সরাসরি অনেকেই রাজনৈতিক দলের মিটিং, মিছিলে যান না। তবে ভোট বাক্সে নিজের মতামত প্রকাশ করেন। এঁদের আরও কাছে টানতে এবার বিকল্প পরিকল্পনা নিয়েছে বঙ্গ বিজেপি। একদিকে তপসিলি জাতি - উপজাতি ও পিছিয়ে পড়াদের দলে টানার উদ্যোগ, অন্যদিকে সমাজের গণ্যমান্য বক্তিদের পদ্ম শিবিরে এককাট্টা করা। তাছাড়া বিভিন্ন লোকসংস্কৃতির মাধ্যমে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের প্রচারের পরিকল্পনা নিয়েছে বিজেপি। এই কর্মসূচি রূপায়ণ করার জন্য রাজ্যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে প্রাক্তন সাংসদ অনুপম হাজরাকে। ইতিমধ্যে এবিষয়ে দলের কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে একপ্রস্ত আলোচনাও করেছেন অনুপম। সমাজের নানা স্তরে ভোট ব্যাংক বৃদ্ধি করতেই পদ্ম শিবিরের এই মরিয়া উদ্যোগ।
জয় শ্রীরাম বলতেও অনেক বাঙালীর ভয় রয়েছে। এই বিষয়েও জ্ঞাত রয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। চিকিৎসক, আইনজীবী, শিক্ষক, অধ্যাপক, চাকুরিজীবীসহ সমাজের নানা স্তরের পেশার মানুষজনকে নিয়ে সামাজিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। হবে আলোচনা সভা। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে সভা হতে পারে। জানা গিয়েছে, সেখানে সরাসরি বিজেপির কোনও নাম বা ব্যানার-ফেস্টুন থাকবে না। তবে প্রধানমন্ত্রীর ছবি থাকতে পারে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশের জন্য কী কী কাজ করছেন তা তুলে ধরা হবে। গল্পের ছলে প্রধানমন্ত্রীর সাফল্য বর্ণনা করা হবে। সভায় উপস্থিতিদের কাছ থেকে উন্নয়নে মতামতও নেওয়া হবে। পদ্ম শিবির এভাবেই মন জয় করতে চাইছে। মোদ্দা কথা দলীয় সভা, মিছিল-মিটিং-এ না গেলেও ইভিএমে পদ্মফুলেই যেন আঙুলটা পড়ে। অর্থাৎ বিকল্প ভোট ব্যাংক বৃদ্ধি করতে চাইছে বিজেপি।
আরও পড়ুন- বাংলায় তৃণমূলকে ‘জোট বার্তা’ এআইএমআইএম-এর
গেরুয়া শিবির মনে করছে অনেক ক্ষেত্রে হাতে দলীয় পতাকা হাতে তুলে দিলে হিতে বিপরীত হতে পারে। এর ফলে মারধর জুটতে পারে। অযথা ঝামেলায় জড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে। এসব থেকে দূরে থাকলেও যাতে নির্বাচনে বিজেপিকে সমর্থন করে সেদিকে নজর থাকবে। তাঁদের কাছে জানতে চাওয়া হবে বাংলার এখনকার হল-হকিকত কী? আপনারা ভবিষ্যতে বাংলার জন্য কী চাইছেন। বিজেপি যে সোনার বাংলা গড়তে চাইছে তার জন্য মতামত নেওয়া হবে। এভাবে বিজেপিমুখী করাই লক্ষ্য।
কেন্দ্রীয় প্রকল্প প্রচারের জন্য বিভিন্ন স্থানীয় লোক সংস্কৃতির সাহায্য নেওয়া হবে। বাউল, ঝুমুর, ভাওয়াইয়া সহ নানা লোক সংস্কৃতির উপর ভর করে তৃণমূল স্তরের মানুষের কাছে পৌঁছাতে চায় গেরুয়া বাহিনী। বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক প্রাক্তন সাংসদ অনুপম হাজরা বলেন, "ইতিমধ্যে বাউল শিল্পীদের থিমও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সাফল্য থেকে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের বিষয়-বস্তু তুলে ধরা হবে লোক সংস্কৃতির মাধ্যমে। আমরা ধ্বংসাত্মক রাজনীতি থেকে গঠনমূলক রাজনীতির সূচনা করতে চাই।''
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন