এ রাজ্যে সাত দফায় লোকসভার নির্বাচন হয়েছিল। সেই নির্বাচনে ৪২টি আসেনর মধ্যে বিজেপি দখল করেছে ১৮টি আসন। এবার বিজেপি নেতৃত্বর হুঁশিয়ারি, দলবদলের দপ্তম দফায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল সরকার। সোমবার দলবদলের মাধ্যমে কার্যত নজিরবিহীনভাবে একটা জেলাপরিষদের ক্ষমতা দখল করার পথে এগোচ্ছে বিজেপি। গ্রাম পঞ্চায়েত, পৌরসভা বা বিধানসভা স্তরে এই বদল চলছিল ২৩মে-র পর থেকেই। কিন্তু এদিন দিল্লিতে যেভাবে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের ১৮ জন সদস্যের মধ্যে ১০ জন বিজেপির কাঁধে তুলে নিলেন তাতে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বের কপালের ভাঁজ চওড়া হতে বাধ্য।
এদিন দলবদলের সময় বিজেপি নেতা মুকুল রায় বলেন, “আজ বাংলার রাজনীতিতে ভূমিকম্প হয়েছে...বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাবে মমতার সরকার”। এমনিতে, মুকুল রায় ও দিলীপ ঘোষের 'মধুর' সম্পর্ক বিজেপির অন্দর্মহলে অন্যতম চর্চার বিষয় । কিন্তু সেই রাজ্য় সভাপতিকে পাশে বসিয়েই মুকুল এদিন দিল্লিতে বলেন, “দিলীপদার সঙ্গে একদিন বিধানসভায় যাব”। মুকুলের এই মন্তব্যকেও রীতিমতো তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
আরও পড়ুন- মোদী একজন সেলসম্যান, সংসদে ফের সরব অধীর
এদিন কৈলাশ বিজয়বর্গীয় জানিয়ে দেন, এখন প্রথম দফার দলবদলের “এক্সটেনশন” চলছে। পদ্মশিবিরের বক্তব্য় অনুযায়ী, এখনও দল ভাঙানোর ৬ দফা বাকি রয়েছে। রাজনীতির কারবারিরা মনে করছেন, এভাবে একটু একটু করে দল ভাঙিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করতে চাইছেন মুকুল রায়। এদিন একটা জেলা পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের দলে টেনে সেই বার্তাই দিল গেরুয়া শিবির।
উল্লেখ্য, উত্তরবঙ্গে এবার লোকসভার একটি আসনও পায়নি তৃণমূল কংগ্রেস। তাই বিজেপির এখন লক্ষ্য, উত্তরবঙ্গে তৃণমূলের হাতে থাকা জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতগুলো নিজেদের দখল নেওয়া। সংগঠনিকভাবে উত্তরবঙ্গে তৃণমূলের দুর্বলতা দক্ষিণবঙ্গের থেকে তুলনামূলকভাবে অনেকটাই কম। সেই জায়গাতেই আঘাত হানতে চাইছে বিজেপি। ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, রাজ্য়-রাজনীতির হাওয়া নিজেদের অনুকূলে রয়েছে বলে মনে করছে বিজেপি। তাই ক্ষমতা প্রয়োগ করে সরকার না ফেলে যত দ্রুত রাজ্য় বিধানসভার নির্বাচনে যাওয়া যায়, সে প্রস্তুতিই নিচ্ছে পদ্মশিবিরের। আর দলবদল এ ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করতে চলেছে।