চলতি মাসের শেষেই ফের রাজ্যে ভোট। ৩০ অক্টোবর উপনির্বাচন রয়েছে দিনহাটা, শান্তিপুর, খড়দহ ও গোসাবায়। এই চার কেন্দ্রের জন্য তারকা প্রচারকের তালিকা প্রকাশ করল বিজেপি। আগের ভোটে বিতর্ক সত্ত্বেও ২০ জন তারকা প্রচারকের মধ্যে অন্যতম লকেট চট্টোপাধ্যায়। এছাড়াও বাংলার ভোটে প্রচারে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে প্রতিবেশী রাজ্য অসম ও আরেক বাঙালি রাজ্য ত্রিপুরার দলের শীর্ষ নেতা-নেত্রীদেরও। চার কেন্দ্রে উপনির্বাচনে পদ্ম শিবির মোট সাত জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে প্রচারে নামাচ্ছে।
ভবানীপুরের হাইপ্রোফাইল উপনির্বাচনকে পাখির চোখ করেছিল গেরুয়া শিবির। তারকা প্রচারকের তালিকা নাম ছিল হুগলির সাংসদ লকেটের। কিন্তু তিনি একদিনও ওই কেন্দ্রে প্রচারে যাননি। দিলীপ ঘোষ, সুকান্ত মজুমদার থেকে শুভেন্দু অধিকারী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদিপ সিং পুরিরা দলীয় প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়ালের হয়ে প্রচার চালালেও যাননি লকেট চট্টোপাধ্যায়। কেন নেই তিনি? যা নিয়ে বিতর্কও তৈরি হয়। লকেটের দলবদলের সম্ভাবনাও উস্কে ওঠে। রাজনৈতিক মহলে শুরু হয় চর্চা।
এরই মাঝে বিতর্কে ইন্ধন যোগায় রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের টুইট। তিনি লিখেছিলেন, 'ভবানীপুরে প্রচারে না আসায় তারকা প্রচারক লকেট চট্টোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা। বিজেপির অনেক অনুরোধ সত্ত্বেও আপনি প্রচার করেননি। আপনি যেখানেই থাকুন বন্ধু হিসাবে আপনার সাফল্য কামনা করি।' পাল্টা টুইটে কুণালকে জবাব দেন লকেট, লেখেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভবানীপুর থেকে যেন হেরে না যান, সেদিকে আপনার মনোযোগ দেওয়া উচিত।'
আরও পড়ুন- বিজেপিতে ফের স্বপদে কৈলাস, বিড়ম্বনায় দলের একাংশ, তুঙ্গে ‘কপি-পেস্ট’ বিভ্রান্তি
বিজেপি নেত্রীর টুইটের জবাবে পরক্ষণেই ফের টুইট করেন তৃণমল নেতা। লেখেন, 'হা হা! চিন্তা করবেন না। মামাতাদি বড় ব্যবধানে জয়ী হবেন। আপনি এটাও চান। আমি জানি যে আপনাকে দলের হয়ে লিখতে হয়েছে। তবুও আমি আপনাকে ধন্যবাদ জানাই, কারণ এই টুইটেও আপনি বিজেপি প্রার্থীর নাম উল্লেখ করেননি। কোথায় চোখ, কোথায় নিশানা। সাবাশ।' কার্যত প্রচাররে থাকা-না থাকা বিষয়টি নিয়ে টুইট যুদ্ধে জড়ান যুযুধান দুই দলের দুই নেতা-নেত্রী।
আরও পড়ুন- শ্যাম রাখি না কূল! নমঃ নমঃ করে পুজোর আয়োজনে মুখরক্ষার চেষ্টায় বঙ্গ বিজেপি
ভবানীপুরে বিজেপি প্রার্থী হেরেছেন। পদ্ম নেতৃত্ব মনে করছে, দল হারলেও বাবুল সুপ্রিয়র পথ ধরে আপাতত লকেট তৃণমূলে যোগ দেবেন না। কুণাল ঘোষকে লকেটের জবাবি টুইট দলীয় নেতৃত্বের অনুমান দৃঢ় করেছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, এই আঁচ করেই হুগলির সাংসদের গুরুত্ব তুলে ধরতে মরিয়া বিজেপি। তাই বিতর্ক সত্ত্বেও ফের আগামী চার কেন্দ্রের উপনির্বাচনে তারকা প্রচারকের তালিকায় অন্যতম লকেট চট্টোপাধ্যায়।
এদিকে বাংলা ছাড়িয়ে জোড়া-ফুলের নজর এবার বিজেপি শাসিত ত্রিপুরা, অসম। ইতিমধ্যেই ওই দুই রাজ্যে সংগঠন বিস্তারের কাজে মরিয়া তৃণমূল। তুলে ধরা হচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনকালে বাংলার উন্নয়নের খতিয়ান। যাকে নস্যাৎ করতে তৎপর বিজেপি। তাই এ রাজ্যের উপনির্বাচনেও অসম, ত্রিপুরা থেকে নেতা-নেত্রীদের এনে প্রচার করতে চাইছে গেরুয়া শিবির। তারকা প্রচারকের তালিকায় অন্যতম নাম অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা ও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা ত্রিপুরা পশ্চিম লোকসভার থেকে নির্বাচিত সাংসদ প্রতিমা ভৌমিক। এঁরা সেরাজ্যে বিজেপি সরকারের উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ তুলে ধরে মমতা সরকারের বিরোধীতায় ঝাঁপাবেন বলেই মনে করা হচ্ছে।
একনজরে চার কেন্দ্রের উপনির্বাচনে বিজেপির তারকা প্রচারকরা…
- ডঃ সুকান্ত মজুমদার
- দিলীপ ঘোষ
- শুভেন্দপ অধিকারী স্মৃতি ইরানী
- অমিতাভ চক্রবর্তী
- রাহুল সিনহা
- ডাঃ সুভাষ সরকার
- জন বার্লা
- শান্তনু ঠাকুর
- নিশীথ প্রামাণিক
- হিমন্ত বিশ্বশর্মা
- গিরিরাজ সিং
- প্রতিমা ভৌমিক
- দেবশ্রী চৌধুরী
- রূপা গঙ্গোপাধ্যায়
- শমীক ভট্টাচার্য
- অগ্নিমিত্রা পাল
- অর্জুন সিং
- লকেট চট্টোপাধ্যায়
- মাফুজা খাতুন
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন