প্রতিবাদের বিপ্লব থমকাল আধ ঘণ্টার নিস্তেজ লালবাজার অভিযানে। রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের আক্রান্ত হওয়ার প্রতিবাদে দলের লালবাজার অভিযান একেবারে সুপার ফ্লপ। সোমবার মোতায়েন পুলিশকর্মীর চেয়েও বিজেপির আন্দোলনকারির সংখ্যা ছিল অনেক কম। মিছিলের বহর প্রমান করল, বিজেপি নেতাদের গর্জনই সার, অন্তত কলকাতা শহরের ক্ষেত্রে। বাস্তবের চিত্র পুরো আলাদা। তবুও বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিটে পুলিশের সঙ্গে যৎসামান্য ধস্তাধস্তি করে কিঞ্চিৎ মান বাঁচালেন বিজেপি কর্মীরা।
রবিবার হুগলির মশাটে সভা করে ফেরার পথেই আক্রান্ত হন জয় বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিযোগ, আক্রমণের আসল নিশানা ছিলেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বেরিয়ে যাওয়ার পর জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। তাঁকে বাঁশ দিয়ে আঘাতও করা হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনার প্রতিবাদ করতেই রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি নেয় বিজেপি। রাজ্যের বেশ কয়েক জায়গায় পথ অবরোধও করে।
বিজেপির মিছিলে ছিলেন হাতে গোনা কর্মী-সমর্থক। ছবি: শশী ঘোষ
সোমবার দুপুর ২টো নাগাদ লালবাজার অভিযানের ডাক দেয় বিজেপি। দুপুর ১২টা থেকে শুরু হয় ৬ মুরলিধর সেন লেনে বিজেপির প্রধান কার্যালয়ে সাজসাজ রব। কিন্তু দুপুর ২টোর পরেও আন্দোলনের লোকসংখ্যা বৃদ্ধির কোনও সম্ভাবনাই দেখা যায়নি। অগত্যা কিছুটা দেরিতেই মিছিল শুরু করে গেরুয়া বাহিনী। অবস্থা এমনই দাঁড়ায়, যে পুলিশ এবং আন্দোলনকারিদের পাশাপাশি দেখে বোঝা দায় হয়ে যায়, কারা লালবাজার অভিযানের ডাক দিয়েছে।
সেন্ট্রাল এভিনিউ, বৌবাজার মোড় হয়ে লালবাজারের দিকে ঢুকতেই পুলিশ বিবি গাঙ্গুলি রোডে ব্যারিকেড করে। ব্যারিকেডের ধারেকাছেও যাওয়ার চেষ্টা করেননি বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। কত তাড়াতাড়ি পাততাড়ি গোটাতে পারবেন, তাই যেন তখন ভাবছেন তাঁরা। কোনওরকমে হিন্দিতে নমো নমো করে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় নেতৃত্ব। তারপরই যেন আন্দোলনে রাশ টেনে হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন তাঁরা। যখন বিজেপি রাজ্য নেতাদের ওপর আক্রমণ হচ্ছে, তখনও প্রতিবাদ আন্দোলনে কোনও ঝাঁঝ নেই। রাজনৈতিক মহলের মতে, এদিনের প্রতিবাদ সংগঠিত করতে ব্যর্থ হয়েছে বিজেপি।
স্লোগানই সার বিজেপি কর্মীদের। তখন আন্দোলনকারিদের চেয়ে পুলিশের সংখ্যাই ছিল বেশি। ছবি: শশী ঘোষ
এদিন লালবাজার অভিযানে বিজেপির কোনও রাজ্য নেতাকে চোখে পড়েনি। রাজ্য স্তরের দুই নেতার ওপর আক্রমণ হলেও এই লালবাজার অভিযানকে কোনও গুরুত্ব দেয়নি দল। ছিলেন শুধু উত্তর কলকাতার জেলা সভাপতি দীনেশ পান্ডে। নামকাওয়াস্তে প্রতিবাদ মিছিল হয়েছে বলে মনে করছে দলের একাংশ। যদিও এদিন বিজেপি রাজ্য দপ্তরে দলের আসন্ন রথযাত্রা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক ছিল।