ভোটের আগে কর্ণাটকে বিজেপির গোষ্ঠী রাজনীতি চরম আকার নিয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে কারও নাম ঘোষণা না-করেই ভোটে যেতে চলেছে বিজেপি। দলের অভ্যন্তরে কুর্সির দুই দাবিদার বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী বাসভরাজ বোম্মাই। আর, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পা। তার মধ্যে ইয়েদুরাপ্পা অনেক প্রবীণ। কেন্দ্রীয় নেতা বানিয়ে তাঁকে দিল্লি পর্যন্ত টেনে এনে কার্যত কর্ণাটকের ঘরোয়া রাজনীতি থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করেছিলেন শাহ-নাড্ডারা। কিন্তু, বিধানসভা নির্বাচন আসতেই সেসব কৌশল ভোকাট্টা। ইয়েদুরাপ্পার মুখ ফের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে ভাসাতে শুরু করেছেন তাঁর অনুগামীরা।
মুশকিলটা হল ইয়েদুরাপ্পাকে উপেক্ষা করা বিজেপির সর্বভারতীয় নেতৃত্বের কাছে বেশ কঠিন। কারণ, খনিসমৃদ্ধ কর্ণাটকে ইজারাদারদের একটা বড় অংশের সঙ্গে এই ইয়েদুরাপ্পার দীর্ঘ ঘনিষ্ঠতা। তার ওপর প্রভাবশালী লিঙ্গায়েতদের নেতা বলে তিনি পরিচিত। তেমন পরিচিতি বোম্মাই এখনও তৈরি করে উঠতে পারেননি। এমনটাই দাবি করছেন ইয়েদুরাপ্পার সমর্থকরা। পালটা বোম্মাই সমর্থকদের দাবি, বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীর আমলে কর্ণাটকে বহু প্রকল্পের নির্মাণ হয়েছে। শিবমোগা বিমানবন্দর, বেঙ্গালুরু-মাইসুরু এক্সপ্রেসওয়ে-সহ বেশ কয়েকটি বড় পরিকাঠামো তৈরি হয়েছে।
এই পরিস্থিতি দেখে যাবতীয় ক্ষোভ-বিক্ষোভ সামাল দিয়ে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব ঠিক করেছে, নির্বাচনে মূল প্রচারে থাকবেন মোদী। সঙ্গে বোম্মাইয়ের পাশাপাশি প্রচারের দায়িত্বে থাকবেন ইয়েদুরাপ্পাও। প্রচার চালাতে দক্ষিণের রাজ্য সফর করবেন বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডাও। কর্ণাটক বিজেপির সভাপতি নলিন কাতিলও থাকবেন প্রচারের দায়িত্বে। আর, এসব নিয়েই ১০মে নির্বাচনের মুখে দাঁড়াবে কর্ণাটক।
আরও পড়ুন- জয়পুর বিস্ফোরণ মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামি বেকসুর খালাস, তদন্তের মুখে তদন্তকারী
বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব অবশ্য চাইছেন বোম্মাইকে না-সরাতে। বুধবার নির্বাচনের দিন ঘোষণার পরে, বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে কথা বলার সময় জানিয়েছেন যে দলের উন্নয়নমূলক এজেন্ডায় ফোকাস করা হবে। তিনি বলেন, 'বিজেপির উন্নয়নমুখী রাজনীতি কংগ্রেসের নেতিবাচক এজেন্ডাকে পরাজিত করবে। বিজেপি সরকার হাইওয়ে, ইন্টারনেট, রেলওয়ে এবং বিমানবন্দর-সহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের ওপর গত পাঁচ বছরে নজর দিয়েছে। আমাদের প্রতি জনগণের সমর্থন আছে।' বিজেপি সূত্রে খবর, দল নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে বোম্মাইকেই ফের মুখ্যমন্ত্রী করা হতে পারে।