লোকসভা ভোটের পর দূর্গাপুজোকে ঘিরে বিজেপি তৃণমূলের বাগযুদ্ধে সরগরম বঙ্গ রাজনীতি। বাংলায় একটু একটু করে ক্ষমতা বাড়িয়ে বাঙালির সবচেয়ে বড়ো উৎসবে প্রত্যক্ষ ভাবে অংশ গ্রহণের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে গেরুয়া শিবির। এবার বিজেপির এই তাগিদকে 'জবরদখল' হিসাবে উল্লেখ করলেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী এবং একডালিয়া এভারগ্রিন পুজো কমিটির প্রধান সুব্রত মুখোপাধ্যায়। রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রীর কথায়, পুরসভা এবং গ্রাম পঞ্চায়েত দখলের মতোই 'গায়ের জোরে এবার পুজো দখল' করতে চাইছে বিজেপি। অন্যদিকে, বিজেপির তরফে বলা হয়েছে তাঁদের পুজো কমিটিতে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে বারংবার বাধা দিচ্ছে তৃণমূলের নেতারাই।
আরও পড়ুন- পায়ে পায়ে বিশ্বজয়ের লড়াইয়ে মগ্ন আসানসোলের অদ্রিজা
দক্ষিণ কলকাতার পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম 'একডালিয়া এভারগ্রিন'। দীর্ঘকাল ধরে সেই পুজোর উদ্যোক্তা সুব্রত মুখোপাধ্যায়। একডালিয়ার খুঁটিপুজো অনুষ্ঠানে সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, "ওরা যেভাবে গায়ের জোরে রাজ্যের গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পুরসভা দখল করছে, সেভাবেই দুর্গাপুজোকেও দখল করতে চাইছে। দুটির কোনওটিতেই ওরা সাফল্য পাবে না। দুর্গাপুজোকে কখনও কোনও অশুভ শক্তি গ্রাস করতে পারবে না"। অন্যদিকে বাগযুদ্ধ জারি রেখে পঞ্চায়েত মন্ত্রীকে নিশানা করেছেন রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু। তিনি বলেন, "উনি (সুব্রত মুখোপাধ্যায়) পুরোনো যুগের ধ্যান ধারণা নিয়ে থাকা এক বৃদ্ধ। উনি এবার অবসর নিয়ে নতুন প্রজন্মের হাতে দুর্গাপুজোর দায়িত্ব দিন। বাংলার সাধারণ মানুষ চাইছে বিজেপি দুর্গাপুজোয় অংশ নিক। বিজেপির বেশিরভাগ নেতাই পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে রয়েছেন। কিন্তু তৃণমূল পুলিশের সাহায্য নিয়ে আমাদের বারবার বাধা দিচ্ছে"।
আরও পড়ুন- ‘কর দেয় না রাজ্য-কেন্দ্র’, ঢোল বাজিয়ে সরকারি ঘুম ভাঙাবেন অশোক ভট্টাচার্য
উল্লেখ্য, আগামী বিধানসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়েই বাংলায় ভিত্তি শক্ত করতে উঠেপড়ে লেগেছে তৃণমূল-বিজেপি। শোনা যাচ্ছে, শীর্ষনেতৃত্বের নির্দেশেই বাংলায় জনসংযোগ বাড়াতে দুর্গাপুজোকে হাতিয়ার করছে বিজেপি। এমনকী পুজো উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অমিত শাহকে দিয়ে পুজো উদ্বোধনের ভাবনাও রয়েছে বিজেপির, এমনটাই খবর। রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানান, "আমরা পুজো উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি, যাতে অমিত শাহের মতো কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের এনে পুজো উদ্বোধন করা যায়"।
আরও পড়ুন- অলৌকিক ঘটনা! কুকুরের তাড়ায় ছাদ থেকে ঝাঁপ, প্রাণরক্ষা ন’বছরের শিশুর
প্রসঙ্গত, আগামী ৪ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে দুর্গা পুজো। ইতিমধ্যেই কলকাতা-সহ গোটা রাজ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে পুজোর প্রস্তুতি। বাংলায় ৩৪ বছরের বাম জমানায় নেতা মন্ত্রীরা চিরকালই পুজো উদ্যোক্তাদের থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলেছেন। তবে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব কোনও দিনই সেই নীতি অনুসরণ করেননি। এমনকী, ২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার আগে থেকেই তৃণমূলের নেতারা বাংলার নামীদামি পুজো কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকেছেন। সেই ট্র্যাডিশন এখনও চলছে। কলকাতার সবচেয়ে জনপ্রিয় পুজোগুলির অধিকাংশেরই সভাপতির পদে এখন রয়েছেন ঘাস ফুল নেতা-নেত্রীরাই। এবার সেই ট্র্যাডিশনে ভাগ বসাতেই জোরদার প্রস্তুতি নিয়ে পুজো ময়দানে নামতে চাইছে বিজেপি।
Read the full story in English