মুকুল রায় বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই তৃণমূল নেতা-কর্মীদের একাংশ তাঁর হাত ধরেই গেরুয়া শিবিরে ভিড়েছেন। তাঁদের কেউ কেউ প্রাক্তন রেলমন্ত্রীর নেতৃত্বে তৃণমূল থেকে এসে লোকসভার টিকিট পেয়েছেন, সাংসদও হয়েছেন। তবে স্বয়ং মুকুল রায়ের কপালে জাতীয় কর্ম সমিতির সদস্য পদ ছাড়া আর কিছুই জোটেনি। এরমধ্যে আবার রাজ্যে আসন্ন পুরভোটে পদ্ম শিবিরকে বৈতরণী পারাপারের 'কঠিন দায়িত্ব' জুড়েছে। সূত্রের খবর, এমতাবস্থায় মুকুলপন্থী প্রাক্তন তৃণমূলীরা অনেকেই ফের পুরনো দলের সঙ্গে যোগাযোগ ঝালিয়ে নিতে শুরু করেছেন। বিজেপিতে থাকলেও তাঁরা অনেকেই নিষ্ক্রিয় হয়ে রয়েছেন।
নাম না প্রকাশ না করার শর্তে রাজ্য কমিটির এক মুকুলপন্থী সদস্যের মন্তব্য, "ইদানীং দলের সভাতেও যাচ্ছি না। দল সেভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে না। তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। তবে সেখানেও সম্মানজনক পদ না পেলে ফিরব না। তার থেকে নিষ্ক্রিয় থাকাই শ্রেয়।" রাজনৈতিক মহলের মতে, পুরসভা নির্বাচনের মুখে এমন ঘটনায় সাংগঠনিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে গেরুয়া শিবির।
আরও পড়ুন: বিজেপিতে মুকুল অনুগামীরা বিভ্রান্ত, ফের তৃণমূলে ফেরার চেষ্টা!
তৃণমূলের একদা সেকেন্ড-ইন-কমান্ড বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর দলের কর্ম সমিতির সদস্য ছাড়া কোনও 'বড় পদ' পাননি। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে রাজ্য জুড়ে ছুটে বেরিয়েছেন তিনি। রাজনীতির কারবারিরা মনে করেন, বিভিন্ন কেন্দ্রে বিরোধীদের 'ম্যানেজ' করার জন্য মুকুলের বিকল্প নেতা কেউ নেই। সেক্ষেত্রে নির্বাচনী রাজনীতিতে এমন নেতার গুরুত্ব রয়েছে যে কোনও দলেই। কিন্তু মুকুল রায়কে দেখে যাঁরা গেরুয়া শিবিরে এসেছিলেন, এখন তাঁরা অনেকেই প্রমাদ গুনছেন। তাঁরা অনেকটা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন।
রাজ্যসভার নির্বাচন আসন্ন। প্রার্থী হিসাবে মুকুল রায়ের নামও ঘোষণা হয়নি। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এর ফলে এখনই তাঁর সাংসদ হওয়ার আশাও প্রায় নেই। বিজেপির সাংগঠনিক চরিত্র অনুযায়ী বড় দায়িত্ব পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রবীণদের দূরে সরিয়ে রাখা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে যথারীতি প্রশ্ন চিহ্ন দেখা দিচ্ছে মুকুলের ভবিষ্যৎ নিয়ে। এই সব সম্ভবনার কথা ভেবেই মুকুল অনুগামীরা বিকল্প ভাবছেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এর পাশাপাশি পুর নির্বাচনে বিজেপির হয়ে নেমে ফের লড়াইয়ের মুখেও পড়তে চাইছেন না ওই নেতারা। পুরনো নেতাদের দল গুরুত্ব দেবে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ঘোষণায় তাঁরা অনেকেই অপেক্ষা করছেন।