দক্ষিণ দিনাজপুরে দিলীপ ঘোষের মিছিল এবং সভা ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠল বুনিয়াদপুর এবং গঙ্গারামপুর। অভিযোগ, পুলিশের আপত্তি অগ্রাহ্য করে বুনিয়াদপুর এবং গঙ্গারামপুরে মিছিল করেন দিলীপ ঘোষ। এরপরই এই দুই এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে অশান্তির আগুন। বুনিয়াদপুরে দিলীপ ঘোষ পৌঁছাতেই পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠতে শুরু করে বলে খবর। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে মিছিল এগিয়ে নিয়ে যান রাজ্য বিজেপির সভাপতি। মিছিল করতে বাধা দেওয়ায় পুলিশের সঙ্গে তর্কাতর্কিতে জড়ান দিলীপ ঘোষ। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়, দুটি এলাকাতেই ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে,তাই কোনও জমায়েত করা যাবে না। কিন্তু প্রশাসনের এই বক্তব্যকে কার্যত বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে মিছিল শুরু করেন তিনি। এরপরেই পুলিশের সঙ্গে ধ্বস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়ে বিজেপি সমর্থকেরা। মিছিল ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। মিছিল আটকাতে প্রচুর পুলিশ মোতায়েনও করা হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, দিলীপ ঘোষ প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই এই মিছিল করেন।
আরও পড়ুন- জগন্নাথ ঘাটে রাসায়নিক গুদামে ভয়াবহ আগুন
অন্যদিকে, একই দৃশ্য দেখা যায় গঙ্গারামপুরেও। বিজেপির 'অভিনন্দন যাত্রা'কে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়ায় বিজেপি কর্মীসমর্থকরা। গঙ্গারামপুরেও পুলিশকে লক্ষ্য করে চলে ইটবৃষ্টি, ছোঁড়া হয় বাঁশ, পাথরও। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। পুলিশ-সমর্থকরদের সংঘর্ষে আহত এক হন পুলিশ কর্মী এবং এক সিভিক ভলান্টিয়ার। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, বিজেপির কর্মী সমর্থকেরা পুলিশকে লক্ষ্য করেই আক্রমণ করে। এই ঘটনায় মোট দশ জন সিভিক ভলান্টিয়ার এবং একজন পুলিশ সুপার আহত হন। এই ঘটনায় একজন মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ারের পা ভেঙ্গে যায়, মাথা ফাটে পুলিশ সুপারের। আহতদের তৎক্ষণাৎ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে রাস্তায় নামে র্যাফ। সমগ্র ঘটনায় ১৫ জন বিজেপি কর্মী সমর্থকদের আটক করে পুলিশ।
এদিনের ঘটনার জন্য ক্ষুদ্ধ দিলীপ ঘোষ সরাসরি পুলিশকে দায়ী করে বলেন, "পুলিশ প্রথম থেকেই আমাদের আটকানোর চেষ্টা করে, প্রথমে বুনিয়াদপুরে আমরা শোভাযাত্রা করে সভা করি, সেখানে পুলিশ রাস্তা বন্ধ করে দেয়। এরপর গঙ্গারামপুরে আমাদের অভিনন্দন যাত্রাকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে বাদানুবাদ হয়। আমাদের কর্মীরাও আহত হন এই ঘটনায়। আসলে এই জেলার এসপি আসার পর থেকেই অশান্ত হয় গোটা এলাকা। এসপি আর মুখ্যমন্ত্রীর পাগলামির জন্য এই ঘটনা ঘটেছে"। দিলীপ ঘোষের এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে দক্ষিণ দিনাজপুরের তৃণমূলের জেলা সভাপতি অর্পিতা ঘোষ বলেন, " দিলীপ ঘোষ এবং বিজেপি বিজয়মিছিলের নামে অশান্ত করছেন গোটা এলাকা। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই বিজেপি নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে বাংলায়"। পার্থ চট্টোপাধ্যায় এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বলেন,"রাজ্যের মানুষের রক্ত ঝরিয়ে, প্রশাসনকে তাঁর নিজের কাজ না করতে দিয়ে যে বীরত্ব দেখাছেন তা গণতান্ত্রিক নয়। দিলীপবাবুর আচরণের মধ্যে 'অসামাজিক' লোকদের চরিত্র ফুটে উঠছে"।