আনেগুন্ডি গ্রামে (হাম্পি থেকে নদীর ওপারে) ১৪ শতকের বিজয়নগর সাম্রাজ্যের প্রাচীন ধ্বংসাবশেষের অংশ, তালাভারঘাটের দক্ষিণ দরজার একটি ছোট হনুমান মন্দিরের প্রবেশপথে, একজন মৎস্যজীবী তাঁর মোবাইল ফোন নিয়ে বসে ছিলেন। নাম হনুমেশ, বয়স ৩০ বছর। যাঁর নাম ঈশ্বর হনুমানের নামে রাখা হয়েছে। মোবাইল ফোনে তিনি কন্নড় সংবাদের ভিডিও দেখছিলেন। ইন্টারনেটের যুগ তাঁকে তার ফোনে খবরের গল্পের গভীরে তখন টেনে নিয়ে গিয়েছে।
কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারাভিযান সোমবারই শেষ হয়েছে। কংগ্রেস তার ইশতেহারে বজরং দলের মতো সংগঠনের বিরুদ্ধে কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বিজেপি আবার একে ভগবান হনুমান এবং তাঁর ভক্তদের অপমান বলে অভিযোগ করেছে। সেই প্রসঙ্গ তুলতেই হনুমেশ তাঁর ফোন থেকে চোখ সরিয়ে বলেন, 'ভগবান হনুমানের সঙ্গে এখানে কোনও বড় সমস্যা নেই। তিনি অত্যন্ত শ্রদ্ধেয়। নির্বাচনে অন্যান্য ইস্যুতে লড়াই হচ্ছে। কংগ্রেস প্রার্থী ইকবাল আনসারির এখানে জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা আছে। কারণ, দল দরিদ্রদের উন্নয়নের জন্য অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।'
এক কিলোমিটার দূরে আনাগুন্দি গ্রামের প্রাণকেন্দ্রে বসেছিলেন স্থানীয় ব্যবসায়ী রঘু কুমার। তিনি অবশ্য গোটা ঘটনায় ভিন্নমত পোষণ করেছেন। তাঁর মতে, 'হনুমান ইস্যু না-ওঠা পর্যন্ত বিজেপি এখানে পিছিয়েই ছিল। কিন্তু, হনুমান ইস্যু উঠে আসার সঙ্গে সঙ্গেই বিজেপি রীতিমতো উত্সাহিত হয়ে উঠেছে। কংগ্রেস, বিজেপি এবং বিজেপির বিদ্রোহী জনার্দন রেড্ডির মধ্যে এখন ত্রিমুখী লড়াই চলছে।'
আরও পড়ুন- দেশের সব ডিজেল গাড়ি তুলে দেওয়ার প্ল্যান সরকারের, আদৌ এটা সম্ভব?
এই গ্রাম থেকে মাত্র ৪০ কিলোমিটার দূরে বিজয়নগর জেলার হোসপেটে এক সমাবেশে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২ মে প্রথম অভিযোগ করেছিলেন যে কট্টর ডানপন্থী বজরং দলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া নিয়ে কংগ্রেসের প্রতিশ্রুতি হল আসলে ভগবান হনুমানের অপমান। মোদী বলেছিলেন, 'প্রথমে তারা (কংগ্রেস) ভগবান রামকে তালাবদ্ধ করেছিল (রামজন্মভূমি বিতর্ককে ইঙ্গিত করে) এবং এখন তারা যারা জয় বজরংবলী স্লোগান দেয়, তাদের তালাবদ্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।'