব্যবধানে হেরে গিয়েছিলেন উদয়ন গুহ।
জোড়াফুলের জয়জয়কার গোসাবাতেও। দক্ষিণ ২৪ পরগনার এই কেন্দ্রেও বিপুল জয় তৃণমূলের। এই কেন্দ্র থেকে রেকর্ড মার্জিনে জয়ী তৃণমূল প্রার্থী সুব্রত মণ্ডল। গোসাবায় বিজেপিকে ১ লক্ষ ৪৩ হাজার ৫১ ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছে তৃণমূল। জোড়াফুল প্রার্থী সুব্রত মণ্ডলের প্রাপ্ত ভোট ১ লক্ষ ৬১ হাজার ৪৭৪। অন্যদিকে, গোসাবায় বিজেপি প্রার্থীর ঝুলিতে গিয়েছে মাত্র ১৮ হাজার ৪২৩টি ভোট। গোসাবাতেও জামানত জব্দ গেরুয়ার।
সবুজ ঝড় খড়দহেও। উপনির্বাচনে খড়দহে তৃণমূলের হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছিলেন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। খড়দহ নিরাশ করেনি তাঁকেও। বিপুল সাফল্য ঝুলিতে পুড়েছেন পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদ শোভনদেব। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ১ লক্ষ ১৪ হাজার ৮৬। অন্যদিকে খড়দহ কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী জয় সাহার ঝুলিতে গিয়েছে মাত্র ২০ হাজার ২৫৪টি ভোট। খড়দহ উপনির্বাচনে বিজেপিকে ৯৩ হাজার ৮৩২ ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছে তৃণমূল। এই কেন্দ্রেও জামানত জব্দের মুখে পড়তে হয়েছে পদ্ম-শিবিরকে।
আরও পড়ুন- ‘এখন ভাঁড়ামো করলে হবে?’, ভরাডুবির পর দিলীপকে চাঁচাছোলা আক্রমণ তথাগতর
তবে গেরুয়া শিবিরের খানিকটা মুখরক্ষা শান্তিপুরে। উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী ব্রজকিশোর গোস্বামী এই কেন্দ্রে বিজেপির নীলাঞ্জন বিশ্বাসকে ৬৪ হাজার ৬৭৫ ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছেন। শান্তিপুরে বিজেপি প্রার্থী পেয়েছেন ৪৭ হাজার ৪১২ ভোট। অন্যদিকে তৃণমূল প্রার্থী ব্রজকিশোর ঘোষ পেয়েছেন ১ লক্ষ ১২ হাজার ৮৭টি ভোট।
তবে দলের এই ভরাডুবিতেও মনোবল ভাঙতে নারাজ দিলীপ ঘোষ। উপনির্বাচনকে কার্যত 'প্রহসন'-এর আখ্যা দিয়ে জামানত জব্দের 'সাফাই' বিজেপি নেতার। তাঁর কথায়, 'সন্ত্রাসের আবহে ভোট হয়েছে। ভয়ে মানুষ ভোট দিতে পারেননি। ভোটই না হলে তথ্যে কী লাভ? বোঝাই যাচ্ছে শোভনদেববাবুর থেকে দিনহাটা ও গোসাবার প্রার্থীরা আরও বেশি প্রভাবশালী। সুতরাং ভোটই হয়নি। মানুষ রায় দিতে পারেননি। তাই জমানাত বাজেয়াপ্ত নিয়ে ভেবে লাভ নেই।'
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন