Advertisment

বীরভূম বিজেপির ঘরে কাজিয়া, পদ ছাড়লেন ৫৭ জন কর্মী

জেলা সভাপতি পদ থেকে দুধকুমার মন্ডলকে সরানোর পর থেকেই দলের অভ্যন্তরীণ বিরোধ প্রকাশ্যে আসে, নানা ঘটনার মধ্যে দিয়ে চলতেই থাকে দু'পক্ষের সংঘাত।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

তারাপীঠ রথযাত্রা আদৌ হবে কিনা তা নিয়ে অনিশ্চয়তা এখনও কাটেনি, তবে এক রাজসূয় যজ্ঞ পালনের আগে যে উদ্যম দলের নেতা কর্মীদের মধ্যে দরকার, তা দেখানো তো দূরের কথা, বরং বিজেপির নেতা কর্মীরা বীরভূমে নিজেরাই নিজেদের বিরোধে নামলেন। শনিবার সিউড়িতে দলের সদর দপ্তরে জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়ের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ জানিয়ে দলীয় পদ থেকে পদত্যাগ করলেন ৫৭ জন নেতৃস্থানীয় কর্মী।

Advertisment

এর আগে বিজেপির জেলা সভাপতির সঙ্গে তৃনমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মন্ডলের গোপন সম্পর্কের অভিযোগ তুলেছিলেন দলের কর্মীরা, অনুব্রতও বলেছিলেন তাঁর সঙ্গে ব্যক্তিগত সুসম্পর্ক রয়েছে বিজেপি সভাপতির।

আরও পড়ুন: অনুপম কীর্তি! নিজের কেন্দ্রে লোকসভার পরবর্তী প্রার্থীর নাম ফাঁস করলেন বোলপুরের তৃণমূল সাংসদ

জেলা সভাপতি পদ থেকে দুধকুমার মন্ডলকে সরানোর পর থেকেই দলের অভ্যন্তরীণ বিরোধ প্রকাশ্যে আসে, নানা ঘটনার মধ্যে দিয়ে চলতেই থাকে দু'পক্ষের সংঘাত। কেন্দ্রে বিজেপি ক্ষমতাসীন হওয়ার পর জেলায় জেলায় বিজেপির নতুন আধুনিক দপ্তর গড়ার জন্য বিশাল অঙ্কের অর্থ বরাদ্দ করা হয়। জেলা নেতৃত্বের একাংশ কম দামে সিউড়িতে জমি কিনে অনেক বেশি দামের হিসেব দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন, এমন অভিযোগ যায় দিল্লী পর্যন্ত। এমন একের পর এক অঘটনে জেরবার রামকৃষ্ণ রায় তাঁর বিরোধী গোষ্ঠীর দাপটে নাকাল হয়ে তাঁদের কয়েকজনের পদ কেড়ে নেওয়ার পরই শনিবার বিক্ষোভ চরমে ওঠে।

দলের কিষান মোর্চার জেলা সভাপতি শান্তনু মন্ডলকেও অপসারিত করা হয়েছে, পাশাপাশি সরানো হয়েছে দলের জেলা সম্পাদক পদ থেকে নলহাটির খনি ব্যবসায়ী অনিল সিংকেও। তার ওপর সরানো হয়েছে নারায়ন মন্ডল সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে। শান্তনুবাবু বলেন, "আমি কিছুই জানি না, হঠাৎ শুনছি আমার পদ কেড়ে নেওয়া হয়েছে।"

তাঁর অনুগামীরা এরপর জেলা নেতাদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। কিন্তু দলের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, সিদ্ধান্তের নড়চড় হবে না। এর ফলে ২৭ জন পদাধিকারী এবং ৩০ জন গ্রাম এলাকার সংগঠক পদত্যাগপত্র লিখে গোলাপ ফুল সহ সেগুলি দলের জেলা সম্পাদক পলাশ দাসের হাতে তুলে দেন, দলের পক্ষ থেকে সেসব পদত্যাগপত্র গ্ৰহণও করা হয়। পদত্যাগীরা বলছেন, তাঁরা সকলেই আরএসএসের মাধ্যমে দলে এসেছেন, ফলে সংঘের পরিচালকরাও যে তাঁদের পাশে থাকবেন এই আশা নিয়ে তাঁরা এখনই দল ছাড়ছেন না।

আরও পড়ুন: খোল করতালে বিপুল টাকা ব্যয় অনুব্রতর, তৃণমূলের প্রচারে কীর্তনীয়ারা

দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের আসার কথা আর ছ'দিন পরেই। আইনি বাধা কাটবে এবং রথযাত্রা শুরু হবে, এ বিষয়ে প্রত্যয়ী দলের নেতারা, কিন্তু যাদের জন্য রথযাত্রা, তাঁরা নিজেরাই নিজেদের বিরোধকে তুঙ্গে তুললেন।

তবে সংঘের শীর্ষ পরিচালকরা হস্তক্ষেপ করায় পদত্যাগী বিজেপি নেতারা জানিয়েছেন, রথ জেলা থেকে বের হওয়ার পর তাঁরা দলের দপ্তরের সামনে অবস্থান অনশন করবেন। পরবর্তীকালে কলকাতায় মুরলীধর লেনে দলের রাজ্য দপ্তরের সামনেও বিক্ষোভ চলবে।

কিন্তু এ কি নিছকই রামকৃষ্ণ রায় বনাম দুধকুমার মন্ডল গোষ্ঠীর বিরোধ? সংঘে হাতেখড়ি নেওয়া বিজেপি নেতারা কি এতটাই পদলোভী হয়ে গেলেন?

দলের ভেতর কথা উঠছে, কোন গোষ্ঠী কত কোটি টাকা "তৃণমূলের কাছ থেকে নিয়ে দল ভাঙ্গতে চাইছেন"। তা নিয়েই অবিশ্বাস এবং সন্দেহ চরমে। অমিত শাহ আসার আগেই তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলই যে বীরভূম বিজেপির মুখ্য বিবাদের বিষয় হয়ে উঠলেন, সেটাই বোধহয় বিস্ময়ের।

Birbhum bjp
Advertisment