মুখ্যমন্ত্রীকে বাংলা আকাদেমির পুরস্কার দেওয়ার যৌক্তিকতা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বাংলা আকাদেমি পুরস্কৃত করায় অনেকে কটাক্ষও ছুড়ে দিয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিষয়টি নিয়ে মিমের বন্যা। মুখ্যমন্ত্রীর এই নয়া পুরস্কার-প্রাপ্তি নিয়ে এবার বেনজির কটাক্ষ বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষের। শুক্রবার পূর্ব মেদিনীপুরের এগরায় দলের কর্মসূচি 'চায়ে পে চর্চা'য় যোগ দিয়ে বিজেপি নেতার টিপ্পনি, ''এই ধরনের ছোট পুরস্কার দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেনও অপমান করা হলো, তাঁর তো নোবেল পাওয়ার মতো যোগ্যতা, ক্ষমতা, প্রতিভা আছে।''
এই বছরেই প্রথম বাংলা আকাদেমির নামাঙ্কিত ‘রিট্রিভার্সিপ’ পুরস্কার দেওয়া চালু হয়। সমাজের অন্যান্য ক্ষেত্রে কাজের পাশাপাশি যাঁরা নিরলস সাহিত্য সাধনা করে চলেছেন তাঁদের পুরস্কৃত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলা আকাদেমি। তাঁরা বাংলার বেশ কিছু প্রখ্যাত সাহিত্যিকের মতামত নিয়ে ‘কবিতা বিতান’ কাব্যগ্রন্থের জন্য প্রথম বছর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ’রিট্রিভার্সিপ’ পুরস্কার দেওয়ায় জন্য মনোনীত করেন। গত সোমবার ২৫ শে বৈশাখে রাজ্য সরকার আয়োজিত ‘কবি প্রণাম’ অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীকে বাংলা আকাদেমি ‘রিট্রিভার্সিপ’ পুরস্কার দেওয়া হয়।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই পুরস্কার প্রাপ্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে ‘অন্নদাশঙ্কর’ সম্মান ফিরিয়েছেন পূর্ব বর্ধমানের খাগড়াগড়ের বাসিন্দা লেখিকা ও গবেষক রত্না রশিদ বন্দোপাধ্যায়। পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমিকে চিঠি পাঠিয়ে লেখিকা তাঁর এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েও দিয়েছেন। এরই পাশাপাশি ২০১৯ সালে পাওয়া ‘অন্নদাশঙ্কর’ সম্মানও তিনি ফিরিয়ে দিয়েছেন। লেখিকার এই সিদ্ধান্তে কবি ও সাহিত্যিক মহলে শোরগোল ফেলে দিয়েছে।
বিরোধী দলের নেতারাও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলা আকাদেমির পুরস্কার-প্রাপ্তির সমালোচনা করেছেন। সোশ্যাল মিডিয়া মুখ্যমন্ত্রীর পুরস্কার-প্রাপ্তি নিয়ে মিমের বন্যা। এপরশ্হেগ এদিন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ বলেন, ''শুধু সোশ্যাল মিডিয়ায় বিষয়টি আলোচনা হচ্ছে না, আকাদেমির লোকজনও প্রতিবাদ করেছেন এবং পদত্যাগ করেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেদের লোকদের খুশি করতে বিভিন্ন পুরস্কার চালু করেছেন। যে পুরস্কারগুলি আগে ছিল তার যা আভিজাত্য ছিল সেটাও নষ্ট করেছেন। নিজের নামে নিজের পার্টির লোকেদের নামে সব পুরস্কার করে নিয়েছেন।''
এর পরই মুক্যমন্ত্রীকে বেনজির কটাক্ষ করে দিলীপ ঘোষের মন্তব্য, ''এই ধরনের ছোট পুরস্কার দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেন অপমান করা হল। তাঁর তো নোবেল পাওয়ার মতো যোগ্যতা, ক্ষমতা প্রতিভা আছে। বাংলায় এর আগে এই ধরনের প্রতিভা জন্মায়নি। সব প্রতিভা আছে ওঁর। নতুন পুরস্কার চালু করছেন, নিজেও পাচ্ছেন।''