'নিজে মিছিল ডেকে নিজেই লোক মারে বিজেপি'। রানিগঞ্জের সভায় নাম না করলেও ফুলবাড়িতে বিজেপি কর্মী উলেন রায় মৃত্যু প্রসঙ্গে অভিযোগ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে তাঁর বার্তা, 'ওরা (বিজেপি) ঝড়ের বেগে গুজব ছড়ায়। আমরা ঝড়ের বেগে উন্নয়ন করব।'
মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, 'পুলিশ ছররা ব্যবহার করে না। তুমি (বিজেপি) প্রচারের জন্য ছররা দিয়ে লোক মেরে ফেললে। বিজেপি নিজেই মিছিল ডেকে নিজেই লোক মারে। ওরা কুৎসা করে ঝড়ের বেগে। মিছিল করে লোর মারে।' এরপরই তাঁর দাবি, 'ওরা (বিজেপি) ঝড়ের বেগে গুজব ছড়ায়। আমরা ঝড়ের বেগে উন্নয়ন করব।' বিজেপির দাবি যাচাই করার জন্যও সাংবাদিকদের অনুরোধ করেছেন মমতা।
বিজেপির উত্তরকন্যা অভিযান ঘিরে সোমবার রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে শিলিগুড়ি। দফায় দফায় আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে দফায় দফায় পুলিশ লাঠিচার্জ ও জলকামানের ব্যবহার করে। পুলিশ-আন্দলনকারী ধস্তাধস্তির মাঝে পড়ে মৃত্যু হয় বিজেপি কর্মী উলেন রায়ের। বিজেপির অভিযোগ, পুলিশি অত্যাচারেই দলীয় কর্মী মারা গিয়েছেন। তবে সোমবারই টুইটে পুলিশ জানিয়েছিল, গেরুয়া বাহিনীর কর্মসূচি হিংসাত্মক ছিল। তা দমনের চেষ্টা হলেও কোথাউ অত্যাচার করা হয়নি।
মঙ্গলবার উলেন রায়ের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট তুলে ধরে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের দাবি, 'শটগানের গুলি লেগেই মৃত্যু হয়েছে উলেন রায়ের।' পুলিশের টুইটবার্তায় বিজেপি কর্মীর মৃত্যুর জন্য দলকেই দায়ী করা হয়েছে।সেথানে উল্লেখ, 'পুলিশ শটগান ব্যবহার করে না। এটা স্পষ্ট যে শিলিগুড়িতে গতকালের প্রতিবাদের সময় সশস্ত্র ব্যক্তিদের আনা হয়েছিল এবং তারা আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি চালিয়েছিল। বিক্ষোভ কর্মসূচিতে মৃতের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা কোনো ব্যক্তির শটগান থেকে চালানো গুলির প্যালেট আঘাত পেয়েছিল নিহত ব্যক্তি ।এটি নজিরবিহীন। প্রতিবাদ কর্মসূচিতে সশস্ত্র ব্যক্তিদের আনা এবং তাদের গুলি চালাতে উস্কে দেওয়া শোনা যায় না। আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে হিংসা ছাড়ানোর দুরভিসন্ধি ছিল। পশ্চিমবঙ্গের সিআইডি কে তদন্ত করতে বলা হয়েছে। সত্য প্রকাশিত হবে এবং যারা জঘন্য অপরাধের পরিকল্পনা এবং সেটা কার্যকর করেছিল তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
পুলিশের এই দাবি ঘিরেই চাপানউতোর তুঙ্গে। বিজেপির রাজ্য সম্পাদক দিলীপ ঘোষ প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘পুলিশ গুলি চালায়নি তো কে গুলি চালাল? এখন সব ধামাচাপা দিতেই সিআইডি তদন্তের কথা বলা হচ্ছে। শুধু উলেন রায় নয়, দলের আরও ১০-১২ জন কর্মীর দেহে ক্ষতের দাহ রয়েছে। নিরপেক্ষ তদন্ত হলেই সব স্পষ্ট হয়ে যাবে।’রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুর দাবি, ‘লোক দেখানোর জন্য সিআইডি তদন্তের কথা বলা হচ্ছে। আসলে সবটাই পুলিশের ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা।’
কিন্তু, এদিন পুলিশের দাবিকেই মান্যতা দিলেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরের মন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুলিশের তরফে বিজেপির অস্ত্র নিয়ে মিছিলের অভিযোগ তোলা হয়েছে। মমতা মন্তব্য সেই অভিযোগকেই উস্কে দিয়ে গেরুয়া বাহিনীর উপর চাপ তৈরির কৌশল বলেই মনে করা হচ্ছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন