মাস কয়েক আগে বলেছিলেন ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে দাঁড়াতেই পারবে না তৃণমূল কংগ্রেস। আসন সংখ্যার বিচারে দুই অংকের সংখ্যাও পার হবে না ঘাসফুল শিবিরের। রাজ্যে সরকার গড়বে বিজেপি। বিধানসভা নির্বাচন এগিয়ে আসতেই এখন বাংলা রাজনীতির 'চানক্য' মুকুল রায়ের গলায় ভিন্ন সুর। তিনি বলছেন, "২০২১ বিধানসভার লড়াই কঠিন। তবে পাল্লা ভারি বিজেপির।"
সম্প্রতি, বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির অন্যতম এই সদস্যকে নিয়ে ফের গুঞ্জন ছড়িয়েছে রাজনৈতিক মহলে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় এবার নাকি স্থান পাচ্ছেন মুকুল রায়। বছরভর এই জল্পনা চলতেই থাকে। কিন্তু মুকুল রায় বলছেন, "এমন কোনও খবর তাঁর জানা নেই। প্রায় চার মাস দিল্লি যাওয়া হয়নি।" আক্রমণাত্মক মুকুল রায় এখন অনেকটাই রক্ষনাত্মক। তবে প্রাক্তন রেলমন্ত্রীর চোখমুখ অনেকটাই চনমনে।
লোকসভা নির্বাচনের পর বহুবার মুকুল রায় সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, ২০২১-এ গোহারা হারবে তৃণমূল কংগ্রেস। সোমবার সল্টলেকে নিজের অফিসে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে মুকুলবাবু বলেন, "তখন একরকম পরিস্থিতি ছিল, বলেছিলাম। এখনকার পরিস্থিতি যা তাতে আমার ধারনা ২০২১-এ বাংলার বিধানসভা নির্বাচনে কঠিন লড়াই। তবে অবশ্যই অ্যাডভান্টেজ বিজেপি।" একই সঙ্গে তিনি জানিয়ে দিলেন, "ওই নির্বাচনে সিপিএম ও কংগ্রেসের কোনও প্রাসঙ্গিকতা থাকবে না।" এমনকী করোনা ও আমফান নিয়ে বিজেপির অন্য রাজ্য নেতারা যখন তৃণমূলকে দিন-রাত তুলোধনা করছেন। তখনও মুকুলের গলায় একটু ভিন্ন সুর। তিনি বলেন, "করোনা হল পেনডেমিক। সেক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় বা রাজ্য সরকারের কিছু করার নেই।"
করোনা-লকডাউনে বঙ্গ বিজেপির অনেকেই প্রতিনিয়ত রাজনীতির ময়দানে ছিলেন। গুটি কয়েক দলীয় কর্মসূচি ছাড়া তাঁকে খুব একটা দেখা যায়নি। তবে তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রকে চিঠি দিয়ে রাজ্যের সমস্যার কথা জানিয়েছেন। প্রাক্তন রেলমন্ত্রী বলেন, "আমি ৬-৭টা চিঠি দিয়েছি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সহ অন্য দফতরেও। তাতে করোনা পরিস্থিতি, আমফানে বাংলার দশা নিয়ে চিঠি লিখেছি। আবেদন করেছি রাজ্যের জন্য।"
বঙ্গ রাজনীতিতে দলবদলের পালা চলতেই থাকে। এতেও বাদ পড়ার কথা নয় মুকুল রায়ের। রাজনৈতিক মহল মনে করে লোকসভায় এরাজ্যে ৪২-এ ১৮টি আসন পাওয়ার ক্ষেত্রে মুকুল রায়ের বিশেষ অবদান আছে। রাজনীতির কারবারিরা মনে করেন, ২০২১-এ মুকুল রায়ের একটা বড় ভূমিকা থাকবে। রাজ্য -রাজনীতিতে একপক্ষ জল্পনা ছড়িয়েছে মুকুল রায় কী তৃণমূলে ফিরছেন? মুকুলের স্পষ্ট জবাব, "যদি তৃণমূলে আমাকে নিয়ে আলোচনা হয়, তাহলে তো ভাল। তার মানে বিজেপিতে থেকেও আমার গ্রহণযোগ্যতা আছে তৃণমূলে।"
দীর্ঘ দিন বাদে বিজেপির রাজ্য কমিটি ঘোষণা হয়েছে। মুকুলের হাত ধরে যাঁরা বিজেপিতে এসেছিলেন তাঁদের অনেককে গুরুত্ব দিয়ে নতুন কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে। তাহলে কি ঘুরিয়ে মুকুল রায়কে সন্তুষ্ট করল বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব? নাকি নিজে তেমন পদ না পাওয়ায় চাপ বাড়ল মুকুল রায়ের? এই প্রসঙ্গে মুকুলের জবাব, "কমিটি ব্যালান্সড।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন