বিজেপির রথের চাকা আটকেই দিল রাজ্য সরকার। গেরুয়াবাহিনীর রথযাত্রা কর্মসূচি শনিবার নাকচ করে দিল তৃণমূল সরকার। এ রাজ্যে পদ্মবাহিনী রথের রশিতে টান দিলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্নিত হতে পারে। একইসঙ্গে সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়াতে পারে, এই আশঙ্কা থেকেই দিলীপ ঘোষদের ‘গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা’য় অনুমতি দিল না রাজ্য প্রশাসন।
বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে লেখা একটি চিঠিতে সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, যেসব এলাকায় এই কর্মসূচি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সেগুলো স্পর্শকাতর জায়গা। গোয়েন্দা রিপোর্ট বলছে, ওই এলাকায় এ ধরনের কর্মসূচি করলে উত্তেজনা ছড়াতে পারে। আরএসএস, বজরং দল, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মতো দল এই যাত্রায় যোগ দিয়ে উত্তেজনা ছড়াতে পারে। রথযাত্রা কর্মসূচি হলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্নিত হতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে।
আরও পড়ুন, একই পথে রথ, বদলাবে শুধু তারিখ; লালবাজারে বৈঠক শেষে দাবি দিলীপ ঘোষের
সরকারের এই সিদ্ধান্তে স্বভাবতই ক্ষুব্ধ রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। এ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘এটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’’ ‘মুখ্যমন্ত্রীর চাপেই’ তাঁদের কর্মসূচি করার অনুমতি প্রশাসন দিল না বলে দাবি রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের। সরকারের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে পরবর্তী পদক্ষেপ কী করা হবে তা আলোচনা করেই ঠিক করবে গেরুয়াবাহিনী।
উল্লেখ্য, গত কয়েকদিন ধরেই এ রাজ্যে বিজেপির রথযাত্রা কর্মসূচি নিয়ে টালবাহানা চলছিল। গত সপ্তাহের শুক্রবার কোচবিহারে রাজ্য বিজেপির প্রথম রথযাত্রা কর্মসূচি ছিল। প্রশাসনের অনুমতি না মেলায় হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ে শেষ পর্যন্ত তা বাতিল হয়ে যায়। এরপর সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় গেরুয়াবাহিনী। কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, আগামী ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এজন্য মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব ও ডিজিকে আগামী ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে বিজেপি প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত।
রথযাত্রা কর্মসূচি নিয়ে রাজ্য সরকারকে সিদ্ধান্ত জানানোর সময়সীমা পরে একদিন বাড়িয়ে ১৫ ডিসেম্বর করা হয়। আদালতের নির্দেশ মতো গত বৃহস্পতিবার লালবাজারে মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব ও রাজ্য পুলিশের ডিজির সঙ্গে বৈঠকে বসেন দিলীপ ঘোষরা।