কোভিড পরিস্থিতিতে গতবছর ধুমধাম করে দুর্গা পুজোর আয়োজন করেছিল বঙ্গ বিজেপি। সল্টলেকের ইজেডসিসিতে বসেছিল চাঁদেরহাট। পরের বছর অর্থাৎ চলতি বছরেই ছিল বাংলায় বিধানসভার নির্বাচন। সেদিন মন্ডপে আলো করে বসা মুকুল রায়, বাবুল সুপ্রিয়রা এখন দলবদল করে ঘাসফুল শিবিরে। বাংলার বিজেপির দলীয় পর্যবেক্ষক কৈলাশ বিজয়বর্গীয় তো বিধানসভা নির্বাচনের পর এরাজ্য়ে আসাই ভুলে গিয়েছেন। এবার কিন্তু নমঃ নমঃ করেই দুর্গাপুজোর নিয়ম রক্ষা করতে চলেছে রাজ্য বিজেপি।
এবারে তো দুর্গাপুজো হওয়া নিয়েই বিতর্ক দেখা দিয়েছিল। তবে শেষমেশ কতৃপক্ষের অনুমতি পাওয়া গিয়েছে। বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে পুজোর প্যান্ডেল বাঁধার কাজ। তবে গতবারের মতো এবার আর কোনও জাঁকজমক থাকছে না। থাকছে না কোনও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। গতবছর সৌরভজায়া ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়ের নৃত্যে দুর্গাপুজোর আয়োজন আলোকিত হয়েছিল। এছাড়া নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়েছিল ইজেডসিসির মঞ্চে। শীর্ষ নেতৃত্বের আনাগোনা ছিল নজরকাড়া। এবার তাতেও ভাঁটা পড়তে চলেছে।
আরও পড়ুন- ‘ভোট দেখে নয়-বিধি মেনেই সব হোক’, দলের দুর্গাপুজো নিয়ে বললেন দিলীপ
পুজো কমিটির সদস্য তথা বিজেপি নেতা উমাশঙ্কর ঘোষদস্তিদার বলেন, 'অনুমতি পাওয়া গিয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে প্যান্ডেল তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। পুজো সাধারণভাবে হবে। কোনও প্রোগ্রাম নেই। কালচারাল অনুষ্ঠান বন্ধ। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কেউ আসার নেই। গতবারের মতো আয়োজন নেই।' রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, 'পুজোর আয়োজন হচ্ছে। গোসাবা থেকে ফেরার পথে গিয়েছিলাম। ইজেডসিসিতে লোকজন ছিল।' অভিজ্ঞ মহলের মতে, শাস্ত্রমতে পুজো টানা তিনবার করতে হয়। পুজো এবার আয়োজন না করলে প্রশ্ন উঠতে পারে। সেদিকটাও হয় তো ভেবে দেখেছে বিজেপি নেতৃত্ব।
বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি নেতা অমিত শাহ ২০০ আসনের লক্ষ্যমাত্রা বেধে দিয়েছিলেন বঙ্গ বিজেপিকে। তৃণমূল থেকে দলে দলে বিজেপিতে যোগদানের হিরিক শুরু হয়েছিল। বিজেপি নেতৃত্বকে বাঙালি বিরোধী বলেই মনে করে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। রাজনৈতিক মহলের মতে, নানা কারণেই দুর্গাপুজোর আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছিল গেরুয়া শিবির। এরাজ্য়ে একাধিক পুজোমন্ডপের উদ্বোধনের কথা ভেবেছিলেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কার্যক্ষেত্রে তা সম্ভব হয়নি। নিজেরাই ঘটা করে পুজোর উদ্যোগ নিয়েছিল ইজেডসিসিতে। রাজ্য তথা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে গমগম করছিল ইজেডসিসি। বিধানসভা নির্বাচনের ফলের পর বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কোনও আনোগোনাই সেভাবে নেই। এবার পুজোর উদ্যোগ নিতেই যেন গা-ছাড়া ভাব। রাজনৈতিক মহলের মতে, পরিস্থিতির আমূল বদল ঘটেছে বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের বিপুল জয়ের পর। তার প্রভাব পড়েছে পুজোতেও।
আরও পড়ুন- ‘চোর চোর চোরটা অভিষেকের পিসিটা’ এবার পাল্টা স্লোগান শুভেন্দুর
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন