Advertisment

ব্যক্তিগত কাদা ছোড়াছুড়ি দলীয় মঞ্চে কেন? শোভন-বৈশাখীকে বার্তা ‘অসন্তুষ্ট’ বঙ্গ বিজেপির

এই দু’জনে ক্রমাগত সুর চড়িয়ে চলেছেন রত্না চট্টোপাধ্যায় এবং তৃণমূল বিধায়ক দেবশ্রী রায়ের বিরুদ্ধে। ঘটনাচক্রে শোভন আর রত্নার দাম্পত্য কলহ নিয়ে গোটা রাজ্য অবগত। আর সম্প্রতি শোভনের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছেন দেবশ্রী রায়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

ব্যক্তিগত কাদা ছোড়াছুড়ির প্ল্যাটফর্ম হিসেবে দলীয় সমাবেশকে ব্যবহার করছে শোভন-বৈশাখী। এই অভিযোগ তুলে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে বঙ্গ বিজেপি। মুরলিধর সেন লেনের নেতাদের মন্তব্য, ‘পারিবারিক বা ব্যক্তিগত কেচ্ছার কথা প্রকাশ্য সভায় সংবাদ মাধ্যমে বলা উচিত নয়। ভুল বার্তা যাচ্ছে জনমানসে।‘ এই বার্তা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পাশাপাশি পাঠানো হয়েছে শোভন-বৈশাখীকেও। বিজেপির একটা অংশ বলছে, প্রায় ৩ বছর শীতঘুমে থাকার পর সম্প্রতি সক্রিয় হয়েছেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র।  বিজেপির কলকাতা জোনের পর্যবেক্ষক হিসেবে তাঁকে নিয়োগের পর থেকে শোভনের এই সক্রিয়তা। তারপর থেকে কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী জেলার একাধিক সভা-সমাবেশে দেখা গিয়েছে শোভন চট্টোপাধ্যায়কে। তাঁকে যোগ্য সঙ্গত দিয়েছেন শোভন-বান্ধবী বৈশাখীও।

Advertisment

বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ করেছে বিজেপি। তিনি সামলাচ্ছেন কলকাতা জোনের সহ-আহ্বায়কের পদ। দুজনে মিলিয়ে বিজেপির রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে তৃণমূল কংগ্রেস এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন। পাশাপাশি এই দু’জনে ক্রমাগত সুর চড়িয়ে চলেছেন রত্না চট্টোপাধ্যায় এবং তৃণমূল বিধায়ক দেবশ্রী রায়ের বিরুদ্ধে। ঘটনাচক্রে শোভন আর রত্নার দাম্পত্য কলহ নিয়ে গোটা রাজ্য অবগত। আর সম্প্রতি শোভনের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছেন দেবশ্রী রায়। সেই মামলায় আবার সাক্ষী হিসেবে নাম উঠে এসেছে শোভন-পত্নীর। কিন্তু এই আইনি লড়াইয়ের প্রেক্ষিতে শোভন-বৈশাখীর পাশেই ছিল দল।

কিন্তু দেবশ্রী রায় আলিপুর আদালত দাঁড়িয়ে শোভন ও বৈশাখী সম্পর্কে যে মন্তব্য করেন, তার জবাব দেওয়া নিয়ে তৈরি বিতর্ক। বিজেপি-র রোড-শো চলাকালীন দলের ট্যাবলোর সামনে দাঁড়িয়ে পাল্টা মন্তব্য করেন শোভন-বৈশাখী। একই সঙ্গে শোভন তাঁর শ্বশুরমশাই তথা মহেশতলার তৃণমূল বিধায়ক দুলাল দাসের বিরুদ্ধেও আক্রমণাত্মক মন্তব্য করেন। যার অনেকটাই ছিল ব্যক্তিগত ও পারিবারিক। স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কেও দলীয় মঞ্চ থেকেই আক্রমণ শানিয়েছিলেন শোভন। আর সেই আক্রমণের ঝাঁঝ ‘অসাংবিধানিক’ ছিল বলেই মনে করছেন বিজেপি-র রাজ্য নেতৃত্ব।

এদিকে, গত ৬ ফেব্রুয়ারি আলিপুর আদালতে মামলা করতে গিয়ে দেবশ্রী রায় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘শোভন চট্টোপাধ্যায় মতো মানুষেরা সামাজিক অস্বস্তি। পরিবার, সন্তানের কাছে, স্ত্রী-র কাছে যে আপন নয়, সে কত বড় নেতা! সে কি জনপ্রিয় নেতা হতে পারে! মানুষের সামনে দাঁড়াতে পারে?’

সেই দিনই দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলায় বিজেপি-র রোড শোয়ে যোগ দেন শোভন-বৈশাখী। দলের ট্যাবলোর সামনে দাঁড়িয়েই দু’জন একযোগে আক্রমণ করেন দেবশ্রীকে। দেবশ্রীর প্রশ্নের জবাবে শোভন বলেন, ‘‘উনি সন্তানের মা নন। আর সংসার? ওঁর যে সংসার ছিল, তার কী পরিণতি হল, সেটা যেন মানুষের কাছে খোলসা করুন। আমি তো নির্দিষ্ট অভিযোগ এনে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা করেছি। সেই মামলা চলছে...। মায়ের থেকে মাসির দরদ বেশি! কথায় বলে, সে কে? ডাইনি।’

শোভন তাঁর শ্বশুর তথা তৃণমূল বিধায়ক দুলাল দাস এবং স্ত্রী রত্না সম্পর্কেও নানা মন্তব্য করেছেন একাধিক জনসভায়। তাঁর অভিযোগ, ‘দুলাল দাসের অনেক দ্বিচারিতা রয়েছে। ওঁর অনেক গুদামঘর রয়েছে। সেই সব গুদামঘরের একাংশের জমির মালিকানা আমার। আমার প্রাপ্য টাকার হিসাব করা হলেও তিনি এখনও তা দেননি। উনি বলেন, মেয়ের ভরণপোষণ করবেন। তাই ওঁর টাকা দরকার। কিন্তু ওঁর মেয়ে সংসার করার মেয়ে নয়। সেই চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের জন্যই আমি ছেড়ে চলে গিয়েছি। তখন তো উনি বলেছিলেন, মেয়েকে বসিয়ে খাওয়াবেন। তা হলে আমার অর্থ কেন আটকে দিয়েছেন?’ সুর চড়িয়ে শোভন আরও বলেন, ‘ রত্নাদেবী দিনে একবার আমায় ফোন করতেন। আর একশোবার কাকে ফোন করতেন, তার খোঁজ নিক দুলাল দাস!’’

Ratna Chatterjee Sovon-Baisakhi Bengal BJP
Advertisment