মন্ত্রীপুত্রের কৃষকদের গাড়ি চাপাকাণ্ডে সংবাদ শিরোনামে উঠে এসেছিল উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর খেরি। উত্তাল হয়েছিল দেশ। তারপর এবারের উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা ভোটে লখিমপুরবাসীর রায় কোন দিকে যায়- সেদিকে নজর ছিল। ফলাফলের প্রবণতা অনুযায়ী, কৃষক হত্যার ঘটনা এখানে অতীত। পদ্মফুলেই ভারসা রেখেছেন লখিমপুর খেরির বাসিন্দারা।
লখিমপুর খেরি জেলার আটির মধ্যে ৭টি আসনেই এগিয়ে বিজেপি প্রার্থীরা। মাত্র একটি আসনে এগিয়ে রয়েছে সমাজবাদী পার্টি। নিঘাসন কেন্দ্র, যে কেন্দ্রের টিকুনিয়ায় কৃষকদের উপর নৃশংস সেই হামলার ঘটনা ঘটেছিল সেখানে বিজেপির শশাঙ্ক ভার্মা প্রায় ৪০ হাজার ভোটে এগিয়ে রয়েছেন। ওই কেন্দ্রে সপার আর এস কুশওয়াহা ২৪ হাজার ৫২৭ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন। ওই কেন্দ্রের ঠিক পাশের আসন পালিয়াতেও বিজেপি প্রার্থী ৩৫ হাজারেরও বেশি ভোটে এগিয়ে রয়েছেন। দ্বিতীয় স্থানে অখিলেশ সিংয়ের সমাজবাদী পার্টির প্রার্থী।
গত বছর ৩ অক্টোবরে লখিমপুর খেরির টিকুনিয়ায় কৃষকদের জমায়েতের উপর দিয়ে তিনটি গাড়ি প্রবল বেগে চলে যায়। এতেই নিহত হয়েছিলেন চার কৃষক। মৃত্যু হয় এক সাংবাদিকেরও। পরবর্তী হিংসায় আরও চার জনের প্রাণ যায়।অভিযগোর আঙুল ছিল কেন্দ্রীয়মন্ত্রী অজয় মিশ্রের ছেলে আশিসের দিকে। যদিও অজয়ের দাবি, ঘটনার সময় ওই গাড়িতে ছিলেন না আশিস। ওই ঘটনায় আশিস এবং তাঁর সঙ্গী অঙ্কিতের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী কৃষকদের লক্ষ্য করে গুলি চালানোরও অভিযোগ ওঠে। গত ৯ অক্টোবর আশিসকে গ্রেফতার করেছিল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। তার কয়েক দিন পরেই উদ্ধার করা হয় তাঁর বন্দুক। লখিমপুর-কাণ্ডের তদন্তে ঢিলেমির জন্য গত ২০ অক্টোবর উত্তরপ্রদেশ পুলিশকে তুলোধনা করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণা এবং বিচারপতি সূর্য কান্তের বেঞ্চ প্রশ্ন তুলেছিল, সে দিন কয়েক হাজার কৃষকের জমায়েতে ওই ঘটনা ঘটলেও উত্তরপ্রদেশ পুলিশ কেন মাত্র ২৩ জন প্রত্যক্ষদর্শীর সন্ধান পেয়েছে। নভেম্বরে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল আদালতে পেশ করা রিপোর্টে জানায়, লখিমপুরের ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত। কিন্তু, উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা ভোট-পর্বের সূচনায় জামিন পান লখিমপুর খেরিতে কৃষকদের গাড়ির চাকায় পিষে মারার ঘটনায় ধৃত আশিস মিশ্র।
সমীক্ষার ইঙ্গিতই বাস্তবায়িত হতে চলেছে। প্রায় সব বুথ ফেরত সমীক্ষাই ইঙ্গিত দিয়েছিল যে, এবার উত্তরপ্রদেশের ভোটে বিজেপির প্রত্যাবর্তন ঘটবে। তবে আসন ২০১৭-র তুলনায় কমবে। ৪০৩ আসনের বিধানসভায় গণনা অনুযায়ী আপাতত ২৭৩ আসনে এগিয়ে বিজেপি। সমাজবাদী পার্টি এগিয়ে ১২১, বিএসপি ৫, কংগ্রেস ৩ ও অন্যান্যরা ১টি আসনে এগিয়ে রয়েছে।