বিধানসভা ভোটের আগে উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ সরকারের অস্বস্তি বাড়ালেন মেঘালয়ের রাজ্যপাল তথা সত্যপাল মালিক। কৃষকদের দাবি পূরণ না করলে আগামী বছরের বিধানসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশে বিজেপির পক্ষে ক্ষমতা ধরে রাখা সম্ভব নয় বলে মনে করেন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ তথা রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক। বিক্ষোভকারী কৃষকদের দাবি পূরণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বানও জানান তিনি। রাজস্থানের ঝুনঝুন জেলায় একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে মেঘালয়ের রাজ্যপাল বলেন, “যদি কৃষকদের দাবি পূরণ না হয়, তাহলে এই সরকার ক্ষমতায় ফিরবে না”।
এর আগেও কৃষি আইন নিয়ে দিল্লির সীমানায় কৃষকদের প্রবল বিক্ষোভের সমর্থনে মুখ খুলেছিলেন সত্যপাল মালিক। কৃষকদের দাবি সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করতে মোদী সরকারের কাছে আবেদন করেছিলেন তিনি। এবার উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর খেরির ঘটনা প্রসঙ্গেও কৃষক বিক্ষোভের পাশে দাঁড়ালেন সত্যপাল। এব্যাপারে উত্তরপ্রদেশের বিজেপি নেতৃত্বকেও বিঁধেছেন তিনি। সত্যপাল মালিক বলেন, “আগামী বছরেই উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ওই রাজ্যের একাধিক গ্রামে বিজেপি নেতারা ঢুকতে পারছেন না। আমি নিজে মীরাটের বাসিন্দা। আমার এলাকাতেও বিজেপি নেতারা কোনও গ্রামে ঢোকার সাহস করছেন না। মুফফরনগর, ভাগপতেও একই অবস্থা।”
মোদী সরকারের আমলেই তিনি রাজ্যপাল হয়েছেন। রাজ্যপাল হয়েও তাঁর এই কেন্দ্র বিরোধী অবস্থান কেন? কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য তিনি তাঁর পদ ছাড়বেন? সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে সত্যপাল মালিক জানান, এই মুহূর্তে পদত্যাগের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে তিনি মনে করেন না। কৃষকদের পক্ষেই রয়েছেন তিনি। তবে ভবিষ্যতে কৃষক স্বার্থে দাঁড়াতে গিয়ে যদি তাঁকে পদত্যাগ করতেই হয়, তবে তাও তিনি করবেন বলে স্পষ্ট করে জানিয়েছেন।
পশ্চিম উত্তর প্রদেশের একজন জাঠ নেতা সত্যপাল মালিক। কৃষকদের বিক্ষোভে শুরু থেকেই পাশে ছিলেন তিনি। কৃষকদের বিক্ষোভ প্রসঙ্গে প্রকাশ্যে প্রধানমন্ত্রীকে কিছু না বললেও ব্যক্তিগতভাবে তিনি নিজের মতামত মোদীকে জানিয়েছিলেন। এপ্রসঙ্গে তিনি বলেন, “কৃষকদের জন্য প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সবার সঙ্গে ঝগড়া করেছি। আমি সবাইকে বলেছি যে আপনারা ভুল করছেন। এটি করবেন না।” নয়া কৃষি আইনের ক্ষেত্রে সরকার যদি বৈধভাবে এমএসপি-র গ্যারান্টি দেয়, তবেই কৃষি আইন সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে করেন তিনি।
আরও পড়ুন- লখিমপুর-কাণ্ডের প্রতিবাদ, কৃষকদের অবরোধে স্তব্ধ পঞ্জাবের রেল পরিষেবা
কৃষি আইনের প্রতিবাদ থেকে শুরু করে লখিমপুর খেরির ঘটনায় সোচ্চার কৃষকদের একটি বড় অংশ শিখ সম্প্রদায়ের। এই বিক্ষোভের পিছনে শিখ সম্প্রদায়ের জাত্যাভিমানের প্রশ্ন জড়িয়ে রয়েছে বলে মনে করেন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ তথা রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক। তিনি বলেন, “বিশেষ করে শিখদের ব্যাপারে এঁরা জানেন না। নিরস্ত্র শিখ গুরুরা গোটা মোঘল সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। ওঁদের বিব্রত করা উচিত নয়।”
Read full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন